পূজায় যাওয়া কিংবা পূজার প্রস্বাদ খাওয়ার ব্যাপারে ইসলামের বিধান কি?

একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায় আল্লাহর তাওহীদে ঘোষণা দেওয়া কোন মুসলিম কখনোই আল্লাহর সাথে শরীককারী কোন বিষয়কে পছন্দ কিংবা সমর্থন করতে পারে না। কিন্তু পরিস্থিতি এই পর্যায়ে এসেছে যে মুসলিমদের চোখে আল্লাহর সাথে শিরক করা (যেমন মূর্তি পূজা, অগ্নি পূজা ইত্যাদি) দর্শনীয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে (আল্লাহ্ ক্ষমা করুন)। অথচ এই শীরক কে সমাজ হতে দূরীভূত করতে তাওহীদের আবির্ভাব হয়েছে। তাই এই বিষয়ে আমি শুধু আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের (সা.) কিছু কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি:

১/ সাওবান (রা:) বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "......অচিরেই আমার উম্মতের কিছু লোক মূর্তিপূজা করবে। আর অতি শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু লোক মুশরিকদের সাথে মিশে যাবে।" (ইবনে মাজাহঃ ৩৯৫২)

২/"নিশ্চয়ই আল্লাহর সাথে শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় অন্যায়।" (সুরা লুকমানঃ ১৩)

৩/ "নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপন করলে তাকে ক্ষমা করবেন না, কিন্তু এর চেয়ে ছোট পাপ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, এবং যে কেউ আল্লাহর অংশী স্থির করে, সে মহাপাপে আবদ্ধ হয়েছে। (সূরা নিসাঃ ৪৮)

৪/ “মুমিনগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তারা যে সত্য তোমাদের কাছে আগমন করেছে, তা অস্বীকার করছে।” (সূরা আল-মুমতাহিনা, আয়াত: ১)

৫/ “আর পাপিষ্ঠদের প্রতি ঝুঁকবে না। নতুবা তোমাদেরকেও আগুনে ধরবে। আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু নাই। অতএব কোথাও সাহায্য পাবে না।” (সূরা হুদ, আয়াত: ১১৩)

৬/ “আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের মাংস খাওয়া। আর যে পশু জবাই করার সময় আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য কারো নাম নেয়া হয়েছে” (সূরা মায়িদাহঃ ৩)

৭/ "একবার এক মহিলা আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করল, কিছু অগ্নিপূজক মহিলা আমাদের শিশুদেরকে দুধপান করায়। তাদের ঈদ-উৎসবের সময় তারা আমাদেরকে হাদিয়া দেয়। আয়েশা (রাঃ) বললেন: উৎসব উপলক্ষে যা কিছু জবাই করা হয়ে তা খাবে না; কিন্তু তাদের গাছের ফল খেতে পার। আবু বারাযা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: কিছু অগ্নিপূজক তাঁর প্রতিবেশী ছিল। তারা নওরোজ ও মেহেরযান উপলক্ষে তাকে হাদিয়া দিত। তখন তিনি তাঁর পরিবারকে বলতেন: ফলজাতীয় জিনিসগুলো খাও; আর অন্যগুলো ফেলে দাও।" (islamqa)

৮/ উমার ইবনে খাত্তাব (রা) বলেছেন "তোমরা মুশরিকদের উপসনালয়ে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে প্রবেশ করোনা। কারন সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হতে থাকে। (বায়হাক্বী)

৯/ আবু মূসা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) বলেছেনঃ "মানুষ (দুনিয়াতে) যাকে ভালোবাসে (কিয়ামতে) সে তারই সাথী হবে ।" - [রিয়াযুস স্বা-লিহীনঃ ৩৭২]

১০/ রসূলুল্লাহ্ (সা) হতে আরো ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল বা সাদৃশ্য রাখবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।” (আবু দাউদ)

১১/ “আল্লাহ ও তাঁর রসুল (সঃ) কোন কাজের আদেশ করলে কোন মু’মিন পুরুষ ও নারীর ঐ বিষয়ে আপত্তি করার ক্ষমতা নেই। যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হয়।” (সুরা আহযাবঃ ৩৬)

১২/ "মুসলমানের উচিত তার ধর্ম নিয়ে গর্ববোধ করা। ধর্মীয় বিধানগুলো বাস্তবায়ন করা। লজ্জাবোধ করে অথবা সৌজন্য দেখাতে গিয়ে এক্ষেত্রে কোন শৈথিল্য না দেখানো। বরং আল্লাহকে লজ্জাবোধ করা অধিক যুক্তিযুক্ত।" (শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদ)

তাহলে কি করে পূজার মতো শিরকের আস্তানায় একজন মুসলিম উপস্থিত থাকতে পারে ?

অবশ্যই না!

1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post