আপনি যখন ভালো হয়ে যাওয়ার চিন্তা শুরু করেন; ভাবেন, নাহ! আর এমন জীবন নয়; ভালো হয়ে যেতে হবে; নামাজ পড়া শুরু করতে হবে। তখন শয়তান এসে বলে, হ্যা শুরু তো করবা ঠিক আছে, কিন্তু কোন ওয়াক্ত থেকে? আজ তো তিন ওয়াক্ত চলেই গেছে; ভাঙ্গা দিন থেকে শুরু করে কী হবে, তার চেয়ে কাল থেকেই শুরু করো। শুরু করলে দিনের শুরু থেকেই করা উচিত, ফজর থেকে।
কিন্তু দির্ঘ দিনের অভ্যাস, সকাল বেলা দেরি করে ওঠা। পর দিন সকালেও তার ব্যত্যয় ঘটলো না। গেলো আবার মিস হয়ে। শয়তান এসে বুঝ দেয়, নাহ! আজও যখন মিস হয়েই গেলো, কালকের থেকেই শুরু কোরো। কাল যখন আবারো একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে, শয়তান তখন এসে বলে, আরে সপ্তাহ তো শেষ হয়েই গেলো। প্যান্ট-জামা-কাপড়ও তো সব অপবিত্র; একবারে সবকিছু ধুয়েটুয়ে জুম'আহ্র সালাত থেকে শুরু করলেই ভালো হবে। শুক্রবার একটা পবিত্র দিন।
কিন্তু শুক্রবার দিন সাপ্তাহিক বন্ধের অবসরে অলসতা যেন একেবারে জেঁকে বসে। নয়তো বিয়ে-শাদি-পার্টি-অনুষ্ঠান নানা ব্যস্ততায় কখন যে দিন গড়িয়ে রাত হয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না।
'আজ নগদ কাল বাকি'র মতো সবকিছু নগদ থাকলেও, নামাজটাই কেবল বাকি থেকে যায়। এভাবে আবার অনেক দিন কেটে যায়, আর আস্তে আস্তে প্রতিজ্ঞাটা হালকা হতে হতে এক সময় নাই হয়ে যায়। আপনি সেই উদাসিনতার কোলেই বিভোর হয়ে পড়ে থাকেন।
যদি আপনি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন ভালো হয়ে যাবেন, তো এক্ষুনই। এক্ষুনই মানে এই মুহুর্তেই। পরনের পোষাক অপবিত্র থাকলে এক্ষুনই বদলে ফেলুন তা যেভাবেই হোক না কেন। পরবর্তি প্রথম ওয়াক্ত থেকেই শুরু করুন। আর প্রত্যেক ওয়াক্তের শেষে পরবর্তি ওয়াক্ত মিস না করার শক্ত প্রতিজ্ঞা করুন; আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে দোয়া করুন যেন তিনি পরবর্তি ওয়াক্ত ঠিকমতো আদায়ের তাওফিক দান করেন।
জীবনচলার পথ গাড়ি চলার হাইওয়ে নয় যে একবার রং সাইড নিয়ে নিলে নেক্সট ইউ-টার্ণ না আসা পর্যন্ত আপনাকে রং পথেই চলতে হবে। জীবন চলার এই পথে মহান আল্লাহ আমাদেরকে দয়া করে যে কোনো সময় ইউ-টার্ণ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। তাই কোনো অজুহাতেই এখানে এক মুহুর্ত রং সাইডে চলার সুযোগ নেই। অতএব যা হয়ে গেছে গেছে। আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করুন। আর দেরি না করে শক্ত করে ব্রেক করুন এবং এক্ষুনই ইউ-টার্ণ নিয়ে নিন।
সৌজন্যে: সিয়ান পাবলিকেসন্স
জাযাকাল্লাহ খাইরান।
ReplyDeletePost a Comment