কুরাইশগণ যখন রাসূলুল্লাহ (সা:) এর সত্যবাদিতা, ক্ষমাশীলতা, উন্নত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি যাবতীয় কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে টিকে থাকা, সকল প্রকার প্রলোভনকে প্রত্যাখ্যান, প্রত্যেক বালা-মসিবতে ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা ও অনমনীয়তা প্রত্যক্ষ করলো তখন মুহাম্মদ (সা:) এর সত্যিকার নাবী হওয়ার সপক্ষে তাদের সন্দেহ আরো ঘনিভূত হলো । ফলে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো যে, তারা রাসূলুল্লাহ (সা:) সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করার নিমিত্তে ইহুদীদের সাথে মিলিত হলো ।
ইহুদী পণ্ডিতদের নিকট আসলে তারা পরামর্শ প্রদান করলো যে, তোমরা তাকে তিনটি প্রশ্ন করবে । প্রশ্নগুলোর ঠিকঠিক উত্তর দিতে পারলে বুঝা যাবে সে সত্যিকার নাবী । আর উত্তর দিতে না পারলে বুঝা যাবে, এটা তার নিজস্ব দাবি । যে তিনটি বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হলো তা হচ্ছে-
১. তোমরা তার কাছে প্রথম যুগের সেই যুবকদের সম্পর্কে জানতে চাবে যে, তাদের অবস্থা আপনি বর্ণনা করুন । কেননা তাদের বিষয়টা নিতান্তই আশ্চর্যজনক ও রহস্যেঘেরা ।
২. তোমরা তাকে সেই ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে, যে পৃথিবীর পূর্ব হতে পশ্চিম দিগন্ত পর্যন্ত ভ্রমণ করেছিল । তার খবর কী?
৩. তোমরা তাকে রুহ বিষয়ে জিজ্ঞেস করবে যে, রুহটা মূলত কী জিনিস?
অতঃপর নাযর বিন হারিস মক্কায় এসে বললো, "আমি তোমাদের নিকট এমন বিষয় নিয়ে এসেছি যা আমাদের এবং মুহাম্মদের মধ্যে ফয়সালা করে দিবে ।" এরপর সে ইহুদী পণ্ডিতগণ যা বলেছে তা তাদের জানিয়ে দিলো । কথামতো কুরাইশগণ রাসূলুল্লাহ (সা:) কে উক্ত তিনটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার কয়েকদিন পর সূরাহ কাহফ অবতীর্ণ হয়, এতে সেইসব যুবকদের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে- তারা হলো আসহাবে কাহফ, সারা পৃথিবী সফরকারী ব্যক্তি হলো- জুল কারনাইন । আর রুহ সম্পর্কে নাযিল হয় সূরা বনী ইসরাঈল । ফলে কুরাইশদের কাছে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, মুহাম্মদ (সা:) সত্য ও হকের উপর প্রতিষ্ঠিত । কিন্তু তা সত্ত্বেও সীমালংঘনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে বসে ।
সূত্র : আর-রাহীকুল মাখতুম, পৃষ্ঠা: ১৪৯
Post a Comment