আলহামদুলিল্লাহ, ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মদ ﷺ।
উমর (রা) ইসলাম গ্রহণ করার পর ইসলামের শক্তি বেড়ে গিয়েছিল। তিনি রাসূল ﷺ কে খুবই ভালবাসতেন, রাসূল ﷺ এর আদেশ মান্য করতেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে হিশাম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একদা নবী ﷺ এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি তখন উমর ইবনুল খাত্তাব (রা) এর হাত ধরেছিলেন। উমর (রা) তখন তাকে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার প্রাণ ব্যতীত আপনি আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয়। তখন নবী ﷺ বললেনঃ না, ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! এমন কি তোমার কাছে তোমার প্রাণের চেয়েও আমাকে অধিক প্রিয় হতে হবে। তখন উমর (রা) তাকে বললেন, এখন আল্লাহর কসম! আপনি আমার কাছে আমার প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। নবী ﷺ বললেনঃ হে উমর! এখন (তোমার ঈমাণ পূর্ণ হয়েছে)। (সহীহ বুখারী)
এই হাদীসটি আরো ভালোভাবে বুঝার জন্যে নিম্নোক্ত হাদীসটি সহায়ক হবে, ইনশাল্লাহ।
আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেনঃ তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষের চেয়ে বেশী প্রিয় হই। (সহীহ বুখারী)
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, রাসূল ﷺ কে সবকিছু এমনকি নিজের জীবনের চেয়েও প্রিয় হওয়া বলতে কি বুঝায়? এর সহজ সরল উত্তর হচ্ছে, জীবনের সকল ক্ষেত্রে রাসূল ﷺ এর নির্দেশ মেনে চলা, তার সুন্নাত অনুসরণ করা। রাসূল ﷺ এর সুন্নাত অনুসরণ করতে যেয়ে যদি কষ্টে পতিত হতে হয়, মানুষের কটু কথা শুনতে হয়, এমনকি নিজের জীবনের সাথে সম্পৃক্ত প্রিয় কাজ সমূহও ত্যাগ করতে হয় তবুও করতে হবে। আর যদি তা আমরা করতে পারি তবেই আল্লাহ তাআলা আমাদের উপর সন্তুষ্ট হবেন, আমাদের অপরাধ সমূহ মাফ করে দিবেন।
“(হে নবী) তুমি বলো, তোমরা যদি আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসো, তাহলে আমার কথা মেনে চলো, (আমাকে ভালোবাসলে) আল্লাহ তাআলাও তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তিনি তোমাদের গুণাহখাতা মাফ করে দিবেন; আল্লাহ তাআলা অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়াবান”। (সূরা ইমরানঃ ৩১)
কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় যে, আমরা কি বলতে পেরেছি উমর (রা) এর মতো করে, যে আমরা রাসূল ﷺ কে আমাদের নিজেদের প্রাণের চেয়েও ভালোবাসি? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আজ আমরা এই ভালোবাসা অন্য কাউকে দিয়ে বসে আছি। কেউ এই ভালোবাসা দিয়েছে তার মনের মানুষকে, সে যেভাবে নাড়ায় সেভাবেই নড়ে! কেউ দিয়ে রেখেছে, প্রিয় কোন স্টার বা গায়ক বা লেখককে আর যার কারণে সেই স্টার যেভাবে চলে সেভাবে চলা চাই। কেউ এই ভালোবাসা দিয়ে রেখেছে কোন নেতার প্রতি, সেই নেতা যা বলে তাই করতে প্রস্তুত। কেউ এই ভালোবাসা দিয়ে রেখেছে কোন দলের প্রতি, সেই দল যেভাবে চলতে বলে সেইভাবে চলতে প্রস্তুত যদিও তা রাসূল ﷺ এর সুন্নাহ, নির্দেশের অমান্য করা হয়।
হে মুসলিম ভাই! রাসূল (সা) এর সুন্নাহ অনুসরণ করতেই যদি আমাদের কষ্ট হয়ে যায়, জান্নাতের শান্তি উপভোগ করবো কিভাবে ? আসুন সামাজিকতা আর আধুনিকতার ছলনাময়ী জীবন থেকে বেড় হয়ে সহজ-সরল ইসলামী জীবনব্যবস্থা গ্রহণ করি ।
Post a Comment