জীবিকার খোঁজ - মন্দ কিছু নয়!


অনেকে জীবিকার খোঁজে কাজ করতে চান না। আবার কেউ কেউ কম কাজ করে বেশি আয়রোজগার আশা করেন। ভাবেন, এটাই তাওয়াক্কুল। আসলে হাত গুঁটিয়ে শুধু ভরসা করে থাকলেই যদি রিজিক চলে আসত, তাহলে আল্লাহ তাআলা সকল নবীকেই বসিয়ে খাওয়াতেন। 


ইমাম মুহাম্মাদ শাইবানি (রহ.) লিখেছেন:

'নূহ (আ.) ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রী। তিনি নিজে উপার্জন করে খেতেন। ইদ্‌রীস (আ.) ছিলেন দর্জি। ইবরাহীম (আ.) ছিলেন বস্ত্রব্যবসায়ী। দাউদ (আ.) নিজে উপার্জন করে খেতেন। 


বর্ণিত আছে, দাউদ (আ.) ছদ্মবেশে বেরিয়ে রাজ্যের লোকদের কাছে নিজের সামগ্রিক জীবন সম্পর্কে জানতে চাইতেন। একদিন জিবরীল (আ.) এক যুবকের বেশে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দাউদ তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, "ওহে যুবক! দাউদকে তুমি কেমন জানো?" তিনি বলেন, "হ্যাঁ, দাউদ অত্যন্ত উত্তম বান্দা; তবে তাঁর মধ্যে একটি বিশেষ স্বভাব আছে!' দাউদ জানতে চান, "কী সেটা?" তিনি বলেন, 'তিনি বাইতুল মাল (রাষ্ট্রীয় কোষাগার) থেকে নিজের খাওয়া-খরচ নেন; সর্বোত্তম মানুষ সে-ই, যে নিজে উপার্জন করে খায়।" এরপর দাউদ (আ.) নিজের সালাত আদায়ের জায়গায় এসে অত্যন্ত বিনীতভাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আল্লাহ তাআলাকে বলেন, 

"হে আল্লাহ! আমাকে জীবিকা উপার্জনের একটি মাধ্যম শিখিয়ে দাও! যার মাধ্যমে তুমি আমাকে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অমুখাপেক্ষী করে দেবে।"


এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা তাঁকে বর্ম বানানোর কৌশল শেখান। এভাবে সুলইমান (আ.) তালপাতা দিয়ে বড় বড় ঝুড়ি বানিয়ে জীবিকা লাভ করতেন। যাকারিয়া (আ.) ছিলেন কাঠমিস্ত্রী। ঈসা (আ.) জীবিকা নির্বাহ করতেন তাঁর মায়ের চরকা দিয়ে; আবার কখনও কখনও শস্যের শিষ সংগ্রহ করে খেতেন, এটিও এক ধরনের উপার্জন।


আমাদের নবীজি (ﷺ) কখনও কখনও মেষ চরিয়েছেন। বর্ণিত আছে, একদিন তিনি তাঁর সাহাবিদের বলেন, "আমি ছিলাম উকবা ইবনু মুআইত-এর রাখাল। আল্লাহ তাআলা এমন কোনও রাসূল পাঠাননি, যাকে দিয়ে তিনি রাখালের দায়িত্ব পালন করাননি।" (বুখারী, ৪/৪৪১)


© ইমাম মুহাম্মাদ

Post a Comment

أحدث أقدم