হাদীসে কুদসী


□□□ মাসরুক থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা:) কে এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম: "আল্লাহর পথে যারা নিহত হয় তাদের তোমরা মৃত ধারণা করো না, বরং জীবিত, তাদের রবের নিকট থেকে তারা রিযিক লাভ করে থাকে।" উত্তরে ইবনু মাসঊদ (রা:) বললেন, আমি এ সম্পর্কে (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে) জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছেন: তাদে রুহ (আত্মা) সবুজ বর্ণের পাখির পেটের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। আল্লাহর আরশের নীচে ঝুলানো দীপাধারের মধ্যে তাদের বাসা। এরা জান্নাতের যে কোন জায়গায় অবাধে বিচরণ করতে পারে। পুনরায় তারা এই দীপাধারে ফিরে ফিরে আসে। অতঃপর তাদের রব তাদের সম্মুখে আত্মপ্রকাশ করে বলেন, তোমরা কি কোন কিছুর আকাঙ্ক্ষা রাখো? তারা বলে, আমরা আর কোন জিনিসের আকাঙ্ক্ষা করবো? আমরা জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা অবাধে ঘুরে বেড়াতে পারি। তাদের রব এভাবে তিনবার জিজ্ঞেস করেন। যখন তারা দেখলো যে, তাদের একই কথা বারবার জিজ্ঞেস করা হচ্ছে তখন তারা বললো, হে প্রভু! আমরা চাচ্ছি যে, আমাদের দেহের মধ্যে আমাদের আত্মা পুনরায় ফিরিয়ে দিন। আমরা আর একবার আপনার রাস্তায় শহীদ হই। অবশেষে আল্লাহ্ তা'আলা যখন দেখলেন যে, তাদের কোন চাহিদা নেই, তখন তাদেরকে নিজ নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেন। -(মুসলিম: ১৮৮৭; তিরমিযী: ৩০১১)


□□□ আবু সাঈদ খুদরী (রা:) ও আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন: (আল্লাহ্ বলেন) মাহাত্ম ও মর্যাদা আল্লাহর পায়জামা এবং গর্ব ও অহংকার আল্লাহর চাদর। অতএব যে ব্যক্তি এ ব্যাপারে আমার বিরোধিতা করবে তাকে আমি শাস্তি দেব। -(মুসলিম: ২৬২০; আবু দাউদ: ৪০৯০)


□□□ আনাস ইবনু মালিক (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) কে আমি বলতে শুনেছি: বারাকাতময় আল্লাহ্ তা'আলা বলেন: হে আদম সন্তান! যতক্ষণ আমাকে তুমি ডাকতে থাকবে এবং আমার হতে ক্ষমা পাওয়ার আশায় থাকবে। তোমার গোনাহ যত অধিক হোক, তোমাকে আমি ক্ষমা করবো, এতে কোন পরওয়া করবো না। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহর পরিমাণ যদি আসমানের কিনারা বা মেঘমালা পর্যন্তও পৌছে যায়, তারপর তুমি আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, এতে তুমি আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, এতে আমি পরওয়া করবো না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি পুরো পৃথিবী ভরা গুনাহ নিয়েও আমার নিকট আস এবং আমার সঙ্গে কাউকে অংশীদার না করে থাকে, তাহলে তোমার কাছে আমিও পৃথিবী ভরা ক্ষমা নিয়ে হাজির হব। - (তিরমিযী: ৩৫৪০)


