স্বভাবতই, যখন আপনি উসমান (রাঃ) সম্পর্কে কথা বলেন তখন প্রথম কোন কথাটি আপনার মনে ভেসে ওঠে?
তাঁর "হায়া" বা লজ্জাশীলতা; তাঁর “হায়া”র সাথে আসে লজ্জাশীলতা, নম্রতা, ভদ্রতা আর বিনয়।
তাঁর সম্পর্কে অন্য যে বৈশিষ্ট্য সামনে আসে তা হল তাঁর উদারতা। আবু সাঈদ আল খুদরী (রা) বলেন আমি একদিন রাসুলুল্লাহ (ﷺ)কে দেখেছি রাতের শুরুতে দু’হাত তুলে রাতের শেষ পর্যন্ত বলতেঃ হে আল্লাহ, আমি উসমানের উপর সন্তুষ্ট। তাই তাঁর উপর আপনিও সন্তুষ্ট হয়ে যান।
যুদ্ধের জন্য যখন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) উসমান (রা)এর কাছে চাইলেন, তিনি কোন ব্যবহৃত জিনিস দেন নি। তিনি দিয়েছিলেন যা আমরা আজকের হিসেবে সম্পূর্ন বোঝাই অনেক মিলিটারি জিপের সমান। তিনি কিনলেন সবচেয়ে সেরা উটসমূহ। তিন কিনলেন সর্বোত্তম ঢাল ও তলোয়ারসমূহ। এটা যদি আল্লাহর ভালোবাসার জন্য না হয় তবে তা কীসের জন্য হবে? এই হচ্ছে তাঁর ভালোবাসা আল্লাহর জন্য।
উমার ইবনে খাত্তাব (রা) এর সময়ে শান্তি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ছিল। উমার ইবনে খাত্তাব যখন মারা যান, তখন থেকেই ফিতনা (পরীক্ষা) শুরু হল। তারপর উসমান ইবনে আফফান “খালীফা” হলেন। উসমান ইবনে আফফানকে হত্যা করা হয়। উমার এবং উসমানের হত্যার মাঝে পার্থক্য হল উমারের হত্যা হয়েছিল একজন কাফেরের দ্বারা। আর উসমানের হত্যা হয়েছিল তাদের দ্বারা যারা নিজেদের মুসলিম দ্বাবি করত। এবং এই কারণেই তা অনৈক্যের দরজা খুলে দিল। আর উসমান (রা) তার সহজতার জন্য তাদের উপর কঠোর পদক্ষেপ নেন নি। আর তিনি বলেনঃ আমি কারও এক ফোঁটা রক্তও চাইনা আমার কারণে। কিন্তু তারপরও আলী (রা) তাঁর সন্তান আল হাসান আর আল হুসাইনকে পাঠালেন উসমান (রাঃ)কে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য।
সেই ১৬ই জুলাই, বৃহস্পতিবার দিনে যখন উসমান (রা) কুর’আন পড়ছিলেন... আর তিনি বসা ছিলেন। ৮২ বছরের বৃদ্ধ মানুষটি! তিনি তন্দ্রাচ্ছন্ন হলেন আর তিনি আসরের সালাতের সময় নিদ্রা গেলেন। সেদিন তিনি সিয়াম পালন করছিলেন। আর তিনি স্বপ্নে রাসুল (সঃ)কে দেখলেন- তিনি হাসছেন।
আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “হে উসমান...”।
তিনি জবাব দিলেন, “হে রাসুলুল্লাহ (ﷺ)...”।
তিনি জিজ্ঞেস করেন, “হে উসমান, তারা কি তোমায় খাবার গ্রহণ থেকে বিরত রেখেছে?”
উত্তরে উসমান (রা) বলেন- “হে রাসুলুল্লাহ, তারা আমায় খাবার গ্রহণ থেকে বিরত রেখেছে।”
এরপর রাসুলুল্লাহ আবার জিজ্ঞেস করেন, “হে উসমান, তারা কি তোমায় আমার মাসজিদে সালাত আদায় করা থেকে বিরত রেখেছে?”
