মানুষকে কীভাবে সংশোধন করবেন?



ইমাম শাফিয়ি (রাহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার ভাইকে গোপনে উপদেশ দিলো, সে তাকে (প্রকৃতপক্ষেই) উপদেশ দিলো এবং তাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করলো। আর, যে প্রকাশ্যে উপদেশ দিলো, সে তাকে লজ্জিত করলো এবং তার সাথে প্রতারণা করলো।’

[আবু নু‘আইম, হিলয়াতুল আউলিয়া: ৯/১৪০]


তামিম আদ-দারি (রা.) বর্ননা করেন যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘দ্বিন হলো কল্যাণকামনা করা।’’ আমরা বললাম, ‘কার জন্য কল্যাণ কামনা?’ তিনি বললেন, ‘‘আল্লাহর, তাঁর কিতাবের, তাঁর রাসুলের, মুসলিম ইমামগণের এবং সর্বসাধারণের।’’ [মুসলিম, আস-সহিহ: ১০২]


নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “মুসলিম সেই ব্যক্তি, যার মুখ ও হাতের অনিষ্ট থেকে অন্যান্য মুসলিম নিরাপদ থাকে।” [বুখারি, আস-সহিহ: ১০; মুসলিম, আস-সহিহ: ১৭১]


অন্য হাদিসে এসেছে, ‘‘প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির রক্ত (জীবন), ধন-সম্পদ ও মান-সম্মান (নষ্ট করা) অপর মুসলিমের জন্য হারাম।” [মুসলিম, আস-সহিহ: ৬৭০৬]


ধরুন, আপনার মধ্যে একটি ত্রুটি আছে। কেউ একজন গোপনে এসে আপনাকে বললো, ‘ভাই, আপনার অমুক ব্যাপারটি ভুল।’ তাহলে নিশ্চয়ই আপনি তার প্রতি খুশি হবেন (খুশি হওয়াটাই উচিত), কারণ সে আপনার কল্যাণকামী, তাই গোপনে সংশোধন করতে এসেছে। অপরদিকে, ধরুন আপনি বন্ধুদের সাথে আলাপ করছেন। এমতাবস্থায় কেউ যদি আপনাকে আপনার এই ভুলটি ধরিয়ে দেয়, তখন আপনি একটু হলেও মনঃকষ্ট পাবেন। কারণ, মানুষের সামনে কেউ লজ্জিত হতে বা ছোট হতে চায় না। সুতরাং, আপনি নিজের জন্য যে পদ্ধতি পছন্দ করেন, অন্যের জন্যও তাই করুন।


নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমাদের কেউ (প্রকৃত) মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য সেটিই পছন্দ করবে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।’’ [মুসলিম, আস-সহিহ: ৪৫]


ইমাম শাফিয়ির মতে, প্রকাশ্যে ভুল শোধরাতে চাওয়া মানে প্রতারণা করা। এর মানে হলো, একজন মুসলিম তার অপর মুসলিম ভাইয়ের কাছ থেকে এটা কামনা করে যে, সে তার জন্য আন্তরিক হবে এবং এমন আচরণ করবে, যে আচরণ নিজে পেতে পছন করবে। আর, কেউ যখন প্রকাশ্যে ভুল ধরিয়ে দেয়, তখন এটি তার ঈমানি ভ্রাতৃত্ববোধের সাথে প্রতারণা (খেয়ানত) ও বিশ্বাসঘাতকতা।

1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post