প্রশ্নঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সিজদাতে বেশি বেশি দুয়া করতে বলেছেন। আমি আরবী জানিনা, আমি কি নামাযের মধ্যে সিজদায় নিজের মাতৃভাষায় (বাংলা/ইংরেজী) দুয়া করতে পারবো?
উত্তরঃ বিষয়টি নিয়ে আলেমদের মধ্যে মত পার্থক্য হয়েছে, তবে যেটা বেশি সঠিক তা হলোঃ হ্যা, কেউ যদি আরবী না জানে তাহলে সে দুনিয়া বা আখেরাতের যেকোনো কল্যানের জন্য সিজদাতে নিজের ভাষায় দুয়া করতে পারবে।
এই ক্ষেত্রে দুটি শর্ত রয়েছে –
১. যে যিকির ও দুয়াগুলো করা ফরয সেগুলো আরবীতেই করতে হবে যেমন “সুবহা’না রাব্বিয়াল আ’লা” –এই যিকির আরবীতেই করতে হবে।
২. যেই দুয়া করবেন সেটা আপনি আরবীতে জানেন না। যেমন কেউ আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন আর তিনি জানেন আস্তাগফিরুল্লাহ (হে আল্লাহ তুমি আমাকে ক্ষমা করো), তাহলে সেই দুয়া তাকে আরবীতেই করতে হবে। কিন্তু তিনি যদি ঋণ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া করতে চান কিন্তু তিনি জানেন না আরবীতে এই কথা কিভাবে বলতে হবে, তাহলে তিনি বাংলায় এইভাবে বলতে পারবেন, ‘হে আল্লাহ তুমি আমাকে ঋণ থেকে মুক্ত করো’।
এই ব্যাপারে আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।
প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শায়খ আসিম আল-হাকিম।
বিঃদ্রঃ সিজদা হলো দুয়া কবুলের সবচেয়ে উত্তম সময়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “বান্দা যখন সিজদা করে সে তখন তার রব্বের সবচেয়ে নিকটে পৌঁছে যায়। অতএব তোমরা ঐ সময় বেশি বেশি দুয়া করো”
অন্য হাদীসে এসেছে, “তোমরা সিজদাতে দুয়া করতে চেষ্টা করো, আশা করা যায় তোমাদের দুয়া কবুল করা হবে।”
মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯৪।
সিজদাতে দুয়া করার নিয়মঃ
অনেকের মনে প্রশ্ন আছে বা বিষয়টা ভুল বুঝেছেন। তাই বিস্তারিত বলা হলো। কারো অন্য প্রশ্ন থাকলে দয়া করে কমেন্টে জানাবেন।
প্রশ্নঃ আমি কোন সিজাদাতে দুয়া করবো, নামাযের মধ্যে সিজদাতে নাকি আলাদা সিজদা করতে হবে দুয়া করার জন্য?
উত্তরঃ যে কোনো নামাযের মধ্যে সিজদাতে দুয়া করা যাবে। দুয়া করার জন্য নামায ব্যতীত শুধু সিজদা করা জায়েজ নয়। শুধুমাত্র তেলাওয়াতের সিজদাহ ও শুকরিয়ার সিজদাহ ছাড়া, নামায ব্যতীত অন্য কোন সিজদাহ করা বৈধ নয়।
প্রশ্নঃ ফরয নামাযে দুয়া করতে পারবো নাকি সুন্নত/নফল নামাযের সিজদাতে দুয়া করতে হবে?
উত্তরঃ যে কোনো নামাযের সিজদাতে দুয়া করা যাবে, চাই সেটা ফরয হোক আর নফল সুন্নত হোক, কারণ, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমভাবে সিজদাতে দুয়া করতে বলেছেন, তিনি শুধুমাত্র নফল সুন্নতে করার জন্য আর ফরয নামাযে না করার জন্য – এইরকম ভাগ করে দিয়ে যান নি। তাই, এই কথা বলার কারো অধিকার নাই, ফরয নামাযে করা যাবেনা। যে এইরকম করবে সে কোনো দলীল ছাড়াই শরীয়ত বানানোর দায়ে অভিযুক্ত হবে।
(শায়খ আব্দুল আজীজ বিন বাজ এই ফতোয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন)
প্রশ্নঃ কিভাবে দুয়া করতে হবে?
আপনি স্বাভাবিকভাবে নামায পড়বেন, সিজদাতে যাবেন, সিজদার তাসবীহগুলো যেমন “সুবহা’না রাব্বিইয়াল আ’লা” ৩/৫/৭ বার অবশ্যই আরবীতে পড়বেন। সিজদার তাসবীহ পড়া হলে আপনি দুয়া করবেন। আরবী জানলে আরবীতে, না জানলে নিজের ভাষাতে।
প্রশ্নঃ নামাযে দুনিয়াবী কোনো কল্যান প্রার্থনা করা যাবে?
