‘আমার আংকেল আমাকে যৌন নির্যাতন করেছিলো, তখন আমার বয়স ছিলো ৮ বছর’
‘আমি আমার বাবার হাতেই যৌন নির্যাতনের স্বীকার হই, ৭ থেকে ১৪ বছর বয়সের মধ্যে বাবা আমাকে যৌন নির্যাতন করেন’।
‘ছুটিতে মজা করার কথা ছিলো আমাদের, কিন্তু কে জানত খুব দ্রুতই তা আমার জন্য দুঃস্বপ্নে রূপ নেবে’
এরকম অসংখ্য টুইটের বন্যায় ভেসে যাচ্ছে টুইটার। বাবা,চাচা এমন নিকট আত্মীয়দের হাতে যৌন নির্যাতনের ঘটনার ব্যাপারে মুখ খুলেছে ফ্রান্সের হাজারে হাজারে নাগরিক। তিন বছর আগে ইন্টারনেট ভরে গিয়েছিলো #Metoo হ্যাশট্যাগে। সেই সময় একে একে বের হয়ে আসছিলো ইউরোপ আমেরিকা হলিউড, বলিউডে যারা নারী স্বাধীনতার গান গাইতো তাদের হাতেই নারীদের যৌন নির্যাতনের গা শিউরে ওঠা কাহিনী। বিশ্ববাসীর সামনে একদম খুলে পড়েছিলো নারী স্বাধীনতা, প্রগতি আর সমানাধিকারের বুলি আউড়ানো ইউরোপ আমেরিকা আর মিডিয়ার মুখোশ।
এই #Metoo movement এর আদলেই ফ্রান্সে শুরু হয়েছে #Metooinceste আন্দোলন। এর শুরুটা হয় বেশ জঘন্য এক ঘটনা দিয়ে। Olivier Duhamel নামের এক ফ্রেন্স প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবির নামে অভিযোগ ওঠে সে তার সৎ ছেলেকে বয়ঃসন্ধি অবস্থায় যৌন নির্যাতন করেছে। এই ঘটনার পর #Metooincesteএর বন্যা শুরু হয় টুইটারে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ২০ হাজার টুইট করা হয়। ফ্রান্সের নাগরিকরা একে একে বলতে শুরু করে কীভাবে তারা নিজেদের বাবা,চাচা, ভাই ইত্যাদি আপনজনের হাতে যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে ছোটো থাকতে।
ফ্রান্সে ইনসেস্ট অর্থাৎ যাদের সাথে বিয়ে নিষিদ্ধ এমন মানুষদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ। অর্থাৎ বাবা মেয়ে দুজন বিছানায় যেতে পারবে, ভাই বোন , মা ছেলে যা খুশি তাই করতে পারবে। এগুলো কোনো সমস্যা না তাদের কাছে। কিন্তু যদি যৌনতায় আগ্রাসন প্রদর্শন করা হয় বা ১৫ বছরের কম বাচ্চাকে বিছানায় নেওয়া হয় তখন সেটা ফ্রান্সে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
এই চরম ঘৃণিত আইনের ফলাফল হয়েছে ভয়াবহ। ফ্রান্সের ঘরে ঘরে আজ ইনসেস্টের মাধ্যমে যৌন নির্যাতন চলছে। প্রতি ১০ জনের ১ জন বলছে তারা ইনসেস্টের স্বীকার। ইনসেস্টের মাধ্যমে যৌন নির্যাতিত ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংস্থার নাম ফেসিং ইনসেস্ট। এই সংস্থার প্রেসিডেন্ট Patrick Loiseleur বলছে, ইনসেস্ট হলো ঘরে থাকা একটা হাতির মতো যা কেউই দেখছেনা(মানে দেখেও না দেখার ভান করছে) ইনসেস্টের মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশী যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে কিন্তু এটা নিয়ে সবচেয়ে কম কথা হয়’।
বাহ ফ্রান্সে সভ্যতা, প্রগতিশীলতা, মানবাধিকারের কি অপূর্ব নিদর্শন!
দুই.
আমাদের সুশীল প্রগতীশীলরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য ইউরোপ আমেরিকাকে অন্ধু অনুসরণ করার কথা বলে।
পিতার হাতে সন্তানেরা যৌন নির্যাতিত হয় এমন দেশের কাছ থেকে আমাদের সভ্যতা শিখতে হবে?
ভাইয়ের কাছে বোন নিরাপদ নয় এমন দেশের কাছ থেকেই আমাদের মানবাধিকার শিখতে হবে?
এমন দেশকে অনুসরণ করে প্রগতিশীলতা শিখতে হবে আমাদের?
তিন.
ফ্রান্স মানবাধিকার, মতপ্রকাশের অধিকার আর বাক স্বাধীনতার নামে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর অবমাননা করেছিলো। ফ্রান্সের সর্বস্তরের নাগরিক রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে অপমান করেছিলো। ইন্ডিয়ার দাদাবাবুরা তাতে সমর্থন যুগিয়েছিলো। সেই মহান মানবাধিকার , ব্যক্তিস্বাধীনতার দেশে কেমন ব্যক্তি স্বাধীনতার চর্চা করা হচ্ছে তা তো আপনারা দেখছেনই। পিতার হাতে সন্তানও নিরাপদ নয়। ভাইয়ের হাতে নিরাপদ নয় নিজ বোনও।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখেন যেকোনো জাতির পতনের সময় সে জাতির মধ্যে চরম মাত্রার যৌন বিকৃতি দেখা দেয়। ফ্রান্সের পতন অতি সন্নিকটে। এরা জাতি হিসেবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর অবমাননা করেছিলো। কাপুরুষ আমরা কিছুই করিনি এদের বিরুদ্ধে। তাই বলে আল্লাহর স্বাভাবিক নিয়ম থেমে থাকবে না। আল্লাহর কিছু পছন্দনীয় বান্দার হাতে খুব শীঘ্রই পতন ঘটবে ফ্রান্সের।
পতনের আওয়াজ ঐ পাওয়া যায়…
রেফারেন্স:
[১]Incest Scandal Sets Off a New #MeToo Movement in France- https://tinyurl.com/y3s8aobg
[২] Prominent French Intellectual Steps Down Amid Accusations of Incest- https://tinyurl.com/y4y4rut5
[৩] In the #MeToo Era, France Struggles With Sexual Crimes Involving Minors- https://tinyurl.com/y2ulj8nt
লেখক: Enamul Hossain
আল্লাহ আমাদের এসব অজাচার থেকে হিফাজত করুন। (আমিন)
Post a Comment