কোয়ান্টাম মেথড ও প্রতারণা

আচ্ছা, আপনি কি “কোয়ান্টাম” শব্দটি শুনেছেন? যদি শুনে থাকেন তবে নিশ্চয়ই ভাবছেন যে আমি এখনই “কোয়ান্টাম মেকানিক্সের” কথা বলব। আসলে ব্যাপারটি তা নয়। শিরোনামে কোয়ান্টাম শব্দটি থাকলেও আমার এই লেখার বিষয়বস্তু কিন্তু “কোয়ান্টাম মেকানিক্স” নয় বরং “কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন”। যারা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের নাম শুনেছেন তাদেরকে তো আর এটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। আর যারা এর নাম শোনেননি বা এই ফাউন্ডেশন সম্পর্কে যাদের কোন ধারণা নেই- তাদের ঘাবড়ানোর কিছু নেই, এই লেখাটি পড়তে থাকুন – আশাকরি জানতে পারবেন। মনে প্রশ্ন আসাই স্বাভাবিক যে এই ফাউন্ডেশন নিয়ে এত বড় লেখা লিখার কী দরকার ছিল। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের বেশ কিছু ব্যাপার আমার কাছে গড়বর লাগছে। এত বেশি গড়বর লাগছে যে ব্যাপারগুলো আমার জন্য হজম করা বেশ কষ্টকর হয়ে পড়েছে, এই লেখাটি সেই বদহজমেরই ফলাফল।

আমার এই ছোট্ট জীবনে বিজ্ঞান বেশ বড়সর একটা জায়গা দখল করে আছে। বিজ্ঞানের সবকিছুই আমাকে মুগ্ধ করে – হোক সেটা ডিনামিক্সে দেয়া নিউটনের মূলসূত্রগুলো কিংবা আইনস্টাইনের থিউরি অফ রিলেটিভিটি অথবা এডিসনের তৈরি ইলেক্ট্রিক বাল্ব। বড় বিজ্ঞান ছোট বিজ্ঞান – সবকিছুতেই মুগ্ধ হতে সময় লাগেনা। বাতাসভর্তি বেলুনকে ফাটালে শব্দ হয় – বেলুনের ভেতর কোন বোমা না থাকার পরও কেন শব্দ হয় সেই ব্যাখ্যা পেয়ে আমি মুগ্ধ হই। পানিতে টইটুম্বুর একটা গ্লাসের মুখে কাগজ চেপে গ্লাস উল্টালে পানিও পড়েনা কাগজও পড়েনা – দেখে আমি মুগ্ধ হই। জগদীশচন্দ্র বসু প্রমান করলেন গাছেরও প্রাণ আছে – জেনে আমি মুগ্ধ হই। আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন, সুব্রত বড়ুয়া আর মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা বিজ্ঞানবিষয়ক ছোটদের বইগুলো পড়ে মুগ্ধ হই। বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা, বিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, এমনকি বিজ্ঞানী দেখেও মুগ্ধ হই। মোদ্দা কথা বিজ্ঞান আমাকে যেরকম মুগ্ধ করে আর কোন কিছুই সেভাবে আমাকে মুগ্ধ করতে পারেনা ।

কোয়ান্টাম মেথড
প্রথমেই বেসিক প্রশ্ন – কোয়ান্টাম মেথড কি? তাদের ভাষ্যমতে এককথায় এটি – “Science of Living”. আশ্রম ও খানকার চৌহদ্দি থেকে বের করে ধ্যানকে গণমানুষের আত্মউন্নয়ন ও ব্যক্তিত্বের বিকাশে প্রয়োগ করাই তাদের উদ্দেশ্য। ধ্যানচর্চার মাধ্যমে প্রাচ্যের সাধনা আর আধুনিক বিজ্ঞানের নির্যাসে সঞ্জীবিত কোয়ান্টাম মেথড মেডিটেশন প্রক্রিয়া। সাধকদের সাধনা ও মনোবিজ্ঞানের প্রক্রিয়ার সমন্বয়ের ফলে সহজে মেডিটেটিভ লেভেলে পৌছে আত্মনিমগ্ন হওয়া যায়। সোজা কথায় ধ্যান চর্চার মাধ্যমে জীবনযাপনের বিজ্ঞান এটি ।