উত্তরঃ হ্যা, যাবে যদি না সেটা হারাম কোনো কিছু হয়ে থাকে। আমাদের দেশের অনেক হুজুর বলে নামাযে দুনিয়ার কোনো কিছু চাইলে নামায ভেঙ্গে যাবে, এই কথার কোনো দলীল নেই, কোনো দলীল নেই। এটা একটা মনগড়া ফতোয়া। স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নামাযের মধ্যে দুনিয়ার কল্যান চেয়েছেন, যেমন ২ সিজদার মাঝখানে তিনি বলতেন “হে আল্লাহ তুমি আমাকে রিযক দান করো” – রিযক দুনিয়া না আখেরাতের বিষয় আশা করি সকলেই জানেন।
আর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, দুয়া করতে তিনি দুনিয়ার কোনো কিছু চাইতে না করেন নি। সুতরাং এর পরে কারো ক্ষমতা নেই, না করার।
প্রশ্নঃ ফরয নামাযের জামাতে দুয়া করা যাবে?
উত্তরঃ হ্যা যাবে, যদি সিজদার তাসবীহ পড়ার পরে ইমাম সাহবে যথেষ্ঠ সময় দেন তাহলে করা যাবে। আর যদি সময় কম থাকে তাহলে আগে সিজদার তাসবীহ পড়তে হবে ।
প্রশ্ন: সিজদায় কি কুরআনী দু’আ করা যায়?
উত্তর:সিজদায় কুরআনের আয়াত পড়া নিষেধ। কিন্তু মুনাজাতের দু’আ হিসেবে পড়লে তাতে দোষ নেই। (২১৭) ‘আমাকে সিজদায় কুরআন পড়তে নিষেধ করা হয়েছে’ যেমনি আম, তেমনি ‘তোমরা সিজদায় বেশি বেশি দু’আ কর’ নির্দেশও আম। তাতে কুরআনী ও হাদিসী সব রকম দু’আই করা যাবে। যারকাশী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “সিজদায় কুরআন পড়া মাকরূহ তখন, যখন কিরাআতের উদ্দেশ্যে তা পড়া হবে। পক্ষান্তরে তা যদি দু’আ অথবা (আল্লাহ্র) প্রশংসা হিসেবে পড়া হয়, তাহলে তা কুরআনী আয়াত দিয়ে কুনূত পড়ার মত হওয়া উচিৎ।”(২১৮)
- ২১৭: (ইবনে ঊষাইমীন), ২১৮: (হাশিয়াতু ইবনিল আবেদীন ১/৪৪০, হাশিয়াতুদ দুসূক্বী আলাশ শারহিল কাবীর ১/২৫৩, মাজমূ ৩/৪১৪)
উত্তরঃ বিষয়টি নিয়ে আলেমদের মধ্যে মত পার্থক্য হয়েছে, তবে যেটা বেশি সঠিক তা হলোঃ হ্যা, কেউ যদি আরবী না জানে তাহলে সে দুনিয়া বা আখেরাতের যেকোনো কল্যানের জন্য সিজদাতে নিজের ভাষায় দুয়া করতে পারবে।
এই ক্ষেত্রে দুটি শর্ত রয়েছে –
১. যে যিকির ও দুয়াগুলো করা ফরয সেগুলো আরবীতেই করতে হবে যেমন “সুবহা’না রাব্বিয়াল আ’লা” –এই যিকির আরবীতেই করতে হবে।
২. যেই দুয়া করবেন সেটা আপনি আরবীতে জানেন না। যেমন কেউ আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন আর তিনি জানেন আস্তাগফিরুল্লাহ (হে আল্লাহ তুমি আমাকে ক্ষমা করো), তাহলে সেই দুয়া তাকে আরবীতেই করতে হবে। কিন্তু তিনি যদি ঋণ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া করতে চান কিন্তু তিনি জানেন না আরবীতে এই কথা কিভাবে বলতে হবে, তাহলে তিনি বাংলায় এইভাবে বলতে পারবেন, ‘হে আল্লাহ তুমি আমাকে ঋণ থেকে মুক্ত করো’।
এই ব্যাপারে আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।
প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শায়খ আসিম আল-হাকিম।
বিঃদ্রঃ সিজদা হলো দুয়া কবুলের সবচেয়ে উত্তম সময়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “বান্দা যখন সিজদা করে সে তখন তার রব্বের সবচেয়ে নিকটে পৌঁছে যায়। অতএব তোমরা ঐ সময় বেশি বেশি দুয়া করো”
অন্য হাদীসে এসেছে, “তোমরা সিজদাতে দুয়া করতে চেষ্টা করো, আশা করা যায় তোমাদের দুয়া কবুল করা হবে।”
মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯৪।
সিজদাতে দুয়া করার নিয়মঃ
অনেকের মনে প্রশ্ন আছে বা বিষয়টা ভুল বুঝেছেন। তাই বিস্তারিত বলা হলো। কারো অন্য প্রশ্ন থাকলে দয়া করে কমেন্টে জানাবেন।
প্রশ্নঃ আমি কোন সিজাদাতে দুয়া করবো, নামাযের মধ্যে সিজদাতে নাকি আলাদা সিজদা করতে হবে দুয়া করার জন্য?
