মুত্তাকীদের জন্য মুক্তিপথের দিশারী

“এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। মুত্তাকীদের জন্য মুক্তিপথের দিশারী ।” -(সূরা আল বাকারাহ, আয়াত: ২)

এই কিতাব সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানওয়া তা’আলা আরো বলেনঃ
‘বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার। যারা মুমিন নয়, তাদের কানে আছে ছিপি, আর কোরআন তাদের জন্যে অন্ধত্ব।’ -(সূরা হা-মীম সেজদাহ: ৪৪)

‘আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত। গোনাহগারদের তো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায়।’ -(সূরা বনী ইসরাঈল: ৮২)

এ বিষয়ে আরো অনেক আয়াত রয়েছে এবং এগুলোর ভাবার্থ এই যে, যদিও কুরআনুল কারীম সকলের জন্য হিদায়াত স্বরূপ, তথাপি শুধু সৎ লোকেরাই এর দ্বারা উপকৃত হয় । যেমনটি আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ

‘হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশবানী এসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।’ -(সূরা ইউনুস: ৫৭)

হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) ও হযরত ইবনে মাস’ঊদ (রা) হতে বর্ণিত আছে যে, ‘হিদায়াত’ অর্থ হচ্ছে আলো ।

হযরত ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন যে, মুত্তাকীন তাঁরাই যারা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেন, শিরক হতে দূরে থাকেন এবং আল্লাহর নির্দেশাবলী মেনে চলেন ।

অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, মুত্তাকীন তাঁরাই যারা আল্লাহর শাস্তিকে ভয় করেন, হিদায়াতকে পরিত্যাগ করেন না এবং আল্লাহর রহমতের আশা রেখে তাঁর (আল্লাহর) তরফ হতে অবতীর্ণ কিতাবকে বিশ্বাস করে থাকেন ।

সুফইয়ান সাওরী (র:) ও হাসান বসরী (র:) বলেনঃ মুত্তাকীন তাঁরাই যারা হারাম থেকে বেঁচে থাকে এবং অবশ্য করণীয় কাজ নত মস্তকে পালন করে ।

হযরত কাতাদাহ (র:) বলেন যে, মুত্তাকীন সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ তা’আলাই বলেনঃ

‘যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে (আল্লাহর রাস্তায়) ব্যয় করে এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে।’ – (সূরা বাকারাহঃ ৩-৪)

তথ্যসূত্রঃ তাফসীর ইবনে কাছীর

Post a Comment

Previous Post Next Post