কোয়ান্টাম মেথড ও বিজ্ঞান
কোয়ান্টাম শব্দটি নেয়া হয়েছে কোয়ান্টাম মেকানিক্স থেকে। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের আগে বিজ্ঞান নিয়ন্ত্রিত হতো নিউটনিয়ান মেকানিক্স দিয়ে। আমরা জানি, বিজ্ঞানী নিউটন এবং ম্যাক্সওয়েলের সূত্র অনুসরণ করে পদার্থবিজ্ঞান ঊনবিংশ শতাব্দির শেষভাগে এক সুশৃঙ্খল বিশ্বদৃষ্টি উপস্থাপন করে। এই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় সবকিছুই ছিলো এক নিয়মের অধীন, সবকিছুই হিসেব করে বলে দেয়া যেত। সেখানে বিজ্ঞানীর কোনো ভূমিকা থাকলো না। বিজ্ঞানী ছিলেন একজন দর্শকমাত্র। আর পুরো প্রক্রিয়া হচ্ছে দর্শক-মন নিরপেক্ষ। অর্থাৎ মনের কোনো ভূমিকা আর থাকলো না। বিজ্ঞান থেকে মন নির্বাসিত হলো এবং বস্ত্তবাদের বিকাশ ঘটলো।

পরমাণু পর্যন্ত নিউটনিয়ান মেকানিক্স ভালোভাবেই সবকিছুর ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম হচ্ছিলো। কিন্তু বিজ্ঞান যখন পরমাণুর গভীরে বা সাব-এটমিক লেভেলে ঢুকলো তখন দেখা গেল, একটা সাব-এটমিক পার্টিকেল-পার্টিকেল ফর্মে আছে, না এনার্জি ফর্মে আছে তা হিসেব করে বলা যাচ্ছে না, দেখে বলতে হচ্ছে। যেকোনো সময় এটা পার্টিকেল ফর্মে থাকতে পারে, যেকোনো সময় এটা এনার্জি ফর্মে থাকতে পারে। এটাই হলো ওয়ার্নার হেইজেনবার্গের আনসারটেইনিটি প্রিন্সিপল। বিজ্ঞানে তখন আবার দর্শকের আগমন ঘটলো।

কোয়ান্টাম মেকানিক্স বিংশ শতাব্দিতে এসে বিজ্ঞান থেকে নির্বাসিত মনকে আবার বিজ্ঞানে পুনর্বাসিত করে। যেহেতু কোয়ান্টাম মেকানিক্স বিজ্ঞান থেকে নির্বাসিত মনকে বিজ্ঞানে পুনর্বাসিত করে, তাই চেতনার শক্তিকে, মনের বিশাল ক্ষমতাকে নিজের ও মানবতার কল্যাণে ব্যবহারের সহজ ও পরীক্ষিত এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিটির নামকরণ করা হয়েছে কোয়ান্টাম মেথড।

মন ও চেতনার ক্ষমতা সম্পর্কে আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গির সার-সংক্ষেপ নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিজ্ঞানী ইউজিন উইগনার তাঁর ‘Remarks on the Mind-Body Question’ নিবন্ধে চমৎকারভাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, অধিকাংশ পদার্থ বিজ্ঞানীই এই সত্যকে মেনে নিয়েছেন যে, চিন্তা অর্থাৎ মনই হচ্ছে মূল। ‘চেতনার উল্লেখ ছাড়া কোয়ান্টাম মেকানিক্স-এর নিয়মকে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণভাবে গঠন করা সম্ভব নয়।’ নিবন্ধের উপসংহারে বিজ্ঞানী উইগনার বলেছেন, ‘বিশ্বের বৈজ্ঞানিক গবেষণা শেষ পর্যন্ত চেতনাকে চূড়ান্ত সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’

যদিও কোয়ান্টাম মেকানিক্স কি বা এটা কি ধরণের থিওরির কথা বলে – এসব ব্যাপারে কোন আলোচনা করেনি কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। তবে দেখা যাচ্ছে যে কোয়ান্টাম মেকানিক্সে যেহেতু চেতনার বা মনের একটা কনসেপ্ট ঢুকেছিল সে জন্য কোয়ান্টাম মেডিটেশনকে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাথে তুলনা করা হচ্ছে। এবং একারণেই এই ধ্যানচর্চার নামকরণ করা হয়েছে – কোয়ান্টাম মেডিটেশন। এটা ছাড়া কেয়ান্টাম মেকানিক্সের সাথে এর কোনই সম্পর্ক নেই, অর্থাৎ অনিশ্চয়তার সূত্র বা মাল্টিভার্স থিওরি বা অন্য কোন কিছুর সাথে এর কোনই যোগাযোগ নেই!

