بسم الله الرحمن الرحيم
আবু রুকাইয়াহ তামিম ইবনু আওস আদ-দারী [রাযীঃ] হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ দ্বীন হচ্ছে উপদেশ। আমরা বললাম, কার জন্য? তিনি বলেনঃ আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসুলের জন্য, মুসলিমদের নেতা [ইমাম] এবং সমস্ত মুসলিমদের জন্য। [মুসলিমঃ হাঃ ৫৫]
আমাদের এই হাদিসটি অত্যন্ত গভীরভাবে উপলব্ধি করা দরকার কেননা ইসলামে নাসিহার গুরুত্ব অপরিসীম; এমনকি মুহাম্মাদ বিন আসলাম এই হাদিসকে বলেছেন দ্বীনের এক-চতুর্থাংশ।
কিন্তু, আমরা এটা কতটুকু মনে রাখি? এই ব্যাপারে একজন আলিমের সমালোচনার ধরন তুলে ধরব যাতে আমরা শিক্ষা গ্রহন করতে পারি, ইন শা আল্লাহু তাআলা।
একবার এক ব্যক্তি এসে একজন আলিম পর্যায়ের ব্যক্তির কাছে অন্য এক ব্যক্তির ব্যপারে অভিযোগ করলো, যে সে ব্যক্তি কম্যুনিটিতে ফিতনা সৃষ্টি করছে। তখন, ঐ আলিম ব্যক্তি গীবাত আর অপবাদের সতর্কতা দেখিয়ে অভিযোগকারী ব্যক্তিকে বলল, “ঐ ব্যক্তি তাঁর নিজের প্রতি অবিচার করছে।”
দেখুন তাঁর প্রজ্ঞা। একজন ব্যক্তি যখন ফিতনা তৈরি করে তখন সবার আগে সে কাকে হতাশ করে তাঁর নিজেকেই; হয়তো উপলব্ধি ব্যতিরেকে। এরপর তিনি ব্যপারটি নিয়ে কথা বললেন। সুবহান’আল্লাহ।
কিন্তু, এসব ব্যাপারে আমরা কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাই। আমরা খুব সহজেই বিচার করে বসি; ঐ ব্যক্তির জন্য কোন সমবেদনা প্রকাশ না করে। যা নাসিহাকে পুরোপুরি অর্থহীন করে দেয়। অথচ যে ব্যক্তিকে উপদেশ দেয়া হল, তাকে উপদেশ দেয়ার পাশাপাশি দুয়া ও করা উচিত।
আমাদের ভাবা উচিত, আমরা কি নাসিহা [সদুপদেশ] দিচ্ছি নাকি তিরষ্কার করছি?
নাসিহা আর তিরস্কারের মধ্যে পার্থক্য হল, নাসিহা হল সে উপদেশ; এই উপদেশ যাকে দেয়া হচ্ছে তার প্রতি থাকে মঙ্গলকামিতা, থাকে রাহমা আর সহমর্মিতা আর সেই উপদেশদাতা কামনা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন আর তার সৃষ্টির কল্যাণ। তাই সে তাকে চরম বিনয়ী আর এমনকি নিজেকে প্রস্তুত করে সমুহ ক্ষতি কিংবা অপবাদের গ্লানির জন্য ও। অপর দিকে যে তিরস্কার করে সে সন্মুখ সমরেই সবকিছু বলে আর অপদস্থ করে। সে যাকে তিরস্কার করছে সে ব্যক্তিকে খাট করতে চায় এবং উপদেশের নামে অভিশাপ দেয়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের হিদায়ার জন্য এত বেশী কাতর ছিলেন যে শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা ওয়াহির মাধ্যমে জানালেনঃ
“যদি তারা এই বিষয়বস্তুর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করে, তবে তাদের পশ্চাতে সম্ভবতঃ আপনি পরিতাপ করতে করতে নিজের প্রাণ নিপাত করবেন।“ [সুরা কাহফঃ০৬]
আল্লাহু আকবার।
এছাড়া ও সালাফদের মধ্যে হাসান আল বাসরির নাসিহার কথা সুবিদিত। একজন সালাফ বলেছিলেন, এখন আর হাসান আল বাসরির মত কেউ নাই যে শাসকদের নাসিহা দিবেন।
সুতরাং, আমাদের সব সময় নাসীহা দেয়ার ক্ষেত্রে সহমর্মিতা আর সমবেদনা বজায় থাকে তা খেয়াল রাখতে হবে । আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন। আমীন।
سبحانك اللهم و بحمدك أشهد أن لا إله إلا أنت أستغفرك و أتوب إليك
লিখেছেন: সায়্যিদ মাহমুদ গাজনাবি
আমিন
ReplyDeleteজাযাকাল্লাহ খাইরান
ReplyDeletePost a Comment