খারেজী:
আরবিতে খারেজী মানে যে বের হয়ে গেছে। এক হাদিসে রাসুল সঃ বলেছেনঃ
“পরবর্তি জামান এমন ধরনের লোক বের হবে যারা ইসলাম থাকে বের হয়ে যাবে যেমন তীর ধনুক থেকে বের হয়ে যায়।’’ (তিরমিজি-হাসান সহীহ, আবুদাউদ-সহীহ।)
তাদের আরেক বিশেষ স্বভাব হল তারা সকল খলিফা রাশেদীন এর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে বের হয়েছে। অস্ত্রের মাথায় কুরআন বেঁধে যুদ্ধ করেছে। এই দুইটি বিশেষ কারণেই তাদেরকে খারেজী বলা হয়। তাদের উল্লেখ যোগ্য আরো স্বভাব গুলির মধ্যে অন্যতম হল, আল্লাহ্ ছাড়া কেউ শাসন করতে পারেনা বলে সর্বদা শ্লোগান দিয়েছে। উসমান রাঃ কে কতল করার সময় বলেছে: "যদি আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জন উদ্দেশ্য না হতো তাহলে তোমাকে হত্যা করতাম নাহ।" তাদের সকল কাজকে তারা আল্লাহ্ ভক্তির চরম নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরেছে।
খারেজী কোন দলের নাম নয়। এটা একটি গুণবাচক নাম। যে খারেজী সে শুধু শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তা নয় বরং তার আরো অনেক আকীদা বিশ্বাস ও আমলের দিক রয়েছে যা ইসলাম অনুমোদন করেনা। যদিও সে নিজেকে একনিষ্ঠ আল্লাহ্র গোলাম মনে করে।
খারেজীরা হল চরমপন্থী। সে নিজে যা বুঝে, তা সকলের উর্ধে বলে বিশ্বাস করে। সে মনে করে তার মত সৎ ও আল্লাহ্ ভীরু আর কেউ নয়। সে তুচ্ছ গোনাহ করাকে কুফুরি কাজ বলে মনে করে। সামান্য গোনাহ কারীকেও কাফের বলে মনে করে। এবং তার জান মাল লুণ্ঠন করা জায়েজ মনে করে।
খারেজীরা রাসুলের কাজে ভুল ধরেছে। যেমন করেছিল আবুল খোয়াইসারা। সাহাবাদের কাজে ভুল ধরেছে যেমন করেছে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা নামের খারেজী যে পরে “শিয়া” মতবাদ প্রচার করে।
খুলাফায়ে রাশেদীনের কাজে ভুল ধরেছে যেমন করেছে ওরওয়াহ ইবনে আজনাবাহ। তাদের মতানুযায়ী যারা শুদ্ধ হয়নি তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে। জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করেছে। তাদেরকে খুন করেছে। তারাই খোলাফায়ে রাশেদীনের মত খলিফাদেরকে হত্যা করেছে। হাজার হাজার সাহাবীকে কারবালা, নাহরাওয়ান্দ, জামাল ও সীফফিনের ময়দানে হত্যা করে উল্লাস করেছে। আর রাত্রিতে তাবুতে গিয়ে রাতভর কোরআন তেলাওয়াত করে চোখের জলে বুক ভাসিয়েছে। তাহাজ্জুদ নামাযে দাঁড়িয়ে থেকে পা ফুলিয়েছে।
শুধু মতবিরোধের কারণেই তাদেরকে খারেজী বলা হয় নাই। বরং “হিবরুল উম্মাহ” ইবনু আব্বাস রাঃ, “গোলামুন মোয়াল্লাম” ইবনু মাসউদ রাঃ এর মত ফকীহ গনের মতামতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেরা যা বুঝেছে সে মতে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। রাসুল সঃ তাদের প্রসঙ্গে বলেছেন,