তো আমরা দেখতে পাচ্ছি, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন যে দাবী করছে যে চেতনাই কোয়ান্টাম থিওরির সবকিছু, আসলে ব্যাপার সেটা না। উপরন্তু এই চেতনা জিনিসটা ভৌতবিজ্ঞানের কিছু না হওয়াতে এবং একে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়না দেখেই কোয়ান্টাম বিশ্বে চেতনাকে বাদ দেবার জন্য অনেক থিওরি তৈরি ও প্রমানিত হয়। চেতনা নামের জিনিসটাই ছাড়াই বেশ ভালোভাবেই কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সবকিছু চলছে।

অবশ্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন শুধু চেতনাই না, মানুষের মনকে ইলেক্ট্রনের সাথেও তুলনা করেছে। মন কিভাবে ইলেক্ট্রনের সাথে তুলনীয় হতে পারে সেটা অবশ্য বোধগম্য নয়।

ভালকথা যে ইলেক্ট্রন উচ্চতর শক্তিস্তরে লাফ দেয়, যাকে এখানে উত্থানের সাথে তুলনা করা হয়েছে। পরের লাইনগুলোতে যা বলা হয়েছে যে তার সারসংক্ষেপ হচ্ছে যে, ধ্যানেও নাকি লোকজনের এই রকম আত্মিক উত্থান ঘটে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে, ইলেক্ট্রন শুধু উচ্চ শক্তিস্তরেই লাফ দেয়না বরং নিম্ন শক্তিস্তরেও লাফ দেয়। ইলেক্ট্রনের উচ্চস্তরে লাফানোকে উত্থান বলা হলে, নিম্নস্তরে লাফানোকে নিশ্চয়ই পতন বলা হবে। তো সেক্ষেত্রে ব্যাপারটা কি দাঁড়ায়? ধ্যানে লোকজনের আত্মিক পতনও ঘটে?

সোজা কথা, কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাথে কোয়ান্টাম মেথডের কোন সম্পর্কই নেই। ইনফ্যাক্ট বিজ্ঞানের সাথেই এর কোন সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র চটকদার নাম নেবার জন্য “কোয়ান্টাম” শব্দটি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আমার ধারণা।

কোয়ান্টাম মেথড ও টেলিপ্যাথি
টেলিপ্যাথি কি? সংক্ষেপে, এ হলো কোনো রকম মাধ্যম ছাড়া দূরবর্তী কোনো স্থান থেকে চিন্তার ট্রান্সমিশন। অর্থাৎ আপনার ভেতর যে চিন্তা খেলা করছে তা আরেকজনের কাছে কোন মাধ্যম (কাগজ, বই, চিঠি, ফোন ইত্যাদি) ছাড়াই পাঠিয়ে দেয়া, যেভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার কে আপনি আপনার কথাকে অন্যের কাছে পৌঁছে দেন। বিভিন্ন সায়েন্স ফিকশনে এই ব্যাপারটার অস্তিত্ব থাকলেও সত্যিকারের বিজ্ঞানে কিন্তু এর কোন স্বীকৃতিই নেই।

কোয়ান্টাম মেথড ও ইসলাম
শুরুতেই বলে নেই, যারা মনে করেন যে বিজ্ঞান মানেই নাস্তিকতা, আমি তাদের দলে নই। আমি বিশ্বাস করি আমাদের চারপাশের মহাবিশ্বে যা যা ঘটছে বিজ্ঞান সেসবের নিয়মগুলো বের করে চলেছে। ঘটনাগুলো বিজ্ঞান ঘটাচ্ছেনা, নেপথ্যে অন্য কেউ রয়েছে। বিজ্ঞানী নিউটন বলের তিনটি সূত্র বের করে অমর হয়ে আছেন, কিন্তু সেই সূত্রগুলো কে তৈরি করেছে? বিজ্ঞানী ওহম একটা ইলেক্ট্রিক সার্কিটের মধ্যে কারেন্ট ও ভোল্টেজের মধ্যকার সম্পর্কটি বের করেছিলেন, কিন্তু সেই সম্পর্কটি তৈরি করেছিলই বা কে? এই মহাবিশ্বের সবকিছু যে নিয়ম মেনে ঠিকঠাকমত চলছে সেই নিয়মকানুনগুলো কে তৈরি করেছে? এভাবে চিন্তা করলে সবকিছু একজন সৃষ্টিকর্তাকেই স্মরণ করিয়ে।

