তালেবে ইলম কাকে বলে?


তালেবে ইলম হল যার মধ্যে তলব আছে জ্ঞান অর্জনের, পিপাসা আছে যেমন পিপাসার্থ ব্যক্তির পানির তীব্র চাহিদা হয়। তালাব হচ্ছে পিপাসা। ইলম অর্জনের পিপাসা যার মধ্যে আছে তার শুধু একটি চিন্তা থাকা দরকার সেটা হলো ইলম। তলবের পিপাসা এমন হতে হবে যতক্ষণ ইলম অর্জন না হয়, ততক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। ইলমের পিপাসায় কাতর হয়ে যাওয়া।

হযরত রশীদ আহমদ রহ. এর ঘটনা তিনি ছাত্র জমানায় মাদ্রাসার চলাচলের সাধারণ পথ ছেড়ে অন্য পথে চলতেন। সে পথের ধারে এক দরবেশ ছিল। সে দেখল, একটা ছেলে এই পথ দিয়ে অতিক্রম করার সময় কিতাবের ধ্যানে মগ্ন থাকে। দরবেশ তাকে ডেকে তিনটি প্রশ্ন করল। এক. হে কিশোর! তুমি স্বাভাবিক পথে না চলে অন্য পথে কেন চলো? তিনি বললেন আমি মাদ্রাসার ছাত্র, তাই সদা চিন্তা করি, আজ দারসে কি পড়লাম, যা পড়েছি তা কতটুকু আয়ত্বে আনতে পেরেছি। অন্য পথটি বাজারের মধ্যে দিয়ে গেছে। সেখানকার নানা ধরনের জিনিসপত্র দেখে ইন্তেসার পয়দা হতে পারে। তাই আমি এই পথে চলি।

দরবেশ আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কাপড় এতো ময়লা কেন? উত্তরে তিনি বললেন, দেখুন- সারাদিন কিতাব নিয়ে ব্যস্ত থাকি, সামান্য সময় টুকুও বিরতির জন্য পাই না। কাপড় পরিষ্কার করার সময় কোথায়? দরবেশ বললেন, আমি ইলমে কামিয়া জানি, এই লতা পাতা গুলো নিয়ে যাও, এগুলো মাটির সাথে ঘষলে মাটি স্বর্ণে পরিণত হবে। তিনি তা নিয়ে বাড়িতে গেলেন। কিছুদিন পর দরবেশের সাথে সাক্ষাৎ হলো, দরবেশ বললেন তোমার শরীরে তো ময়লা কাপড় দেখছি, তুমি স্বর্ণ বানাও নি? তিনি বললেন হুজুর! আমি ভুলে গেছি। ঠিক আছে তুমি আগামীকাল বানিয়ে নেবে। বাড়িতে গিয়ে দেখলেন লতা পাতা শুকিয়ে গেছে শুকনো পাতা দিয়ে কি হবে, এই ভেবে তারা রেখে দিলেন, একবার দুবার তিন বার তাকীদ দেওয়ার পরও যখন কোন কাজ হলো না তখন দরবেশ নিজে স্বর্ণ বানিয়ে তার হাতে দিয়ে বলল, এগুলো বিক্রি করে প্রয়োজন মিটিয়ে নেবে। পরের দিন তাকে দেখে বলল, তোমাকে তো পূর্বের অবস্থায় দেখছি। তিনি বলেন, হুজুর! লেখাপড়া ব্যস্ততায় স্বর্ণ বিক্রি করার কথা ভুলে গেছে। হযরত থানভী রহ. বলেন, রাশিদ আহমদ রহ. মাটি কে স্বর্ণ বানাতে শিখেনি ঠিকই, কিন্তু মাটির মানুষকে সামনে পরিণত করতে শিখেছেন।

[সংকলিত]

Post a Comment

أحدث أقدم