উত্তরঃ যে কোনো নামাযের মধ্যে সিজদাতে দুয়া করা যাবে। দুয়া করার জন্য নামায ব্যতীত শুধু সিজদা করা জায়েজ নয়। শুধুমাত্র তেলাওয়াতের সিজদাহ ও শুকরিয়ার সিজদাহ ছাড়া, নামায ব্যতীত অন্য কোন সিজদাহ করা বৈধ নয়।
প্রশ্নঃ ফরয নামাযে দুয়া করতে পারবো নাকি সুন্নত/নফল নামাযের সিজদাতে দুয়া করতে হবে?
উত্তরঃ যে কোনো নামাযের সিজদাতে দুয়া করা যাবে, চাই সেটা ফরয হোক আর নফল সুন্নত হোক, কারণ, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমভাবে সিজদাতে দুয়া করতে বলেছেন, তিনি শুধুমাত্র নফল সুন্নতে করার জন্য আর ফরয নামাযে না করার জন্য – এইরকম ভাগ করে দিয়ে যান নি। তাই, এই কথা বলার কারো অধিকার নাই, ফরয নামাযে করা যাবেনা। যে এইরকম করবে সে কোনো দলীল ছাড়াই শরীয়ত বানানোর দায়ে অভিযুক্ত হবে।
(শায়খ আব্দুল আজীজ বিন বাজ এই ফতোয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন)
প্রশ্নঃ কিভাবে দুয়া করতে হবে?
আপনি স্বাভাবিকভাবে নামায পড়বেন, সিজদাতে যাবেন, সিজদার তাসবীহগুলো যেমন “সুবহা’না রাব্বিইয়াল আ’লা” ৩/৫/৭ বার অবশ্যই আরবীতে পড়বেন। সিজদার তাসবীহ পড়া হলে আপনি দুয়া করবেন। আরবী জানলে আরবীতে, না জানলে নিজের ভাষাতে।
প্রশ্নঃ নামাযে দুনিয়াবী কোনো কল্যান প্রার্থনা করা যাবে?
উত্তরঃ হ্যা, যাবে যদি না সেটা হারাম কোনো কিছু হয়ে থাকে। আমাদের দেশের অনেক হুজুর বলে নামাযে দুনিয়ার কোনো কিছু চাইলে নামায ভেঙ্গে যাবে, এই কথার কোনো দলীল নেই, কোনো দলীল নেই। এটা একটা মনগড়া ফতোয়া। স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নামাযের মধ্যে দুনিয়ার কল্যান চেয়েছেন, যেমন ২ সিজদার মাঝখানে তিনি বলতেন “হে আল্লাহ তুমি আমাকে রিযক দান করো” – রিযক দুনিয়া না আখেরাতের বিষয় আশা করি সকলেই জানেন।
আর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, দুয়া করতে তিনি দুনিয়ার কোনো কিছু চাইতে না করেন নি। সুতরাং এর পরে কারো ক্ষমতা নেই, না করার।
প্রশ্নঃ ফরয নামাযের জামাতে দুয়া করা যাবে?
উত্তরঃ হ্যা যাবে, যদি সিজদার তাসবীহ পড়ার পরে ইমাম সাহবে যথেষ্ঠ সময় দেন তাহলে করা যাবে। আর যদি সময় কম থাকে তাহলে আগে সিজদার তাসবীহ পড়তে হবে ।
প্রশ্ন: সিজদায় কি কুরআনী দু’আ করা যায়?
উত্তর:সিজদায় কুরআনের আয়াত পড়া নিষেধ। কিন্তু মুনাজাতের দু’আ হিসেবে পড়লে তাতে দোষ নেই। (২১৭) ‘আমাকে সিজদায় কুরআন পড়তে নিষেধ করা হয়েছে’ যেমনি আম, তেমনি ‘তোমরা সিজদায় বেশি বেশি দু’আ কর’ নির্দেশও আম। তাতে কুরআনী ও হাদিসী সব রকম দু’আই করা যাবে। যারকাশী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “সিজদায় কুরআন পড়া মাকরূহ তখন, যখন কিরাআতের উদ্দেশ্যে তা পড়া হবে। পক্ষান্তরে তা যদি দু’আ অথবা (আল্লাহ্র) প্রশংসা হিসেবে পড়া হয়, তাহলে তা কুরআনী আয়াত দিয়ে কুনূত পড়ার মত হওয়া উচিৎ।”(২১৮)
- ২১৭: (ইবনে ঊষাইমীন), ২১৮: (হাশিয়াতু ইবনিল আবেদীন ১/৪৪০, হাশিয়াতুদ দুসূক্বী আলাশ শারহিল কাবীর ১/২৫৩, মাজমূ ৩/৪১৪)
جزاكم الله خيرا
ReplyDeletePost a Comment