কোয়ান্টাম মেথড বলতে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন কি বোঝাচ্ছে সেটা আমাদের জানা দরকার। এই লেখাটিরই “বিজ্ঞান” পর্বে আমরা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নিয়ে হালকাপাতলা পরিচিতিপর্ব সেরে ফেলেছিলাম। এই পর্বে আমরা আরো বিশদভাবে পরিচিত হব এই ফাউন্ডেশনের সাথে – একেবারে শূন্য লেভেল থেকে।

১.
সবার মাঝে ধ্যানচর্চা ছড়িয়ে দেবার উদ্দেশ্যে নব্বইয়ের দশকে যোগ ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়। কালপরিক্রমায় সেটাই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নাম নিয়ে বর্তমানে পথ চলছে। দেশে বিদেশে প্রচুর শাখা খুলে বসেছে এই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মূলমন্ত্রই হল ধ্যান বা মেডিটেশন করা, ধ্যান বা মেডিটেশন করে অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার অধিকারী হওয়া। আর সেই ক্ষমতাবলে আপনি দূর করবেন আপনার সকল সীমাবদ্ধতা। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বলে-

মানুষের অসীম শক্তি ও সম্ভাবনাকে সবসময় শৃঙ্খলিত ও পঙ্গু করে রাখে সংস্কার ও ভ্রান্ত বিশ্বাস। … এই ভ্রান্ত ধারণার শিকল ভেঙে মুক্ত বিশ্বাসে উপনীত হওয়াটাই হচ্ছে মানুষের আসল স্বাধীনতা। কারণ মুক্ত বিশ্বাস হচ্ছে সকল সাফল্য, সকল অর্জনের ভিত্তি। বিশ্বাসই রোগ নিরাময় করে, ব্যর্থতাকে সাফল্যে আর অশান্তিকে প্রশান্তিতে রূপান্তরিত করে। বিশ্বাসই মেধাকে বিকশিত করে, যোগ্যতাকে কাজে লাগায়, দক্ষতা সৃষ্টি করে। বিশ্বাসই অভাব দূর করে, প্রাচুর্য সৃষ্টি করে। …ভ্রান্ত ধারণা ও সংস্কারের শৃঙ্খল মুক্তির পথ হচ্ছে মেডিটেশন। … তখন প্রতিবারের প্রার্থনাতেই আপনি পুলকিত হবেন, প্রতিটি সেজদাই পরিণত হবে মেরাজে। … মেডিটেশনের মাধ্যমেই আপনি সংযোগ সাধন করতে পারেন আপনার ‘অন্তরের আমি’র সাথে, আপনার শক্তির মূল উৎসের সাথে। … মেডিটেশনের পথ ধরেই আপনি লাভ করবেন পারিপার্শ্বিক দুষ্টচক্রের শৃঙ্খল ভাঙার অন্তর্গত শক্তি। … আপনি অতিক্রম করবেন আপনার জৈবিক অস্তিত্বের সীমাবদ্ধতা।

২.
রোগের মূল কারণকে মানসিক আখ্যায়িত করে এখানে মেডিটেশনের মাধ্যমে সকল রোগ ব্যাধি উপশমের পদ্ধতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে । মনছবি বা ইমেজ থেরাপি ছাড়াও রয়েছে ‘দেহের ভিতরে ভ্রমণ’ নামক পদ্ধতি যেখানে রোগীকে প্রথমে শিথিলায়ন করতে বলা হয়, তারপর শরীরের নানা অঙ্গের মধ্য দিয়ে কাল্পনিক ভ্রমণ করতে বলা হয়। এতে সে তার সমস্যার স্বরূপ সম্পর্কে অন্তদৃষ্টি লাভ করে এবং নিজেই কমান্ড সেন্টারের মাধ্যমে সমাধান করতে পারে। যেমন-

একজন ক্যান্সারের রোগী তার ক্যান্সারের কোষগুলোকে কল্পনা করে সর্ষের দানারূপে।আর দেখে অসংখ্য ছোট ছোট পাখি ওই সর্ষে দানাগুলো খাচ্ছে। আর সর্ষের দানার পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। আস্তে আস্তে সর্ষের দানা নিঃশেষ হয়ে আসছে। সর্ষের দানাও শেষ, নিরাময়ও সম্পন্ন।

