বিকৃতি


“Most bestiality is legal, declares Canada's Supreme Court.”
Independent পত্রিকার এই শিরোনামে চোখ আটকে গেলো। বুঝলাম, কানাডার সুপ্রীম কোর্ট “bestiality” কে বৈধতা দিয়েছে।

‘Bestiality’ বলতে আসলে কি বোঝায় তা জানা ছিল না। ডিকশনারিতে সার্চ দিতে হলো। খুব কাঠখোট্টা একটা অর্থ পেলাম- ‘পশ্বাচার’। ঠিকমত বোঝা গেলো না। উইকিতে সার্চ দিয়ে পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে গেলো। Bestiality বলতে আসলে মানুষের সাথে পশুর যৌনাচারকে বোঝানো হয়। পত্রিকার ভেতরে কী লেখা আছে সেটা পড়তে গিয়ে দেখলাম পেটের ভেতরে যা আছে তা দলা পাকিয়ে বের হয়ে আসতে চাইছে। লেখা আছে, এক লোক তার সৎ মেয়েকে জোর করে এক পশুর সাথে যৌনাচার করিয়েছে। তার শাস্তি হলো ১৬ বছরের জেল। সেটা কতোটুকু দোষের তা নিয়ে এনালাইসিস করে কোর্ট এই বৈধতার রায় দিয়েছে। এখন হয়তো লোকটা আবার আপিল করার সুযোগ পাবে। 

দুই বছর আগে আমি এই সময়ে পশ্চিমাদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব লরেন্স ক্রাউসের মুখে আরেকটা টার্ম শুনেছিলাম –‘Incest’। হামজা জর্জিসের সাথে বিতর্কের এক পর্যায়ে, হামজা জর্জিস, লরেন্স ক্রাউসকে প্রশ্ন করেনঃ
“Why is incest wrong?” ( অযাচার কেন ঠিক নয়? )
লরেন্স ক্রাউস জবাব দেন, “ It’s not clear(to) me that it’s wrong.” (আমার কাছে মনে হয় না যে এটা খারাপ কিছু।)

খটকা লাগলো। Incest আবার কি? ডিকশনারিতে সার্চ দিয়ে দেখি, এটার অর্থ লেখা- অযাচার। অযাচার মানে জানা ছিল না। উইকিপিডিয়াতে সার্চ দিয়ে জানা গেলো, রক্তের সম্পর্কের কারো সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাটাকে ইনসেস্ট বলা হয়। সেটা নিজের মায়ের সাথে হতে পারে, নিজের বোনের সাথে হতে পারে। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? মানুষ কিভাবে এর কথা চিন্তাও করতে পারে?