□□□ নাওয়াস ইবনে সামআন রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- ''রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সকালে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তাতে তিনি একবার নিম্ন সবরে এবং একবার উচ্চ সবরে বাক ভঙ্গিমা অবলম্বন করলেন। শেষ পর্যন্ত আমরা [প্রভাবিত হয়ে] মনে মনে ভাবলাম যে, সে যেন সামনের এই খেজুর বাগানের মধ্যেই রয়েছে। তারপর আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গেলাম, তখন তিনি আমাদের উদ্বিগ্নতা দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তোমাদের কি হয়েছে?’’ আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি আজ সকালে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে এমন নিম্ন ও উচ্চ কণ্ঠে বর্ণনা করলেন, যার ফলে আমরা ধারণা করে বসি যে, সে যেন খেজুর বাগানের মধ্যেই রয়েছে।’ তিনি বললেন, ‘‘দাজ্জাল ছাড়া তোমাদের ব্যাপারে অন্যান্য জিনিসকে আমার আরও বেশী ভয় হয়। আমি তোমাদের মাঝে থাকাকালে দাজ্জাল যদি আত্মপ্রকাশ করে, তাহলে আমি স্বয়ং তোমাদের পক্ষ থেকে তার প্রতিরোধ করব। আর যদি তার আত্মপ্রকাশ হয় এবং আমি তোমাদের মাঝে না থাকি, তাহলে [তোমরা] প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ আত্মরক্ষা করবে। আর আল্লাহ স্বয়ং প্রতিটি মুসলিমের জন্য [আমার] প্রতিনিধিত্ব করবেন। সে দাজ্জাল নব-যুবক হবে, তার মাথার কেশরাশি হবে খুব বেশি কোঁচকানো। তার একটি চোখ [আঙ্গুরের ন্যায়] ফোলা থাকবে। যেন সে আব্দুল উয্যা ইবনে ক্বাত্বানের মত দেখতে হবে। সুতরাং তোমাদের যে কেউ তাকে পাবে, সে যেন তার সামনে সূরা কাহ্ফের শুরুর [দশ পর্যন্ত] আয়াতগুলি পড়ে। সে শাম ও ইরাকের মধ্যবর্তী স্থানে আবির্ভূত হবে। আর তার ডাইনে- বামে [এদিকে ওদিকে] ফিতনা ছড়াবে। হে আল্লাহর বান্দারা। [ঐ সময়] তোমরা অবিচল থাকবে।’’ আমরা বললাম, ‘পৃথিবীতে তার অবস্থান কতদিন থাকবে?’ তিনি বললেন, ‘‘চল্লিশ দিন পর্যন্ত। আর তার একটি দিন এক বছরের সমান দীর্ঘ হবে। একটি দিন হবে এক মাসের সমান লম্বা। একটা দিন এক সপ্তাহের সমান হবে এবং বাকি দিনগুলি প্রায় তোমাদের দিনগুলির সম পরিমাণ হবে।’’ আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! যেদিনটি এক বছরের সমান লম্বা হবে, তাতে আমাদের একদিনের [পাঁচ ওয়াক্তের] নামাযই কি যথেষ্ট হবে?’ তিনি বললেন, ‘‘তোমরা [দিন রাতের ২৪ ঘণ্টা হিসাবে] অনুমান করে নামায আদায় করতে থাকবে।’’ আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, ভূপৃষ্ঠে তার দ্রুত গতির অবস্থা কিরূপ হবে? তিনি বললেন, তীব্র বায়ু তাড়িত মেঘের ন্যায় [দ্রুত বেগে ভ্রমণ করে অশান্তি ও বিপর্যয় ছড়াবে।] সুতরাং সে কিছু লোকের নিকট আসবে ও তাদেরকে তার দিকে আহ্বান জানাবে এবং তারা তার প্রতি ঈমান আনবে ও তার আদেশ পালন করবে। সে আকাশকে বৃষ্টি বর্ষণ করতে আদেশ করবে, আকাশ আদেশক্রমে বৃষ্টি বর্ষণ করবে। আর জমিনকে [গাছ-পালা] উদ্গত করার নির্দেশ দেবে। জমিন তার নির্দেশক্রমে তাই উদ্গত করবে। সুতরাং [সে সব গাছ-পালা ভক্ষণ করে] সন্ধ্যায় তাদের গবাদি পশুদের কুঁজ [ও ঝুঁটি] অধিক উঁচু হবে ও তাদের পালানে অধিক পরিমাণে দুধ ভরে থাকবে। উদর পূর্ণ আহার জনিত তাদের পেট টান হয়ে থাকবে। অতঃপর দাজ্জাল [অন্য] লোকের নিকট যাবে ও তার দিকে [আসার জন্য] তাদেরকে আহ্বান জানাবে। তারা কিন্তু তার ডাকে সাড়া দেবে না। ফলে সে তাদের নিকট থেকে ফিরে যাবে। সে সময় তারা চরম দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত হয়ে পড়বে ও সর্বস্বান্ত হবে। তারপর সে কোন প্রাচীন ধ্বংসস্তূপের নিকট দিয়ে অতিক্রম করার সময় সেটাকে সম্বোধন করে বলবে, ‘তুই তোর গচ্ছিত রত্নভাণ্ডার বের করে দে।’ তখন সেখানকার গুপ্ত রত্নভাণ্ডার মৌমাছিদের নিজ রাণী মৌমাছির অনুসরণ করার মতো [মাটি থেকে বেরিয়ে] তার পিছন ধরবে। তারপর এক পূর্ণ যুবককে ডেকে তাকে অস্ত্রাঘাতে দ্বিখণ্ডিত করে তীর নিক্ষেপের লক্ষ্যমাত্রার দূরত্বে নিক্ষেপ করে দেবে। তারপর তাকে ডাক দেবে। আর সে উজ্জ্বল সহাস্য-বদনে তার দিকে [অক্ষত শরীরে] এগিয়ে আসবে। দাজ্জাল এরূপ কর্ম-কাণ্ডে মগ্ন থাকবে। ইত্যবসরে মহান আল্লাহ তা‘আলা মসীহ ইবন মারয়্যাম আলাইহিস সালাম- কে পৃথিবীতে পাঠাবেন। তিনি দামেস্কের পূর্বে অবস্থিত শেবত মিনারের নিকট অর্স ও জাফরান মিশ্রিত রঙের দুই বস্ত্র পরিহিত অবস্থায় দু’জন ফিরিশ্তার ডানাতে হাত রেখে অবতরণ করবেন। তিনি যখন মাথা নিচু করবেন, তখন মাথা থেকে বিন্দু বিন্দু পানি ঝরবে এবং যখন মাথা উঁচু করবেন, তখনও মতির আকারে তা গড়িয়ে পড়বে। যে কাফেরই তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাসের নাগালে আসবে, সে সঙ্গে সঙ্গে প্রাণ হারাবে। তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস তাঁর দৃষ্টি যত দূর যাবে, তত দূর পৌঁছবে। অতঃপর তিনি দাজ্জালের সন্ধান চালাবেন। শেষ পর্যন্ত [জেরুজালেমের] ‘লুদ’ প্রবেশ দ্বারে তাকে ধরে ফেলবেন এবং অনতিবিলম্বে তাকে হত্যা করে দেবেন। তারপর ঈসা আলাইহিস সালাম এমন এক জনগোষ্ঠীর নিকট আসবেন, যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা দাজ্জালের চক্রান্ত ও ফিতনা থেকে মুক্ত রেখেছেন। তিনি তাদের চেহারায় হাত বোলাবেন [বিপদমুক্ত করবেন] এবং জান্নাতে তাদের মর্যাদাসমূহ সম্পর্কে তাদেরকে জানাবেন। এসব কাজে তিনি ব্যস্ত থাকবেন এমন সময় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিকট অহি পাঠাবেন যে, ‘‘আমি আমার কিছু বান্দার আবির্ভাব ঘটিয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে কারো লড়ার ক্ষমতা নেই। সুতরাং তুমি আমার প্রিয় বান্দাদের নিয়ে ‘ত্বূর’ পর্বতে আশ্রয় নাও।’’ আল্লাহ তা‘আলা য়্যা’জুজ- মা’জুজ জাতিকে পাঠাবেন। তারা প্রত্যেক উচ্চস্থান থেকে দ্রুত বেগে ছুটে যাবে। তাদের প্রথম দলটি ত্বাবারী হ্রদ পার হবার সময় তার সম্পূর্ণ পানি এমনভাবে পান করে ফেলবে যে, তাদের সর্বশেষ দলটি সেখান দিয়ে পার হবার সময় বলবে, এখানে এক সময় পানি ছিল। আল্লাহর নবী ঈসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সাথীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত তাঁদের কাছে একটি গরুর মাথা, বর্তমানে তোমাদের একশ’টি স্বর্ণমুদ্রা অপেক্ষা অধিক উত্তম হবে। সুতরাং আল্লাহর নবী ঈসা আলাইহিস সালাম এবং তাঁর সঙ্গীগণ আল্লাহর কাছে দো‘আ করবেন। ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের [য়্যা’জূজ-মা’জূজ জাতির] ঘাড়সমূহে এক প্রকার কীট সৃষ্টি করে দেবেন। যার শিকারে পরিণত হয়ে তারা এক সঙ্গে সবাই মারা যাবে। তারপর আল্লাহ তা’আলার নবী ঈসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সাথীগণ নিচে নেমে আসবেন। তারপর [এমন অবস্থা ঘটবে যে,] সেই অঞ্চল তাদের মৃতদেহ ও দুর্গন্ধে ভরে থাকবে; এক বিঘত জায়গাও তা থেকে খালি থাকবে না। সুতরাং ঈসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সঙ্গীরা আল্লাহর কাছে দো‘আ করবেন। ফলে তিনি বুখতী উটের ঘাড়ের ন্যায় বৃহদকায় এক প্রকার পাখি পাঠাবেন। তারা উক্ত লাশগুলিকে তুলে নিয়ে গিয়ে আল্লাহ যেখানে চাইবেন সেখানে নিয়ে গিয়ে নিক্ষেপ করবে। তারপর আল্লাহ তা‘আলা এমন প্রবল বৃষ্টি বর্ষণ করবেন যে, কোন ঘর ও শিবির বাদ পড়বে না। সুতরাং সমস্ত জমিন ধুয়ে মসৃণ পাথরের ন্যায় অথবা স্বচ্ছ কাঁচের ন্যায় পরিষ্কার হয়ে যাবে। তারপর জমিনকে আদেশ করা হবে যে, ‘তুমি আপন ফল-মূল যথারীতি উৎপন্ন কর ও নিজ বরকত পুনরায় ফিরিয়ে আন।’ সুতরাং [বরকতের এত ছড়াছড়ি হবে যে,] একদল লোক একটি মাত্র ডালিম ফল ভক্ষণ করে পরিতৃপ্ত হবে এবং তার খোসার নীচে ছায়া অবলম্বন করবে। পশুর দুধে এত প্রাচুর্য প্রদান করা হবে যে, একটি মাত্র দুগ্ধবতী উটনী একটি সম্প্রদায়ের জন্য যথেষ্ট হবে। একটি দুগ্ধবতী গাভী একটি গোত্রের জন্য যথেষ্ট হবে। আর একটি দুগ্ধবতী ছাগী কয়েকটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট হবে। তারা ঐ অবস্থায় থাকবে, এমন সময় আল্লাহ তা‘আলা এক প্রকার পবিত্র বাতাস পাঠাবেন, যা তাদের বগলের নীচে দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জীবন হরণ করবে। তারপর স্রেফ দুর্বৃত্ত ও অসৎ মানুষজন বেঁচে থাকবে, যারা এই ধরার বুকে গাধার ন্যায় প্রকাশ্যে লোকচক্ষুর সামনে ব্যভিচারে লিপ্ত হবে। সুতরাং এদের উপরেই সংঘটিত হবে মহাপ্রলয় [কিয়ামত]।’’ (হাদিস - মুসলিম-২৯৩৭ )