৩.
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মতে –

আধ্যাত্মিকতার পথে অগ্রসর হতে হলে একজন আলোকিত গুরু, মুর্শিদ বা গাইডের কাছে বায়াত বা দীক্ষা গ্রহণ প্রয়োজন। বায়াত বা দীক্ষা গ্রহণ ছাড়া নিজে নিজে আধ্যাত্মিক সাধনা এক পিচ্ছিল পথ। যে কোন সময়ই পা পিছলে পাহাড় থেকে একেবারে গিরিখাতে পড়ে যেতে পারেন।


ইসলামে মেডিটেশন বা ধ্যান করার ব্যাপারে কোন কিছু উল্লেখ করা নেই। অনেকে দাবী করেন যে, রাসূল (স) হেরা গুহায় ধ্যান করতেন। তাদের খুব স্পষ্টভাবে জেনে রাখা প্রয়োজন যে –

রাসূল (স) হেরা গুহায় ঠিক কি করতেন, যা করতেন সেটাকে ধ্যান বলে আখ্যায়িত করা যায় কিনা এ ব্যাপারে আমাদের কোন বিস্তারিত তথ্য জানা নেই।
যদি বা তর্কের খাতিরে ধরেও নেই যে, রাসূল (স) হেরা গুহায় ধ্যান করতেন, তবে তা করতেন নব্যুয়তের আগে। নব্যুয়তের আগে তাঁর করা কোন কাজ আমাদের জন্য শরীয়াতের উৎস নয়।

কোন সহীহ হাদীস নেই যেখানে বলা হয়েছে যে রাসুল (স) ধ্যান করতেন, কিংবা তাঁর সাহাবীরা ধ্যান করতেন, কিংবা রাসুল (স) তাঁর সাহাবীদের নিয়ে ধ্যান করতেন কিংবা রাসুল (স) তাঁর উম্মতদের ধ্যান করতে বলে গেছেন। এরকম কোন নজীরও নেই। রাসুল (স) এর জীবনযাপন ছিল খোলা বইয়ের পাতার মত – সবাই জানতেন তিনি কিভাবে জীবনযাপন করেন। উম্মতরা যাতে সহজেই তাঁকে অনুসরণ করতে পারেন সেজন্য তাঁর সব কথা আর কাজই হাদীস গ্রন্থে আশ্রয় পেয়েছে। তাঁর করা সকল ইবাদতই কুরআন-হাদীসের মাধ্যমে সবাই জানেন – তাহাজ্জুদ, ইশরাক প্রভৃতি সকল ইবাদত তিনি করেছেন, তাঁকে দেখে তাঁর সাহাবীরা করেছেন এবং এভাবে কালপরিক্রমায় আমরাও তা করছি। কিন্তু তিনি সবাইকে নিয়ে জামাতে ধ্যান করতেন – এরকম কোন নজীর নেই।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বলছে যে কুরআনে সরাসরি বলা আছে মেডিটেশনের কথা –

সূরা আলে ইমরানের ১৯০-৯১ আয়াতে আল্লাহ জ্ঞানীদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে বলেছেন, ‘তারা আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি রহস্য নিয়ে গভীর ধ্যানে (তাফাক্কুর) নিমগ্ন হয়’। যথার্থই আল কোরআন বলে, ‘আমি একটি বিষয়ে সতর্ক করছি, আল্লাহর সামনে দাঁড়াও একক বা যৌথভাবে এবং চিন্তা কর…’। এখানে ‘একক বা যৌথভাবে’ অর্থ হচ্ছে সামাজিক বা ব্যক্তিগত সংস্কারের প্রভাব বা চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করে চিন্তা বা বিচার-বিশ্লেষণ করা। তিনি ইবাদতের একটি মাধ্যম হিসেবে ধ্যানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন।

অর্থাৎ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের চোখে ধ্যান বা মেডিটেশন হচ্ছে ইবাদত। এবার আমরা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ব্যবহার করা সুরা আল ইমরানের ১৯০-১৯১ আয়াত দুটো ভালো করে দেখি – আল্লাহতা’লা এখানে সেসব জ্ঞানসম্পন্ন লোকদের কথা বলেছেন যারা আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে ভীত হয়ে তাঁর কাছে আশ্রয় চায়। এখানে ধ্যান করার কথা বলা হয়নি, বরং আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে বলা হয়েছে। এখানে “চিন্তাভাবনা” বলতে সেই চিন্তাভাবনাকে বলা হয়েছে যা সাধারণ একজন মানুষ করে থাকে, যেমনটি করেন বিজ্ঞানীরা ও গবেষকরা কোন কিছু বের করার জন্য, যেমনটি করে একজন পরীক্ষার্থী পরীক্ষার হলে বসে। গবেষকরা নিশ্চয়ই কোন সমাধানের জন্য কোয়ান্টাভঙ্গিতে বসে ধ্যান করেননা। প্রচুর বই, জার্নাল পড়ে এবং অন্যান্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন রকম সাহায্য নিয়েই তারা তাদের সমস্যা সমাধান করেন। এবার আমরা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ব্যবহার করা পরের আয়াতে আসি যা সুরা সাবা’র ৪৬ নাম্বার আয়াত –

