আস্-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ্।
তোমাকে কিছু অপ্রিয় সত্য কথা বলি। হয়ত তোমার কাছে কথাগুলো কটু মনে হতে পারে। তাতে কি? আমি যদি তোমাকে এতো ভালোবাসতে পারি, তোমার জন্যে লিখতে পারি তাহলে কি তোমার বৃহত্তর কল্যাণের জন্যে তোমাকে কয়েকটা কটু কথা বলার অধিকার রাখি না বল?
আর একটা প্রবাদই তো আছে যে, “শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে।”
ক) একটু চিন্তা করে দেখতো তোমাকে অনার্স পাস করতে হলে ছোটবেলা থেকে অনার্স পর্যন্ত কমপক্ষে ১৩৫ টি বই পরতে হয় (প্রতি বিষয়ের জন্যে কমপক্ষে একটি করে বই ধরে ; কিন্তু অনেক সময় আমদেরকে একটা বিষয়ের জন্যে তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত বই পড়তে হয়)। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে এই কমপক্ষে ১৩৫ তার মধ্যেও তোমার জীবনের জন্যে সবচেয়ে অত্যাবশ্যকীয় একটা বই (আল কোরআন) থাকে না। তোমার এই পৃথিবীতে একটা চাকরীর জন্যে শত শত আজেবাজে বই পড়ার সময় হয় কিন্তু আল কোরআন পড়ার সময় হয় না। তার পরেও তুমি নিজেকে মুসলমান বলে পরিচয় দাও!! আল্লাহর কাছে মুক্তির আশা করো!! আমার মনে হয় আমাদের নিজেদের একটু লজ্জিত হওয়া উচিত।
খ) একবার চিন্তা করতো সাময়িক কিছু বিনোদনের জন্যে তুমি হাজার হাজার টাকা খরচ করে হুমায়ূন আহমেদের বই, জাফর ইকবালের বই, বিভিন্ন মুভি ডিস্ক এবং আরও কত কি কিনতে পারো কিন্তু মাত্র হাজার বারোশ টাকা খরচ করে ইসলাম বুঝার জন্যে একটা কোরআনের তাফসীর বা কয়েকটা ইসলামিক বই কিনতে পারো না। তা পারবে কেন? তুমি তো আধুনিক ছেলে বা মেয়ে!! তোমার কি কোরআনের তাফসীর আর ইসলামিক বই পড়ার সময় আছে ? তোমার সময় আছে একরাতে দুই তিনটা মুভি দেখে শেষ করার!!
তোমার সময় আছে টিএসসিতে বন্ধু বান্ধবীদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দেয়ার!! তোমার সময় আছে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে পার্কে বসে নিভৃতে আড্ডা দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট করার!! তোমার সময় আছে গার্লফ্রেন্ডের সাথে সারারাত জেগে ফোনালাপ করার !! তোমার কি ইসলাম নিয়ে, কোরআন-হাদিস নিয়ে আলোচনা করার সময় আছে? তা থাকবে কেন? তোমার সময়গুলো হচ্ছে একথা টাইগার, ডার্টি পিকচার আর বলিউডের কোন মুভিটা কত হিট হয়েছে তা নিয়ে বন্ধুদের সাথে আলোচনায় হারিয়ে যাওয়ার ।
কোন মুভি প্রথম দিনেই কত মিলিয়ন ডলার আয় করছে তা একেবারে তোমার নখদর্পণে। স্প্যানিশ লীগে, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে কে কয়টা গোল করছে সব তোমার মুখস্ত। আগামী বছর কে ব্যালন ডি জিতবে তাও বলে দিতে পারবে। পৃথিবীর সব বিষয়ের জ্ঞান তুমি রাখো। তুমি সবই বলে দিতে পারবে । বলতে পারবেনা শুধু পবিত্র কোরআনে কয়টা সূরা আছে, সিহাহ সিত্তাহ মানে কি। সত্যি তোমার জন্যে আমার করুনা হয়, তোমার জন্যে আমার লজ্জা হয়, তোমার জন্যে আমি বিব্রত!! !তারপরেও তোমাকে আমি অনেক অনেক ভালোবাসি, অনেক অনেক পছন্দ করি আর তাই তোমাকে এই কথাগুলো বললাম যেন তোমার চেতনা ফিরে আসে, যেন তোমার ভিতরে ঘুমিয়ে থাকা সত্যিকারের মানুষটা জেগে ওঠে।
গ) হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুতে, সস্তা প্রেমের সিনেমা দেখে, সস্তা প্রেমের উপন্যাস পড়ে তোমার চোখে জল এসে যায় কিন্তু নিজের শত শত ভুল আর পাপের জন্যে আল্লাহর সামনে দাড়িয়ে এক ফোঁটা চোখের জল ফেলার সময় তোমার হয় না। আর দাঁড়ালেও সে সময় চোখের সমস্ত জল যেন কর্পূরের মত বাষ্প হয়ে উড়ে যায়!! এভাবে আর কতদিন বল? এখনি কি তোমার চেতনা হবে না নাকি আল কোরআনের ওই আয়াতের মত হবে তোমার অবস্থাঃ
“দুনিয়ায় বেশী বেশী এবং একে অপরের থেকে বেশী পাওয়ার মোহ তোমাদেরকে গাফলতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এমনকি তোমরা (এই চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে) কবর পর্যন্ত পৌঁছে যাও।” - সুরা আত তাকাসুরঃ ১-২ ।
বল, আর কবে তোমার রবের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে? শেষ বয়সে ? কিন্তু তুমি যে আর এক মুহূর্ত পরে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে এই নিশ্চায়তা তোমাকে কে দিল?......
আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে ইসলাম, কোরআন-হাদিস বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন!
লিখেছেন : তানভীর আহমদ আরজেল
আমিন আল্লাহুমা আমিন
ReplyDeletePost a Comment