“তারা কোরআন পড়বে কিন্তু কোরআন তাদের গ্রীবার নীচে প্রবেশ করবেনা (অর্থ বুঝবেনা)।. তাদের নামাজ দেখলে কেউ নিজের নামাজকে তুচ্ছ মনে করবে। তাদের কোরআন পড়া দেখলে নিজের কোরআন তালাওয়াতকে তুচ্ছ মনে করবে, মনে হবে যেন কোরআন তাদেরি উপর নাজেল হয়েছে।’’ (আবু দাউদ- সহীহ/৪৭৬৫।)
এমন চরিত্রের হয়েও তাদেরকে রাসুল সাঃ “কিলাবু আহলিন-নার’’ জাহান্নামের কুকুর বলেছেন। (ইবনু মাজা, সহীহ/১৭৩।)
এবং বলেছেন, “যদি আমি খারেজীদের সময় বেঁচে থাকতাম তাহলে তাদেরকে আদ জাতীর মত করে হত্যা করতাম।”
উপরের সব গুলো স্বভাব ও চরিত্র কারো মধ্যে না পাওয়া গেলে তাঁকে সরাসরি খারেজী বলা ঠিক হবেনা বরং তার কোন এক স্বভাব বা চরিত্রকে খারেজী চরিত্র বলা যেতে পারে। শুধু কেউ কারো সমালোচনা করলেই খারেজী হয়ে যায় এমনটি মনে করা ঠিক নয়। তবে খারেজীদের মত নরম ও গরম স্বভাবের আল্লাহ্ ওয়ালা বর্তমানে অসংখ্যক তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তাই বলে কাউকে সরাসরি খারেজী বলা উচিৎ নয়।
Written by:
Shaikh Muzammel Al-hoque
________________________
বুখারী, মুসলিম আরো হাদীসের কিতাবে খারেজীদের আরো কিছু গুণ বর্ণনা করা হয়েছে।
খারেজীদের প্রধান কয়েকটি বৈশিষ্ট্যঃ
১. তাদের বয়স কম হবে।
২. জ্ঞানের দিক থেকে মিসকীন হবে।
৩. সুন্দর সুন্দর কথা বলবে।
৪. আলেমদের সাথে সবচাইতে বেশি শত্রুতা পোষণকারী হবে।
৫. মুসলিমদেরকে পাইকারি হারে কাফির বলে ঘোষণা করবে।
৬. শরিয়াহ কায়েম করার নামে অন্যায় যুদ্ধ ও রক্তপাত করবে।
৭. দাঁড়ি শেইভ করবে।
আরবিতে খারেজী মানে যে বের হয়ে গেছে। এক হাদিসে রাসুল সঃ বলেছেনঃ
“পরবর্তি জামান এমন ধরনের লোক বের হবে যারা ইসলাম থাকে বের হয়ে যাবে যেমন তীর ধনুক থেকে বের হয়ে যায়।’’ (তিরমিজি-হাসান সহীহ, আবুদাউদ-সহীহ।)
তাদের আরেক বিশেষ স্বভাব হল তারা সকল খলিফা রাশেদীন এর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে বের হয়েছে। অস্ত্রের মাথায় কুরআন বেঁধে যুদ্ধ করেছে। এই দুইটি বিশেষ কারণেই তাদেরকে খারেজী বলা হয়। তাদের উল্লেখ যোগ্য আরো স্বভাব গুলির মধ্যে অন্যতম হল, আল্লাহ্ ছাড়া কেউ শাসন করতে পারেনা বলে সর্বদা শ্লোগান দিয়েছে। উসমান রাঃ কে কতল করার সময় বলেছে: "যদি আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জন উদ্দেশ্য না হতো তাহলে তোমাকে হত্যা করতাম নাহ।" তাদের সকল কাজকে তারা আল্লাহ্ ভক্তির চরম নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরেছে।
খারেজী কোন দলের নাম নয়। এটা একটি গুণবাচক নাম। যে খারেজী সে শুধু শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তা নয় বরং তার আরো অনেক আকীদা বিশ্বাস ও আমলের দিক রয়েছে যা ইসলাম অনুমোদন করেনা। যদিও সে নিজেকে একনিষ্ঠ আল্লাহ্র গোলাম মনে করে।
খারেজীরা হল চরমপন্থী। সে নিজে যা বুঝে, তা সকলের উর্ধে বলে বিশ্বাস করে। সে মনে করে তার মত সৎ ও আল্লাহ্ ভীরু আর কেউ নয়। সে তুচ্ছ গোনাহ করাকে কুফুরি কাজ বলে মনে করে। সামান্য গোনাহ কারীকেও কাফের বলে মনে করে। এবং তার জান মাল লুণ্ঠন করা জায়েজ মনে করে।