বল, “আমি তোমাদেরকে একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি: তোমরা আল্ল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই-দুইজন অথবা এক-একজন করে দাঁড়াও, অতঃপর তোমরা চিন্তা করে দেখ – তোমাদের সঙ্গী আদৌ উন্মাদ নয়। সে তো আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে তোমাদের সতর্ককারী মাত্র।”

এখানেও ধ্যান করার কথা বলা হয়নি। এমনকি ইবাদতের মাধ্যম হিসেবেও ধ্যানের কথা বলা হয়নি। এখানে আল্লাহর আযাব সম্পর্কে সতর্ককারী নবী-রাসুলদের যে লোকজন উন্মাদ বলে মনে করতেন, সে সম্পর্কে আল্লাহতা’লা সতর্কবাণী হিসেবে আয়াতটি নাযিল করেন। ধ্যান বা মেডিটেশনের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বলে যে হাদীসেও ধ্যানের কথা বলা আছে –

হযরত ইবনে আববাস থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (স) বলেছেন, এক ঘণ্টার ধ্যান সারা বছরের নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম। এছাড়া হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত আছে, নবীজী (স) বলেছেন, সৃষ্টি সম্পর্কে এক ঘণ্টার ধ্যান ৭০ বছরের নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম (মেশকাত)।

এই হাদীসটিকে ইবন আল-জাওয়াজীসহ অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ জাল হাদীস বলে চিহ্নিত করেছেন।

এখন বলবেন, মেডিটেশন নতুন জিনিস, নবীজীর (স) যুগে তো এই মেডিটেশন ছিলো না, কোয়ান্টাম মেথড ছিলো না, মেডিটেশন করার প্রয়োজনটা কী? আসলে নবীজীর সময়ে এত টেনশন ছিলো না, এত যান্ত্রিকতা, এত প্রতিযোগিতা ছিলো না। তখন মানুষ উত্তেজিত হতো আবার ঠান্ডাও হতো। কিন্তু এখন মানুষ উত্তেজিত হয়, কিন্তু ঠান্ডা হয় না। যার ফলে সে সত্যকে অনুসরণ করতে পারে না।

তো ব্যাপারটা কি দাঁড়ালো? উনারাই একবার বলছেন যে মেডিটেশন রাসুল (স)’র আমলে ছিলনা, আবার উনারাই কুরআনের ভুল ব্যাখ্যা ও জাল হাদীস নিয়ে প্রমান করার চেষ্টা করছেন যে আল্লাহতা’লা ও রাসুল (স) সবাইকে মেডিটেশন করতে বলেছেন। ব্যাপারটা একটু কেমন হয়ে গেল না? তাছাড়া ইসলাম ধর্মকে আল্লাহতা’লা পাঠিয়েছেন কিয়ামতের আগ পর্যন্ত সকল মুসলমানের জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে। রাসুল (স)’র আমলে ইসলাম যেরকম ছিল, এখনো তাই আছে, ভবিষ্যতেও একই থাকবে – কখনোই কারো জন্য ইসলাম পাল্টাবেনা। তাই রাসুল (স) এর আমলে দরকার ছিলনা দেখে ইসলামে মেডিটেশন ছিলনা, কিন্তু এখন দরকার তাই ইসলামে মেডিটেশন চলে আসছে – এই ধারণাটাই তো বিশাল একটা গোলমেলে ব্যাপার!