একটু পড়াশোনা করে জানলাম বর্তমান সময়ে অযাচার নাকি একদম কমন ঘটনা। অনেক প্রগতিশীল(!) রাষ্ট্র এটার বৈধতাও দিয়েছে। NDTV এর একটি রিপোর্টে প্রতিবেশী দেশ ভারতে অযাচারের একটি পরিসংখ্যান দেখানো হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুসারে, ভারতে ৫৩% শিশু শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়। ৭২% শিশুকে নীরবে এই লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়। ৬৪% অযাচারের শিকার শিশুদের বয়স ১০-১৮ বছর। ৩২% এর বয়স কেবল ২-১০। চিন্তা করা যায়? মাত্র দুই থেকে দশ! যারা এই অযাচারের শিকার হয় তাদের ৮৭% কে বারবার এই শারীরিক লাঞ্ছনার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। ভয়াবহ পরিসংখ্যান! এসব কিছুই জানা ছিল না। কল্পনাও করতে পারিনি। আসলেই আমরা মোল্লারা অনেক পিছিয়ে আছি।
.
তবে বাংলাদেশের বিজ্ঞানমনষ্ক ব্যক্তিরা কিন্তু একেবারেই পিছিয়ে নেই। বঙ্গদেশী নাস্তিকদের ধর্মগ্রন্থ “মুক্তমনা” ব্লগে আজ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগে আদনান নামে এক ব্লগার “নষ্ট রাত্রি” নামে একটি ছোটগল্প লিখেন। তাতে কল্পনার অযোগ্য বিকৃতিতে লেখক বাবাকে নিয়ে দুই মেয়ের ফ্যান্টাসির কথা লিখেছেন। পুরো গল্পটিতে আসলে কি ছিলো সেটি আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। আমার রুচিতে কুলোচ্ছে না।
.
মানুষকে মুক্তির দীক্ষা দেয়ার দাবিদার মানুষগুলো তাদের কুৎসিত চিন্তা দ্বারা এতোটাই পরিবেষ্টিত যে; আজ তারা নিজেদের মাকে মা ভাবতে পারছে না, বোনকে বোন ভাবতে পারছে না। জীবন মানেই তাদের কাছে "Sex & Drugs & Rock & Roll"। পুরো দুনিয়াটাই তাদের কাছে “Sex Object”।
.
আর Homosexuality! সমকামিতার বিপক্ষে কথা বলাই তো এখন এক প্রকার অবৈজ্ঞানিক কাজ হয়ে গিয়েছে। মানুষের অনুভূতি আজ এতোটাই ডিসেন্টিসাইজড হয়েছে যে এখন অনেকের কাছেই এটা একদম স্বাভাবিক ব্যাপার।। এমনকি ৫২% আমেরিকান মুসলিম মনে করে সমকামিতাকে সামাজিকভাবে মেনে নেয়া উচিৎ। এটা খারাপ কিছু না। খুবই মন খারাপ করা সংবাদ। তারা যদি এটাকে বৈধ মনে না করে নিজেরা সমকামী হয়ে যেতো, তাও এতোটা খারাপ লাগতো না। কারণ, তবুও তারা ফাসিক হয়েও এটলিস্ট মুসলিম থাকতো। কিন্তু আল্লাহ্‌ যা হারাম করেছেন সেটা হালাল মনে করলে কেউ তো আর মুসলিম থাকে না।
.
আজ থেকে দুইশো বছর আগে মানুষ বিয়ের আগে প্রেম করার কথা চিন্তাও করতো না। এখন তো বিয়ের আগে প্রেম না করা খ্যাঁত ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। তারপর আসলো সমকামিতা। পশ্চিমা সমাজব্যবস্থা তা মেনে নিলো। এখন অযাচার, পশ্বাচার। হয়তো একশো বছর পর এগুলোও এই অসভ্য পৃথিবীতে স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে যাবে।
.
পশ্চিমা সমাজ ব্যবস্থা ব্যক্তি স্বাধীনতা আর মুক্ত চিন্তার দোহাই দিয়ে সমকামিতা, অযাচার, পশ্বাচার- কে মেনে নিতে পারে। সহ্য করতে পারে । তাদের কেবল সহ্য হয় না ইসলাম। ইসলামের ‘barbaric(!) Shariah Law’। মানুষ যখন ফিতরাতকে ভুলে যায়, তাদের রবকে ভুলে যায়, তখন তাদের জন্য শয়তান নিযুক্ত হয়ে যায়। সে তাদের সামনে খারাপকে ভালো আর ভালোকে খারাপ হিসেবে উপস্থাপন করে।
.
দিনশেষে এই মানুষগুলোই যে আলোকে অন্ধকার ভাববে, সত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে তাতে কি খুব বেশী অবাক হবার মতো কিছু আছে?
.
“আর আমি সৃষ্টি করেছি দোযখের জন্য বহু জ্বিন ও মানুষ। তাদের অন্তর রয়েছে, (কিন্তু) তা দিয়ে তারা চিন্তা করে না, তাদের চোখ রয়েছে, (কিন্তু) তা দিয়ে তারা দেখে না, আর তাদের কান রয়েছে, (কিন্তু) তা দিয়ে তারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই হল গাফেল, শৈথিল্যপরায়ণ।” [সূরা আল আরাফঃ ১৭৯] 
.
Sources:
.
লেখকঃ শিহাব আহমেদ তুহিন

অফিসিয়াল ওয়েব সাইট ঃ Click Here  এবং Click Here

ফেসবুক পেজঃ Click Here

Post a Comment

أحدث أقدم