তখন তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ (ﷺ), তারা আমায় আপনার মাসজিদে সালাত আদায় করা থেকে বিরত রেখেছে।”
“উত্তম খবর, হে উসমান। তুমি আজ রাতে আমাদের সাথে ইফতার করতে যাচ্ছো।”
তারা তার ঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করল। তিনি সূরা বাকারাহ পড়ছিলেন। তারা তার মুখমণ্ডলে লোহার রড দিয়ে আঘাত করল
রক্ত গড়িয়ে পড়ল কুর'আনে। সুরা বাকারার ১৩৮নং আয়াতে- "আর তাদের বিরুদ্ধে তোমার জন্য সাহায্যকারীরূপে আল্লাহই যথেষ্ট।"
সুবহানাল্লাহ! সেদিন উসমান (রা) শহীদ হন। এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই ভবিষ্যৎবাণী করে গিয়েছিলেন। বিদ্রোহীরা এতটাই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে। অথচ পরবর্তীতে তাদের প্রত্যেককে পরিণতি বরণ করতে হয়েছিল। যারা তাকে হত্যার জন্য লোহার রড দিয়ে আঘাত করে, যারা ছুরি দিয়ে তার পেট চিরে ফেলে এদের হাত বিকৃত হয়ে যায়।
লিখেছেন: রাফিজ ইবনে আব্দুল করিম
তাঁর "হায়া" বা লজ্জাশীলতা; তাঁর “হায়া”র সাথে আসে লজ্জাশীলতা, নম্রতা, ভদ্রতা আর বিনয়।
তাঁর সম্পর্কে অন্য যে বৈশিষ্ট্য সামনে আসে তা হল তাঁর উদারতা। আবু সাঈদ আল খুদরী (রা) বলেন আমি একদিন রাসুলুল্লাহ (ﷺ)কে দেখেছি রাতের শুরুতে দু’হাত তুলে রাতের শেষ পর্যন্ত বলতেঃ হে আল্লাহ, আমি উসমানের উপর সন্তুষ্ট। তাই তাঁর উপর আপনিও সন্তুষ্ট হয়ে যান।
যুদ্ধের জন্য যখন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) উসমান (রা)এর কাছে চাইলেন, তিনি কোন ব্যবহৃত জিনিস দেন নি। তিনি দিয়েছিলেন যা আমরা আজকের হিসেবে সম্পূর্ন বোঝাই অনেক মিলিটারি জিপের সমান। তিনি কিনলেন সবচেয়ে সেরা উটসমূহ। তিন কিনলেন সর্বোত্তম ঢাল ও তলোয়ারসমূহ। এটা যদি আল্লাহর ভালোবাসার জন্য না হয় তবে তা কীসের জন্য হবে? এই হচ্ছে তাঁর ভালোবাসা আল্লাহর জন্য।
উমার ইবনে খাত্তাব (রা) এর সময়ে শান্তি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ছিল। উমার ইবনে খাত্তাব যখন মারা যান, তখন থেকেই ফিতনা (পরীক্ষা) শুরু হল। তারপর উসমান ইবনে আফফান “খালীফা” হলেন। উসমান ইবনে আফফানকে হত্যা করা হয়। উমার এবং উসমানের হত্যার মাঝে পার্থক্য হল উমারের হত্যা হয়েছিল একজন কাফেরের দ্বারা। আর উসমানের হত্যা হয়েছিল তাদের দ্বারা যারা নিজেদের মুসলিম দ্বাবি করত। এবং এই কারণেই তা অনৈক্যের দরজা খুলে দিল। আর উসমান (রা) তার সহজতার জন্য তাদের উপর কঠোর পদক্ষেপ নেন নি। আর তিনি বলেনঃ আমি কারও এক ফোঁটা রক্তও চাইনা আমার কারণে। কিন্তু তারপরও আলী (রা) তাঁর সন্তান আল হাসান আর আল হুসাইনকে পাঠালেন উসমান (রাঃ)কে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য।
সেই ১৬ই জুলাই, বৃহস্পতিবার দিনে যখন উসমান (রা) কুর’আন পড়ছিলেন... আর তিনি বসা ছিলেন। ৮২ বছরের বৃদ্ধ মানুষটি! তিনি তন্দ্রাচ্ছন্ন হলেন আর তিনি আসরের সালাতের সময় নিদ্রা গেলেন। সেদিন তিনি সিয়াম পালন করছিলেন। আর তিনি স্বপ্নে রাসুল (সঃ)কে দেখলেন- তিনি হাসছেন।
আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “হে উসমান...”।
তিনি জবাব দিলেন, “হে রাসুলুল্লাহ (ﷺ)...”।
তিনি জিজ্ঞেস করেন, “হে উসমান, তারা কি তোমায় খাবার গ্রহণ থেকে বিরত রেখেছে?”
উত্তরে উসমান (রা) বলেন- “হে রাসুলুল্লাহ, তারা আমায় খাবার গ্রহণ থেকে বিরত রেখেছে।”
এরপর রাসুলুল্লাহ আবার জিজ্ঞেস করেন, “হে উসমান, তারা কি তোমায় আমার মাসজিদে সালাত আদায় করা থেকে বিরত রেখেছে?”
তখন তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ (ﷺ), তারা আমায় আপনার মাসজিদে সালাত আদায় করা থেকে বিরত রেখেছে।”
“উত্তম খবর, হে উসমান। তুমি আজ রাতে আমাদের সাথে ইফতার করতে যাচ্ছো।”
তারা তার ঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করল। তিনি সূরা বাকারাহ পড়ছিলেন। তারা তার মুখমণ্ডলে লোহার রড দিয়ে আঘাত করল
রক্ত গড়িয়ে পড়ল কুর'আনে। সুরা বাকারার ১৩৮নং আয়াতে- "আর তাদের বিরুদ্ধে তোমার জন্য সাহায্যকারীরূপে আল্লাহই যথেষ্ট।"
সুবহানাল্লাহ! সেদিন উসমান (রা) শহীদ হন। এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই ভবিষ্যৎবাণী করে গিয়েছিলেন। বিদ্রোহীরা এতটাই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে। অথচ পরবর্তীতে তাদের প্রত্যেককে পরিণতি বরণ করতে হয়েছিল। যারা তাকে হত্যার জন্য লোহার রড দিয়ে আঘাত করে, যারা ছুরি দিয়ে তার পেট চিরে ফেলে এদের হাত বিকৃত হয়ে যায়।
লিখেছেন: রাফিজ ইবনে আব্দুল করিম
Post a Comment