মানবতা, শালীনতা, সামাজিকতা ও ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল মান-মর্যাদা ও অধিকার একমাত্র ইসলামের মধ্যেই নিহিত।
আপনি দৈনন্দিন জীবনের কোন দিকে তাকাবেন, আপনার নজর ফিরিয়ে আসতে বাধ্য। কারণ সকল ক্ষেত্রেই ইসলামের সম্পূর্ণ বিধান নিহিত। সবকিছুতেই রয়েছে ইসলামের সফলতা ।
যদি আপনি নিজের দিকে তাকান, ইসলামের বিধিবিধান সমূহ যদি আপনি মেনে চলেন তাহলে আপনার দ্বারা কেউ কষ্ট পাবেনা। শুধু কী তাই? বরং আপনি হবেন সকলের নয়ণের মণি। আল্লাহ তা'আলা সবার অন্তরে আপনার জন্য মহব্বত সৃষ্টি করে দেবেন। ইসলামের শিক্ষা যদি আপনার মধ্যে থাকে তাহলে আপনি কোন মুসলিম ভাইকে দেখামাত্র সালাম দিবেন এবং তার যথাযথ প্রাপ্য সম্মান দিবেন। অন্যথায় আপনি তাদের সাথে যেকোন অন্যায় আচরণ করতে কুণ্ঠিত হবেন না ।
এভাবে আপনার মধ্যে যখন ইসলামের জ্ঞান থাকবে, তখন আপনার দ্বারা একটা তরুলতা, এমনকি একটা পিপিলিকাও বেহুদা কষ্ট পাবেনা। কেননা আপনার জানা আছে, যমীনবাসীর উপর দয়া করার কথা। তখন আপনার দ্বারা জেনেবুঝে একটা গাছের পাতা ছিঁড়াও সম্ভব হবে না, এমনকি আপনি প্রতিটা কদমই খুব হিসাব করে ফালাবেন । তখন আপনার বিবেক আপনাকে নাড়া দিবে যে, আমার কারণে যেন একটা প্রাণীও কষ্ট না পায়।
এভাবে আপনার মধ্যে যখন ইসলামের জ্ঞান থাকবে, তখন আপনার পক্ষে অন্যকারোর আমানত বা গচ্ছিত সম্পদ আত্মসাৎ করা কখনও সম্ভব হবেনা। কারণ আপনার জানা আছে, যার আমানতদারী নেই তার দ্বীন নেই।
এভাবে আপনার কাছে যখন ইসলামের জ্ঞান থাকবে তখন আপনি অন্যকারো ভূমি এক ইঞ্চিও জোর করে দখল করবেন না। কারণ আপনার জানা আছে এই জমি কাল কিয়ামতের ময়দানে সাতগুণ বৃদ্ধি করে আপনার মাথায় চাপিয়ে দেওয়া হবে ।
ধরুন, আপনি একজন ব্যবসায়ী, এখন যদি আপনার কাছে ইসলামের জ্ঞান থাকে তাহলে আপনার দ্বারা অন্যকে ঠকানো কখনোই সম্ভব হবে না । যেমন, আপনার দ্বারা তখন মজুদদারি করা সম্ভব হবেনা, আপনি তখন কাউকে ওজনে কম দিবেন না। কেননা আপনার দ্বীন ইসলামই আপনাকে ওজনে কম দিতে নিষেধ করেছে।
ইসলামের জ্ঞান যদি আপনার থাকে তখন আপনার দ্বারা আপনার অধীনস্থরা কখনও কষ্ট পাবেনা । আপনি তখন অধীনস্থদের ব্যাপারে খুব হুশিয়ার থাকিবেন। কেননা, আপনার জানা আছে যে, শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই এর পারিশ্রমিক দিতে হবে। এভাবেই যখন আপনার সামনে ধর্মীয় জ্ঞান উপস্থিত হবে, তখন আপনি আপনার সকল কর্মে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন খুব সহজেই এবং নিজের মধ্যে আল্লাহভীরুতা প্রকাশ পাবে । এছাড়া আপনি সবসময়ই পরকালীন মুক্তির আশা ও চেষ্টা করবেন এবং মানুষের প্রতি বিনয়ী হবেন । আনাস (রা:) এর ঘটনাটি প্রায় সকলেই জানি। তিনি ১০ বছর রসূল (সা:) এর খেদমতে ছিলেন, কিন্তু কখনও তার প্রতি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বেজার মুখ দেখেননি এবং কখনো কটু কথা শুনেননি। এই হলো ইসলামের আদর্শ ।
এভাবে ইসলামি রাষ্ট্র যদি কায়েম হয়, তাহলে শুধু যে মুসলিমরাই শান্তিতে থাকবে তা কিন্তু নয়, বরং বিধর্মীরাও শান্তিতে থাকবে। ,কেননা জোর-জবরদস্তি ইসলামের মধ্যে নেই। এদের প্রতি জুলুম হলে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিয়ামতের দিন ঐ মুসলিম শাসকের বিপক্ষে চলে যাবেন। আর তখন দেশের মধ্যে থাকবেনা কোন অশান্তি, থাকবেনা কোন চুরি-ডাকাতি এবং থাকবেনা কোন বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ।
ইসলামের শাসন কায়েম হলে মা'জাতি তাদের যথাযত সম্মান ফিরে পাবে। যেমনটি পেয়েছিলো ১৪০০ বছর পূর্বে । তৎকালীন সময়ে যখন মেয়েদের জীবন্ত পুতে কবর দেওয়া হতো, তখনই ইসলাম এসে বললো না! এমনটি আর হবে না! যে ব্যক্তি মেয়ের পিতা হলো, সে যদি ঐ মেয়েকে পরিচর্যা করে স্বামীর হাতে তুলে দেয়, তাহলে ঐ পিতা জান্নাতী । আজও যদি সেই ইসলামী চিন্তাধারা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়, কেউ আমাদের মা'জাতিদের নিয়ে মজা করার সুযোগ পাবেনা, বাজে কথা বলার সাহস পাবেনা। ধর্ষণতো অনেক দূরের কথা, সামান্য আড়িচোখে তাকানোরও সাহস পাবেনা।
তাহলে আপনিই বলুন, এত সুন্দর ইসলাম পেয়েও যদি আমি এর সঠিক মূল্যায়ন না করি এবং একে ভালো না বাসি, তাহলে আমি কি বোকা নই ?
না! জেনেশুনে আমি বোকা হতে রাজি নই । আমি ইসলামকে ছাড়তে রাজি নই । আমি আমার ইসলামকে ভালোবাসতে চাই এবং এই ভালোবাসায় পৃথিবীর কাউকেই অংশীদার করতে চাইনা । কারণ এ ভালোবাসা কেবল আমার পালনকর্তা আল্লাহ্ সুবহানওয়া তা'আলার জন্যই বরাদ্দ ।
লিখেছেন: নাঈমুল ইসলাম (FGC)
মাশাল্লাহ সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ।
ReplyDeleteখুব সুন্দর করে লিখেছেন ভালো লাগলো।
Post a Comment