একজন মুসলিমকে ইসলামের পথ থেকে সরিয়ে কাফিরদের পথভ্রষ্টতার দিকে নিয়ে যাবার জন্য অনেক ধরণের কাজ রয়েছে। শায়েখ মুহাম্মাদ ইবন আব্দ আল ওয়াহাব সহ বিভিন্ন ইসলামি বিদ্বানরা এদের মধ্য থেকে ঈমান ও ইসলাম বিনষ্টকারী দশটি সবচেয়ে সূক্ষ্ম কিন্তু মারাত্মক কাজকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছেন, সেগুলো হল –

১। আল্লাহর সাথে শিরক করা
২। আল্লাহ ও বান্দার মাঝে কাউকে মাধ্যম হিসেবে মান্য করা এবং এটা বিশ্বাস করা যে তার দ্বারা সহজেই আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানানো যায়
৩। কাফিরকে কাফির মনে না করা
৪। অন্য কোন ব্যক্তির শিক্ষাকে রাসুল (স) এর শিক্ষার চেয়েও বেশি ফলপ্রসু বা ভালো মনে করা
৫। রাসুল (স) মানব জাতির জন্য যে নির্দেশনা এনেছেন সেটা বা তার কোন অংশকে ঘৃণা বা অপছন্দ করা
৬। রাসুল (স) এর উপর অবতীর্ণ ধর্ম নিয়ে কোন ধরণের কৌতুক বা মজা করা
৭। জাদু-টোনা করা বা জাদু-টোনা করা সমর্থন করা
৮। মুশরিকদের সমর্থন দেয়া এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদের সাহায্য করা
৯। কিছু লোক রাসুল (স) এর ধর্মের উর্ধ্বে ফলে তারা রাসুল (স) এর নিয়ম বহির্ভূত যে কোন কিছু করার অধিকার রাখেন – এমনটা বিশ্বাস করা
১০। আল্লাহতা’লার ধর্ম ইসলাম থেকে সরে আসা কিংবা ইসলাম সম্পর্কে কোন কিছু জানতে বা শিখতে না চাওয়া
উপরের কেবল এই দশটি কাজের তালিকা থেকে কোয়ান্টাম মেথড এর মাধ্যমে আমরা কিভাবে ঈমান ও ইসলাম বিনষ্টকারী বিষয়গুলোতে জড়িয়ে পড়তে পারি তা দেখা যাক।

কোয়ান্টাম মেথড আমাদের শেখায় – আমরা সব পারি, সকল ক্ষমতার উৎস আমার মন, ধ্যানের মাধ্যম সব নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, প্রকৃতির নেপথ্য শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, অন্যকে অসুখ হতে সারিয়ে তুলতে পারি, ভবিষ্যতের টেন্ডারের দাম দেখতে পারি (অর্থাৎ গায়েব জানতে পারি) ইত্যাদি ইত্যাদি। আল্লাহর গুনাগুণ মানুষের উপর আরোপ করার নামই শিরক, শিরক কেবল মূর্তি বানিয়ে পূজা করার নাম নয়, শিরক হচ্ছে তৌহীদের সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থা! সেক্ষেত্রে উপরের ১ নম্বর ঈমান বিনষ্টকারী পয়েন্ট অনুযায়ী আমাদের ঈমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

কেউ যদি প্রার্থনার জন্য বা আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য অন্য কাউকে এজেন্সি মনে করে, তবে উপরের তালিকার ২ নম্বর পয়েন্ট অনুযায়ী তার ঈমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কোয়ান্টাম মেথড-এর অতিরিক্ত গুরুভক্তি বা ধ্যানাবস্থায় অন্তর্গুরুর হাতে সব সমর্পন করা এই ২ নম্বর পয়েন্টের মধ্যে পড়ে যায় যাতে আমাদের ঈমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

কোয়ান্টাম মেথড কাফিরকে কাফির মনে করেনা। তাই তারা কাফির ধর্মের উপাসনা পদ্ধতি (ধ্যান) ইসলাম ধর্মে নিয়ে আসে কিংবা তাদের ধর্মের সাথে ইসলামকে একই অবস্থানে (কুরআনের পাশাপাশি বেদ, গীতা, বাইবেল ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থের বাণী প্রচার ও অনুসরণ) নিয়ে আসে। এর ফলে উপরের তালিকার ৩ নম্বর পয়েন্ট অনুযায়ী ঈমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

