মহিলাদের মজলিস (১ম পর্ব)


আলহামদুলিল্লাহ্।
আল্লাহ্ সুবাহানাহুয়া তা'আলা আমাকে এরকম একটি মজলিসে কিছু বলার সুযোগ দিয়েছেন যা ছিলো একেবারে একটি নতুন পরিবেশ (শ্বশুর বাড়িতে) এবং এটাই ছিলো আমার প্রথম নসীহাতমূলক আলোচনা। কারণ মাদ্রাসার বাইরে অন্য কোথাও আমি এমন আলোচনা করি নাই। তাই আমি অনেক আগ্রহী হয়েই এখানে কিছু বিষয় শেয়ার করছি যা ঐ মজলিসে আলোচনা করা হয়েছিল। আশা করি কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন এবং দ্বীনের খেদমতে উৎসাহী হবেন, ইনশাআল্লাহ তা'আলা।

ঐ মজলিসের আলোচনায় যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের অধিকাংশই ছিলেন আমার মা ও দাদী সমতুল্য। তবে আমার সমবয়সী কিছু বোনও ছিলেন। তাদের সাথে যে নসীহাতমূলক কথাবার্তা হয়েছিলো তার একাংশ নিচে তুলে ধরা হলো-

আসসালামু আলাইকুম, আপনারাা সবাই কেমন আছেন?
মহান আল্লাহ্ তা'আলার নিকট শুকরিয়া যে তিনি আমাদেরকে এমন একটি বরকতপূর্ণ আলোচনায় আসার ও বসার সুযোগ দিয়েছেন। তাই আসুন সবাই অন্তর থেকে নিচু স্বরে বলি আলহামদুলিল্লাহ।
এরকম একটি মজলিসে বসতে পেরে সত্যিই আমি খুব আনন্দিত। কারণ আল্লাহ তা'আলাকে আমরা যখন কোন মজলিসেে স্মরণ করি, তখন তিনি এর চেয়ে ভালো মজলিসে আমাদের স্মরণ করেন, সুবাহান আল্লাহ। আমি চাই আমরা সবাই যেন এ থেকে উপকৃত হতে পারি। তাই আমরা মনোযোগের সাথে আলোচনা শুনবো এবং তা মানতে চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ তা'আলা।

১/ আমরা সত্যিই ভাগ্যবান যে আমরা মুসলিম হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছি। আল্লাহ্ চাইলে আমরা অমুসলিম পরিবারেও জন্মগ্রহণ করতে পারতাম। আর তখন মুসলিম হিসেবে মৃত্যুবরন করা ছিলো অনেক কঠিন। আমরা আরও ভাগ্যবান যে আমরা সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ (সা) এর উম্মাত হিসেবে দুনিয়াতে এসেছি। কারণ তার উম্মাতরাই শ্রেষ্ঠ উম্মাত, তিনিই কিয়ামত দিবসে কেবল তিনিই আল্লাহর নিকট শাফায়াত করার সুযোগ পাবেন। আর আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ উম্মাত হিসেবে গড়ে তুলতে এবং নবী কারীম (সা) এর শাফায়াত পেতে অবশ্যই তার আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে। আর তখনই আমরা সফলকাম হবো। আল্লাহ্ আমাদের কবুল করুন।

২/ প্রত্যেক মুসলিমের উপর দ্বীনি ইলম অর্জন করা ফরয। অন্তত যতটুকু তার দৈনন্দিন ইসলাম পালন করতে লাগে। আমাদেরকে এটা অবশ্যই মানতে হবে স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে সৃষ্টির আনুগত্য করা যাবেনা। আর এর জন্যও প্রয়েজন দ্বীনের শিক্ষা। না হয়তো আমরা বুঝতেই পারবোনা আমরা কখন আল্লাহর পরিবর্তে তার সৃষ্টিকে উপাস্য বানিয়ে ফেলছি। আল্লাহ্ আমাদেরকে দ্বীনি জ্ঞান বাড়িয়ে দিন।

৩/ আমরা নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিচ্ছি, আমাদের ধর্ম ইসলাম বলছি। তহলে কেন ইসলামের নিয়মনীতি মানতে আপত্তি? কেন আমরা ইসলামিক কালচারে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিনা? আসলে আমাদের লজ্জা কমে গেছে। তাি যা ইচ্ছে হয় তাই করি। তাইতো আমাদের সন্তানেরা আমাদের সামনে বেপর্দায় চলে আমরা কিছুই বলছিনা। আমরা মনে করছি এটাই আধুনিকতা। আসলে তা না! এটা হচ্ছে জাহেলিয়াত। আল্লাহ্ আমাদের সঠিক বুঝ দিন।

৪/ আল্লাহ্ সুবহানাহু তা'আলা আমাদের সৃষ্টিই করেছেন তার ইবাদাত করার জন্য। আমরা এ বিষয়ে কতটুকু সচেতন? এই মনে করেন নামাজের কথা। আমরা কি আমাদের নামাজ সম্পর্কে সচেতন? আমরা কি চিন্তা করি নামাজটা সঠিক হলো কিনা? আমরা কি নামাজটা খুশুখুজুর সাথে আদায় করি? এতসব প্রশ্নের বেশিরভাগ উত্তরই আসবে নেগেটিভ। তাহলে বলুন যে নামাজের হিসেবই প্রথম নেয়া হবে এটার অবস্থা যদি এমন হয় তাহলে অন্যসব ইবাদতের কি করুণ অবস্থা। তাই আমাদেরকে আল্লাহর ইবাদতের প্রতি যত্নবান হতে হবে। বিশেষ করে পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাজের প্রতি যত্নবান হতে হবে, নামাজে নিয়মিত হতে হবে, পরিপূর্ণভাবে সতর ঢাকতে হবে, রুকু-সিজদাহ সঠিকভাবে করতে হবে, মনোযোগের সাথে আদায় করতে হবে। কারন এই নামাজই কাফির-মুসলিমের মাঝে বড় পার্থক্য নির্নয়কারী। আল্লাহ্ আমাদের জন্য সহজ করুন। আমিন।

(চলবে....)

লিখেছেন: সুমাইয়া ইসলাম

2 تعليقات

  1. আমিন ছুম্মা আমিন

    ردحذف
  2. জাযাকাল্লাহ খাইরানফা-ইন্নাল্লাহা শাকিরুণ

    ردحذف

إرسال تعليق

أحدث أقدم