□□□ আবু দারদা ও আবু যর (রা:) হতে বর্ণিত আছে, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা বলেন: হে আদম সন্তান! দিনের প্রথমভাগে আমার জন্য চার রাক'আত (চাশতের) সালাত আদায় কর, আমি তোমার দিনের শেষ পর্যন্ত প্রয়োজন পূর্ণ করে দিব । -(তিরমিযী: ৪৭৫)


□□□ আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত আছে যে, রসূলুল্লাহ্ (সা:) বলেছেন, আল্লাহ্ তা'আলা বলেন: হে আদম সন্তান! তুমি আমার ইবাদাতের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা কর, আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যে ভরে দিব এবং তোমার অভাব দূর করে দিব। তুমি তা না করলে আমি তোমার দু'হাত কর্মব্যস্ততায় ভরে দিব এবং তোমার অভাব-অনটন দূর করবো না। -(তিরমিযী: ২৪৬৬)


□□□ আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন বান্দার থেকে সর্ব প্রথম সালাতের হিসাব নেয়া হবে। সালাত পুরোপুরি আদায় করে থাকলে তো ভাল কথা, অন্যথায় আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, দেখ, আমার বান্দার কোন নফল সালাত আছে কি না? নফল সালাত থাকলে বলবেন, এই নফল সালাত দ্বারা ফরয সালাত পূর্ণ করে দাও। -(সুনানে নাসাঈ: ৪৬৭)


□□□ আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন: বারাকাতময় আল্লাহ্ তা'আলা বলেন: আর তাঁর বাণী সম্পূর্ণ সত্য, আমার কোন বান্দা যখন কোন ভালো কাজের ইচ্ছা করে তখন তোমরা তার জন্য একটি নেকি লিখো। পক্ষান্তরে সে কোন মন্দ কাজের ইচ্ছা করলে তবে তোমরা কোন গুনাহ লিখো না, যদি সে তা বর্জন করে এবং কখনো বলেছেন কার্যকর না করে তার জন্য একটি নেকি লিখো। তারপর তিনি (সা:) এ আয়াত পাঠ করেন: "কেউ কোন সৎকাজ করলে সে তার দশগুণ পাবে এবং কেউ কোন মন্দ কাজ করলে তাকে শুধু এর প্রতিফল দেয়া হবে ।" -(সূরা আন'আম: ১৬০) [রাওযুন নাযির: ২/৭৪২]


□□□ উবাই ইবনু কা'ব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ্ তা'আলা সূরা ফাতিহার মতো তাওরাত অথবা ইঞ্জিলে কোন আয়াত নাযিল করেননি। তা সাত আয়াত, যা বারবার পাঠ করা হয়ে থাকে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেন এ আমার ও আমার বান্দার মধ্যে ভাগ করা। আর আমার বান্দার জন্য রয়েছে, সে যা চায়। -(তিরমিযী: ২৮৭৫)


□□□ আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, যখন আমার বান্দা আমার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করে, আমিও তার সাথে সাক্ষাৎ পছন্দ করি। আর যখন সে আমার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করে আমিও তার সাথে সাক্ষাৎ অপছন্দ করি।" -( ইবনু মাজাহ: ৪২৬৪)

Post a Comment