খারেজীরা রাসুলের কাজে ভুল ধরেছে। যেমন করেছিল আবুল খোয়াইসারা। সাহাবাদের কাজে ভুল ধরেছে যেমন করেছে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা নামের খারেজী যে পরে “শিয়া” মতবাদ প্রচার করে।
খুলাফায়ে রাশেদীনের কাজে ভুল ধরেছে যেমন করেছে ওরওয়াহ ইবনে আজনাবাহ। তাদের মতানুযায়ী যারা শুদ্ধ হয়নি তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে। জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করেছে। তাদেরকে খুন করেছে। তারাই খোলাফায়ে রাশেদীনের মত খলিফাদেরকে হত্যা করেছে। হাজার হাজার সাহাবীকে কারবালা, নাহরাওয়ান্দ, জামাল ও সীফফিনের ময়দানে হত্যা করে উল্লাস করেছে। আর রাত্রিতে তাবুতে গিয়ে রাতভর কোরআন তেলাওয়াত করে চোখের জলে বুক ভাসিয়েছে। তাহাজ্জুদ নামাযে দাঁড়িয়ে থেকে পা ফুলিয়েছে।
শুধু মতবিরোধের কারণেই তাদেরকে খারেজী বলা হয় নাই। বরং “হিবরুল উম্মাহ” ইবনু আব্বাস রাঃ, “গোলামুন মোয়াল্লাম” ইবনু মাসউদ রাঃ এর মত ফকীহ গনের মতামতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেরা যা বুঝেছে সে মতে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। রাসুল সঃ তাদের প্রসঙ্গে বলেছেন,
“তারা কোরআন পড়বে কিন্তু কোরআন তাদের গ্রীবার নীচে প্রবেশ করবেনা (অর্থ বুঝবেনা)।. তাদের নামাজ দেখলে কেউ নিজের নামাজকে তুচ্ছ মনে করবে। তাদের কোরআন পড়া দেখলে নিজের কোরআন তালাওয়াতকে তুচ্ছ মনে করবে, মনে হবে যেন কোরআন তাদেরি উপর নাজেল হয়েছে।’’ (আবু দাউদ- সহীহ/৪৭৬৫।)
এমন চরিত্রের হয়েও তাদেরকে রাসুল সাঃ “কিলাবু আহলিন-নার’’ জাহান্নামের কুকুর বলেছেন। (ইবনু মাজা, সহীহ/১৭৩।)
এবং বলেছেন, “যদি আমি খারেজীদের সময় বেঁচে থাকতাম তাহলে তাদেরকে আদ জাতীর মত করে হত্যা করতাম।”
উপরের সব গুলো স্বভাব ও চরিত্র কারো মধ্যে না পাওয়া গেলে তাঁকে সরাসরি খারেজী বলা ঠিক হবেনা বরং তার কোন এক স্বভাব বা চরিত্রকে খারেজী চরিত্র বলা যেতে পারে। শুধু কেউ কারো সমালোচনা করলেই খারেজী হয়ে যায় এমনটি মনে করা ঠিক নয়। তবে খারেজীদের মত নরম ও গরম স্বভাবের আল্লাহ্ ওয়ালা বর্তমানে অসংখ্যক তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তাই বলে কাউকে সরাসরি খারেজী বলা উচিৎ নয়।
Written by:
Shaikh Muzammel Al-hoque
________________________
বুখারী, মুসলিম আরো হাদীসের কিতাবে খারেজীদের আরো কিছু গুণ বর্ণনা করা হয়েছে।
খারেজীদের প্রধান কয়েকটি বৈশিষ্ট্যঃ
১. তাদের বয়স কম হবে।
২. জ্ঞানের দিক থেকে মিসকীন হবে।
৩. সুন্দর সুন্দর কথা বলবে।
৪. আলেমদের সাথে সবচাইতে বেশি শত্রুতা পোষণকারী হবে।
৫. মুসলিমদেরকে পাইকারি হারে কাফির বলে ঘোষণা করবে।
৬. শরিয়াহ কায়েম করার নামে অন্যায় যুদ্ধ ও রক্তপাত করবে।
৭. দাঁড়ি শেইভ করবে।
Post a Comment