তায়াম্মুম কি, কেন ও কিভাবে ?

তায়াম্মুম:
তায়াম্মুমের নির্দেশ আল্লাহ্ তা'আলা নিজেই দিয়েছেন:

"যদি তোমরা অসুস্থ হও অথবা সফরে থাকো, কিংবা তোমাদের মধ্যে কেউ পায়খানা করে আসে অথবা তোমরা স্ত্রী সঙ্গম কর, অতঃপর পানি না পাও, তাহলে পাক মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও; তোমাদের মুখমন্ডল ও হাতকে মাটি দ্বারা মাসাহ কর....।" -(সূরা আল মায়িদাহ: ৬)

নাবী (সা:) বলেন: "সকল মানুষের (উম্মতের) উপর আমাদেরকে ৩টি বিষয়ের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে; আমাদের কাতারকে করা হয়েছে ফিরিশতাবর্গের কাতারের মত, সারা পৃথিবীকে আমাদের জন্য মসজিদ করে দেওয়া হয়েছে এবং পানি না পাওয়া গেলে মাটিকে আমাদের জন্য পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ করা হয়েছে।" (মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ: ৫২৬)


যেসকল অবস্থায় তায়াম্মুম বৈধ:
১. একেবারেই পানি না পাওয়া গেলে অথবা পান করার মত থাকলে এবং ওযু-গোসলের জন্য যথেষ্ট পানি না পাওয়া গেলে।

২. অসুস্থ থাকলে অথবা দেহে কোন প্রকার ক্ষত বা ঘা থাকলে এবং পানি ব্যবহারে তা বেড়ে যাওয়া বা সুস্থ হতে বিলম্ব হওয়ার আশঙ্কা হলে।

৩. পানি অতিরিক্ত ঠান্ডা হলে এবং তাতে ওযু-গোসল করাতে অসুখ হবে বলে দৃঢ় আশঙ্কা হলে, পরন্ত পানি গরম করার সুযোগ বা ব্যবস্থা না থাকলে তায়াম্মুম বৈধ।

৪. পানি নিকটবর্তী কোন জায়গায় থাকলেও তা আনতে জান, মাল বা ইজ্জতহানীর আশঙ্কা হলে তায়াম্মুম বৈধ।


কিসে তায়াম্মুম হবে:
পবিত্র মাটি এবং তার শ্রেণীভুক্ত সকল বস্তু (যেমন, পাথর, বালি, কাঁকর, সিমেন্ট প্রভৃতি) দ্বারা তায়াম্মুম শুদ্ধ। ধুলাযুক্ত মাটি না পাওয়া গেলে পাথর বা বালিতে তায়াম্মুম বৈধ হবে।

তায়াম্মুম করার পদ্ধতি:
(নিয়ত করার পর 'বিসমিল্লাহ' বলে) দুই হাতের চেটো মাটির উপর মারতে হবে। তারপর তুল নিয়ে তার উপর ফুঁক দিয়ে অতিরিক্ত ধুলোবালি উড়িয়ে দিয়ে উভয় হাত দ্বারা মুখমন্ডল মাসাহ করতে হবে। এরপর বাম হাত দ্বারা ডান হাত কব্জি পর্যন্ত এবং শেষে ডান হাত দ্বারা বাম হাত কব্জি পর্যন্ত মাসাহ করতে হবে।


তায়াম্মুম নষ্ট হওয়ার কারণ:
যে যে কারণে ওযু নষ্ট হয়, ঠিক সেই সেই কারণে তায়াম্মুমও নষ্ট হয়ে যায়। কারণ তায়াম্মুম হল ওযুর বিকল্প। এ ছাড়া যে অসুবিধার কারণে তায়াম্মুম করা হয়েছিল, সেই অসুবিধা দূর হয়ে গেলেই তায়াম্মুম নষ্ট হয়ে যায়।


বই: স্বালাতে মুবাশশির
লেখক: আব্দুল হামিদ ফাইযী

Post a Comment

Previous Post Next Post