কোয়ান্টাম মেথড ধ্যান করাকে উৎসাহ দিচ্ছে, অন্য ধর্মের মতাদর্শ প্রচার করছে। অন্য ধর্মের প্রচারকরা (যেমন গৌতম বুদ্ধ) যা করেছেন (অর্থাৎ ধ্যান, অভয়মুদ্রা ইত্যাদি) তা অনুসরণ ও অনুকরণ করা শেখানো হচ্ছে, যা কীনা প্রকারান্তরে রাসূল (স) আমাদের যে জীবন বিধান দিয়ে গেছেন, তাকে অসম্পূর্ণ মনে করা বা অন্য কিছুকে তার চেয়ে শ্রেয় মনে করার শামিল। ফলে উপরের তালিকার ৪ নম্বর পয়েন্ট অনুযায়ী কোয়ান্টাম মেথড আমাদের ঈমান হারানোর আশঙ্কায় ফেলে।

উপরের ৭ নম্বর পয়েন্টের আওতায় তন্ত্র-মন্ত্র (কোয়ান্টা ধ্বনি), তাবিজ-কবজ (অষ্টধাতুর তৈরি কোয়ান্টাম বালা, কোয়ান্টাম মেথডের মতে যা কারো কারো দেহের মেটালিক বা ধাতুগত ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে সহায়ক, রাশিতে বিশ্বাস, ভবিষ্যৎ জানার চেষ্টা অর্থাৎ আইচিং, জ্যোতিষ-শাস্ত্র বা ধ্যানের আসনে বৃহষ্পতি শনি ইত্যাদির আবির্ভাব – সবই এসে যাবে। এখানেও আমরা কোয়ান্টাম মেথড এর মাধ্যমে ঈমান হারানোর আশঙ্কায় থাকবো।

উপরের ৯ নম্বর পয়েন্ট অনুযায়ী কেউ যদি মনে করে যে, বিশেষ কারো জন্য শরীয়াহ্ প্রযোজ্য নয় (শিশু, পাগল, ঘুমন্ত ব্যক্তি – এরকম কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া) বা বিশেষ কেউ শরীয়তের ঊর্ধ্বে – তাহলে যিনি এমন মনে করবেন তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। যেমন ধরুন, কোয়ান্টাম মেথডের প্রচলনকারী মহাজাতক সাহেব মহিলাদের মাথায় হাত রাখেন (ইউটিউবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের যেকোন পুনর্মিলনী ধরণের অনুষ্ঠান দেখলেই ব্যাপারটা বোঝা যায়) কিংবা কোয়ান্টামের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার সামনেই অনেক মহিলা যথাযথভাবে পর্দা না করে থাকে বা কোয়ান্টাম লামা সেন্টারের বিভিন্ন প্রাণীর মুর্তি-ভাস্কর্য স্থাপন করা ইত্যাদি ব্যাপারগুলো ইসলামী শরীয়তে নিষিদ্ধ। কিন্তু কেউ যদি মনে করেন যে, মহাজাতক সাহেব এসব শরীয়তের ঊর্ধ্বে, তার বেলায় শরীয়তের চিরাচরিত নিয়মগুলো খাটবেনা, তিনি এসব করতেই পারেন – তবে যে এরকম ভাববে তার ঈমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এখানেও কোয়ান্টাম মেথড এর মন্ত্রণায় আমাদের ঈমান হারাতে পারে।

উপরের ১০ নম্বর পয়েন্ট অনুযায়ী যারা দ্বীন শিখে না বা দ্বীনের প্র্যাক্টিস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তারা কাফির বলে গণ্য হতে পারে। কোয়ান্টাম মেথড তো আমাদের শর্টকাট শিখিয়ে দিচ্ছে – এমনও বলছে যে কোন আল্লাহতা’লাকে বিশ্বাস না করলেও আমরা চূড়ান্তভাবে সফল হতে পারে। এখানেও আমরা ঈমান হারানোর আশঙ্কায় রয়েছি। আমরা যারা কোয়ান্টাম মেথড এর শরণাপন্ন হয়েছি, তারা কি নিজের দ্বীন শেখার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিয়েছি? নিজের দ্বীন না শিখে আমরা কি নিজেদের পথভ্রষ্টতার রাস্তায় নিয়ে যাইনি? আমরা কি ইসলামী শরীয়াহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিই নি?

আপনি যদি কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের দেখানো পথে চলেন তবে উপরের ঈমান হারাবার কাজের তালিকার ১০ টি কাজের মধ্যে ৭টি কাজই আপনি সংঘটিত করেছেন। যেখানে একটি কাজ করলেই আপনার ঈমান হুমকির সম্মুখীন সেখানে সাত-সাতটি কাজ আপনি করেছেন বা করছেন। চিন্তা করে দেখুন তো ব্যাপারটা কতটুকু গুরুতর!

Post a Comment

Previous Post Next Post