মুহাররাম, শাবান এবং অন্যান্য পবিত্র মাসে রোযা রাখার ফযীলত


আবূ হুরাইরা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা:) বলেছেন, "মাহে রমযানের পর সর্বোত্তম রোযা, আল্লাহর মাস মুহাররাম। আর ফরজ নমাযের পর সর্বোত্তম নামায রাতের (তাহাজ্জুদ) নামায।" (মুসলিম) 


আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, 'নবী (সা:) শাবান মাস চাইতে বেশি নফল রোযা অন্য কোনো মাসে রাখতেন না। নিঃসন্দেহে তিনি পূর্ণ শাবান মাস রোযা রাখতেন।' অন্য বর্ণনায় আছে, 'অল্প কিছু দিন ছাড়া তিনি পূর্ণ শা 'বান মাস রোযা রাখতেন। ' (বুখারী মুসলিম) 


মুজীবাহ আল বাহিলিয়্যাহ(রা:) হতে তার বাবা বা চাচার সূত্রে বর্ণিত, তার বাবা বা চাচা রাসুলুল্লাহ (সা:) এর নিকট উপস্থিত হন। অতঃপর তিনি চলে যান এবং একবছর পর পুনরায় উপস্থিত হন। তার অবস্থা ও চেহারা-সুরাত সে সময় (অনেক) পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল । তিনি বলেন হে আল্লাহর রাসূল ( সা:) ! আমাকে কি আপনি চিনতে পারছেন না? জবাবে তিনি বললেন কে তুমি তিনি বলেন, আমি হলাম সেই বাহিলী, আপনার নিকট প্রথম বছরে এসছিলাম। নবী (সা:) বললেন, তোমার এ পরিবর্তন কিভাবে হলো, তোমার চেহারা সুরাত না বেশ সুন্দর ছিল? বাহিলী উত্তর দেন, আপনার নিকট থেকে বিদায় নেয়ার পর থেকে আমি প্রতি রাতে ব্যাতীত আর কখনো খাদ্য গ্রহণ করিনি (প্রতিদিন রোযা রেখেছি)। নবী (সা:) বললেন, নিজের জীবনকে তুমি কষ্ট দিয়েছো। অতঃপর বললেন রামাযানে রোযা রাখো, এরপর প্রতি মাসে একদিন করে (রোযা রাখো)। বাহিলী বললো, আরো বেশি করে দিন, কারন আমার ভিতর এর শক্তি আছে। জবাবে বললেন, ঠিক আছে, প্রতি মাসে দু 'দিন করে। বাহিলী বলেন, আমি অধিক সামর্থ রাখি। নবী (সা:) বললেন, তবে প্রতি মাসে তিন দিন করে। বাহিলী বললেন আরো বেশি করোন। জবাবে নবী (সা:) বললেন, হারাম মাসগুলোয় (যিলক্বদ, যিলহাজ্জ, মুহাররাম ও রজব) রোযা রাখো ও ছেড়ে দাও। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর নিজের তিন আংগুল দিয়ে তিনি ইশারা করেন, প্রথমে সেগুলোকে মিলিত করেন, তারপর ছেড়ে দেন (অর্থাৎ তিনদিন রোযা রাখো এবং তিনদিন খাও) [আলবানী রহ. বলেন এর সনদটি দুর্বল] ।


আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) হতে বর্ণিত , তিনি বলেন, রাসূল (সা:) বলেছেন, "এই দিনগুলির (অর্থাৎ, যুলহিজ্জার প্রথম দশ দিনের) তুলনায় এমন কোন দিন নেই, যাতে কোন সৎ কাজ আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়। " লোকেরা বলল, 'আল্লাহর পথে জিহাদও নয় কী?' তিনি বললেন, "আল্লাহর পথে জিহাদও নয়।" তবে কোন (মুজাহিদ) ব্যক্তি যদি তার জান মালসহ বের হয়ে যায় এবং তার কোন কিছুই নিয়ে আর ফিরে না আসে। " (অর্থাৎ শাহাদত বরন করে, তাহলে হয়তো তার সমান হতে পারে)। (বুখারী) 


আবূ কাতাদাহ (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সা:) কে আরাফার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বলেন, "তার পূর্বের এক বছর ও পরের এক বছরের গোনাহ মোচন করে দেয়।" (মুসলিম) 


ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) আশূরার (মুহাররাম মাসের দশম) দিনে স্বয়ং রোযা রেখেছেন এবং ঐ দিনে রোযা রাখতে আদেশ করেছেন। (বুখারী ও মুসলিম) 


আবূ কাতাদাহ (রা:) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (সা:) কে আশুরার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, "তা বিগত এক বছরের গোনাহ মোচন ক'রে দেয়।" (মুসলিম) 


ইবনে আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, " আগামী বছর যদি আমি বেঁচে থাকি, তাহলে মুহাররাম মাসের নবম তারীখে অবশ্যই রোযা রাখব।" (অর্থাৎ, নবম ও দশম দু'দিন ব্যাপী রোযা রাখব। (মুসলিম)


আবূ আইয়ুব আনসারী (রা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, " যে ব্যক্তি রমযানের রোযা পালনের পর শাওয়াল মাসের ছয়দিন রোযা রাখল, সে যেন সারা বছর রোযা রাখল।"(মুসলিম)


Related searches: শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস, শাবান মাসের রোজার ফজিলত, শাবান মাসের দোয়া, রজব ও শাবান মাসের দোয়া, শাবান মাসের রোজা কয়টি, শাবান মাসের ওয়াজ, শাবান মাসের রোজা রাখার নিয়ম, শাবান মাসের রোজা কত তারিখে।

Post a Comment

أحدث أقدم