যিকিরের গুরুত্ব ও ফযিলত

 


যারা যিকিরকে সাধারণ ইবাদত বলে মনে করেন আশা করি এই পোস্ট পড়লে তাদের ভুল ধারণা দূর হবে।

___________________________________

শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা রহি’মাহুল্লাহ বলেন, 

“মাছের জন্য যেমন পানি দরকার, অনুরূপ মানুষের অন্তরের জন্য আল্লাহর যিকির আবশ্যক। মাছকে যদি পানি থেকে বের করা হয় তাহলে তার অবস্থা কেমন হবে? (আল্লাহর যিকির ছাড়া মানুষের হৃদয়ের অবস্থাও তেমন।)” 

___________________________________

• যিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা লাভ করা যায়। তাঁর নিকটবর্তী হওয়া যায়। তাঁর সন্তুষ্টি পাওয়া যায়। তাঁর পর্যবেক্ষণ অনুভব করা যায়। তাঁকে ভয় করা যায়। তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তন করা যায়। তাঁর আনুগত্য করতে সাহায্য পাওয়া যায়। 

• যিকিরের মাধ্যমে অন্তরের দুঃখ-বেচনা ও দুঃশ্চিন্তা দূর হয়। খুশি ও আনন্দ লাভ করা যায়। অন্তর জীবিত থাকে, তাতে শক্তি ও পরিছন্নতা সৃষ্টি হয়।

• অন্তরের মধ্যে যে শূণ্যতা ও অভাব থাকে তা আল্লাহর যিকির ছাড়া দূর হবেনা। এমনিভাবে অন্তরের মধ্যে যে কঠোরতা আছে আল্লাহর যিকির ছাড়া তা নরম হবেনা।

• যিকির হচ্ছে অন্তরের আরোগ্য, পথ্য এবং শক্তি। যিকিরের আনন্দ-স্বাদের তুলনায় অন্য কোন আনন্দ নেই, অন্য কোন স্বাদ নেই। অন্তরের রোগ হচ্ছে যিকির থেকে উদাসীনতা।

• যিকিরের স্বল্পতা মুনাফেকীর দলীল। অধিক পরিমাণ যিকির করা ঈমানের দৃঢ়তার প্রমাণ এবং আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার দলীল। কেননা মানুষ যা ভালোবাসে তা বেশি বেশি স্মরণ করে।

• বান্দা যখন যিকিরের মাধ্যমে সুখের সময় আল্লাহকে স্মরণে রাখবে তিনিও বান্দাকে তার দুঃখের সময় স্মরণ করবেন। বিশেষ করে মৃত্যুর সময়, মৃত্যু যন্ত্রনার সময়।

• যিকির হচ্ছে আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচার মাধ্যম। যিকিরের কারণে ‘সাকিনাহ’ (প্রশান্তি) নাযিল হয়, যিকিরকারীকে আল্লাহর রহমত আচ্ছাদিত করে এবং ফেরেশতার তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।

• যিকিরের মাধ্যমে জিহবাকে বাজে কথা, গীবত, চোগলখুরী, মিথ্যা প্রভৃতি হারাম ও অপছন্দনীয় বিষয় হতে রক্ষা করা যায়।

• যিকির হচ্ছে সবচাইতে সহজ ইবাদত। সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ ইবাদত। যিকিরের মাধ্যমে জান্নাতে বৃক্ষরোপণ করা হয়। 

• যিকিরের মাধ্যমে ভাব-গাম্ভীর্য, কথা-বার্তায় মিষ্টতা ও চেহারায় উজ্জ্বলতা প্রকাশ পায়। যিকির হচ্ছে দুনিয়ার আলো, কবর এবং পরকালের নূর।

• যিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত (দয়া) নাযিল আবশ্যক হয়, ফেরেশতারা তার জন্য দুয়া করে। যিকিরকারীদেরকে নিয়ে আল্লাহ ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করেন। 

• অধিকহারে আল্লাহর যিকিরকারী সর্বশ্রেষ্ঠ আমলকারীদের অন্তর্ভুক্ত। যেমন সর্বোত্তম রোযাদার হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যে রোযা অবস্থায় বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করে। 

• যিকিরের মাধ্যমে কঠিন জিনিস সহজ হয়, দুর্বোধ্য জিনিস স্পষ্ট হয়, কষ্ট হালকা হয়, রিযিক্বের পথ উন্মুক্ত হয়, শরীর শক্তিশালী হয়।

• যিকিরের মাধ্যমে শয়তান দূরীভূত হয়, তাকে মূলোৎপাটন করে, তাকে লাঞ্চিত ও অপমানিত করে। 

___________________________________

উৎসঃ তাফসীরুল উশরিল আখীর মিনাল ক্বুরআনিল কারীমঃ পৃষ্ঠা-১৬২। 

ছোট্ট, সুন্দর এবং অনন্য এই বইটা মদীনাতুল মুনাওয়ারাতে অবস্থিত সৌদী আরব সরকারের নিজস্ব প্রকাশনা সংস্থা “বাদশাহ ফাহাদ প্রিন্টিং কমপ্লেক্স” থেকে প্রকাশিত। 

Post a Comment

أحدث أقدم