ধার্মিকরা কি পরকালের পুরস্কারের লোভেই সব ভালো কাজ করে? তাহলে বিবেকের গুরুত্ব কোথায়?


আজ ৮,৩০ থেকে ক্লাস তাই খেয়ে দেয়ে ৭,১৫ তেই ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলাম। একঘন্টার কমে ভার্সিটিতে পৌছানো কষ্টকর আর আগেভাগে না গেলে ৫মিনিট দেরী হলেই দিদার স্যার আজকের দিন এবসেন্ট দিয়ে দিবেন। এত সকাল সকাল স্যারেরা ক্লাস নিয়ে যে কি পান তা আল্লাহই ভালো জানেন, ফজর পড়ে কখনো যদি একটু ঘুমের ঝিমটি আসেও, তবুও ঘুম যাওয়ার কোনো উপায় নেই, এইসব ছাইপাশ ভাবতে ভাবতে বাসে উঠে গেলাম। বাসে উঠেই ইয়ারফোন কানে গুজে দিয়ে জুন্দুল্লাহ নাশিদটা ধরিয়ে দিলাম। চারপাশের শব্দ থেকে নিজের কানকে প্রটেক্ট করতে প্রিয় নাশিদটা এই মুহূর্তে বেশ কাজে দেবে।
.
নাশিদ শুনতে শুনতে চোখ দুটো সামান্য বন্ধ হয়ে আসছিলো হঠাত ফোনটা কেপে উঠলো, চোখ মেলতেই স্ক্রীনে ভেসে উঠলো আওয়াব নামটি। কল রিসিভ করতেই ওইপাশ থেকে কন্ঠ ভেসে উঠলো,
.
-আসসালামু আলাইকুম, কি আসছিস ভার্সিটিতে?
-হুম, বাসে আছি। তুই কোথায়?
-ভার্সিটিতে। তুই আয় তাহলে আমি অপেক্ষা করতেছি ইনশাআল্লাহ।
-ইনশাআল্লাহ।
.
বাস থামলো ভার্সিটি গেটের সামনে। নেমে পড়েই আওয়াবকে খুজতে লাগলো আমার চোখ জোড়া, ওকে দেখতে না পেয়ে আমি কল দিতে যাবো এমন সময়ই পেছন থেকে কন্ঠ ভেসে আসলো,
.
-আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
.
-ওয়ালাইকুমুস সালামু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু বলতে বলতে পেছনে তাকিয়ে সাদা-কালো মিক্সড চেক পাঞ্জাবী, কালো গোল টুপি আর টাখনু থেকে বেশ খানিকটা উপর পর্যন্ত ছাটা কালো প্যান্ট পরিহিত আওয়াবকে দেখতে পেলাম। বললাম “কিরে কোথায় ছিলি?”
.
-এই তো একটু ওদিকে ছিলাম
.
ও আওয়াব। পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতার হালকা গড়নের ছেলে, চুল ঘন হলেও দাড়ি বেশ পাতলা। ওকে একবার ওর নামের অর্থ জিজ্ঞাসা করেছিলাম
.
-দোস্ত তোর নামের অর্থটা কি?
.
-আওয়াব অর্থ যে অধিক পরিমানে আল্লাহর নিকট তাওবা করে। হান্নাদ ইবনু সারীর কিতাবুয যুহদে এসেছে বিখ্যাত মুফাসসির ইমাম মুজাহিদ বলেন, “আওয়াব হলো তারাই যারা নিজেদের পাপসমূহকে গোপনে বেশি বেশি স্মরণ করে আর তার জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করে” এককথায় যারা প্রতিটি কাজেই আল্লাহর দিকে অভিমুখী তাদেরকেই আওয়াব বলে। কুরআনে আল্লাহ তা’আলা সুলাইমান(আ) ও দাউদ(আ) কে আওয়াব বলে সম্বোধিত করেছেন। আল্লাহ যেনো আমাদেরকে সত্যিকারেই আওয়াবদের অন্তর্ভুক্ত করেন। আমিন। আওয়াবের উত্তর
.
-আমিন
.
ও নিজের দ্বীন চর্চার ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন। ছেলেটাকে প্রথম দেখাতেই একটু আলাদা লেগেছিলো আর অন্য রকম একটা ভালোলাগা কাজ করেছিলো, হুজুর বলেই হয়ত এত ভালোবাসা পরস্পরে।
.
পুরোনো স্মৃতি মন্থন করতে করতে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম, সম্বিতে ফিরলাম আওয়াবের ডাক শুনে
.
-এই যে মি. কোথায় হারিয়ে গেলেন এই ভার্সিটি গেটের সামনে দাঁড়িয়ে? হুম?
.
-না দোস্ত কোথাও না। চল ক্লাসে যাই দেরী না করে। দিদার স্যার ক্লাসে এসে পড়লে আর উনার পরে আমরা গেলে আজকে এত কষ্ট করে এসেও এবসেন্ট থাকতে হবে। চল চল।
.
-হুম।
.
সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে ক্লাসে যেয়ে ৩নং রো’এর ৫নং বেঞ্চে দুজন বসে পড়লাম। একটু পরেই আসলো আধুনিক যুগের ডিজিটাল ছেলে জনি। আমাদের দেখেই একগাল হাসি হেসেই বলে উঠলো, “আরে, হুজুরস! কি অবস্থা?” এই জনির চিরজীবনের অভ্যাস আমাদের দেখলেই তার টীকা-টিপ্পনী কাটতেই হবে তা না হলে যেন ওর দিনের শুরুটা ভালো হয়না।
.
-কি মি. আওয়াব? কি অবস্থা আপনার? জনির প্রশ্ন
-আলহামদুলিল্লাহি আলা কুল্লি হাল। ভালো তোর কি অবস্থা? আওয়াবের জবাব।
-ফাইন, ম্যান। ঘুরছি ফিরছি, বন্ধু-বান্ধব, আড্ডা আর গিটার নিয়েই ভালো আছি, মুক্ত স্বাধীন জীবন আমাদের। তোদের মত না যে এটা করা যাবেনা, ওইটা ধরা যাবেনা, সেটা ছোঁয়া যাবেনা। হিহ! তাচ্ছিল্যের সুর পরিষ্কার জনির ভাষায়।
.
নিশ্চুপ থেকে সুন্নাহ মোতাবেক মুচকি হাসি দিলো আওয়াব।
.
স্যার এসে পড়লো তা না হলে জনির উদরে হয়ত আরো কিছু কথা পরিপাক হচ্ছিলো মনে হয়। যাক ভালোই হলো। বাচা গেছে।
.
ক্লাস শেষ করে আমি আর আওয়াব সিড়ি দিয়ে নিচে নামছিলাম।
.
-এখন কোথায় যাবি, আওয়াব?
-দেখি ক্যান্টিনে যেয়ে কিছু চা-কফি খেতে পারি কিনা
-চল তাহলে
.
এমন সময় পিছন থেকে জনির ডাক শুনতে পেলাম,
.
-হুজুরস!! ও হুজুরস!!
.
-আমি একটু রাগত স্বরে বলে উঠলাম “কি ভাই তোর সমস্যা কি, আমাদের কি নাম ধাম নাই নাকি, হ্যা?” আওয়াব আমাকে ইশারায় আর কথা বাড়াতে নিষেধ করে দিলো।
.
- এত রাগ করার কি হলো? বন্ধুদের ডাক ও দিতে পারবো না নাকি? জনি প্রশ্ন ছুড়ে দিলো। আওয়াব সামান্য হেসে বলে উঠলো কেন পারবি না অবশ্যই পারবি।
.
-চল ক্যান্টিনে যাই, চা-কফি পিয়ে আসি। যাবি তোরা?
.
ডান হাতের পাঞ্জাবীর স্লিভটি সামান্য সরিয়ে ঘড়ি দেখলো আওয়াব।
.
-হুম, যাওয়া যায় তো। আসলে আমরাও ওদিকেই যাবার চিন্তা করছিলাম। যোহরের নামাযের জামাতের এখনো প্রায় ৪৫ মিনিট বাকী তাহলে যাওয়াই যায়। আর তাছাড়া ক্যান্টিন থেকে ভার্সিটির মসজিদ বেশি দূরেও না। চল যাওয়া যাক।
.
-চল তাহলে।
.
ক্যান্টিনে যেয়ে তিনজনের জন্য ৩টি কফি অর্ডার দিলো জনি। আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলো যে আমাদের আর কিছু লাগবে কি না। আমরা না বলে দিলাম।
.
কফি আনার মাঝের সময়টাতে আওয়াব আবার ঘড়ি দেখলো।ত
.
-থাক, থাক। আর ঘড়ি দেখা লাগবে না। তোদের আর কাজ কারবার!! সারাক্ষন একটা টেনশনের মধ্যে মসজিদে যেতে হবে, জামাত ধরতে হবে। না গেলে এই শাস্তি, গেলে সেই ফযীলত। সারাক্ষন এই ভয়ের মধ্যেই থাকিস তোরা।
.
জনির কথা শুনে সম্ভবত কিছু বলতে যাচ্ছিলো আওয়াব তবে ক্যান্টিনের ভাই কফি নিয়ে আসাতে থেমে গেল আওয়াব।
.
কফির এক চুমুক নিয়ে…………..
.
-তো জনি কি জানি বলছিলি? কি জানি ভয় সয়ের কথা বলছিলি?
.
বলছিলাম তোদের অবস্থা। সারাক্ষন একটা ভয় না হলে ফযীলতের লোভ। জাহান্নাম জান্নাত এগুলোর ভয়।
.
-তো এতে কি হয়েছে?
.
-কোনো স্বাধীনতা নাই, নিজস্বতা বলতে কিছু নেই। মেয়েদের দিকে তাকানো যাবেনা, গান শুনা যাবেনা তাহলে এই শাস্তি দেওয়া হবে নিজের টাকা অন্যকে দান করে বেড়াতে হবে, পাঁচ পাঁচ বার নামায পড়তে হবে তাহলে এই ফযীলত এই পুরষ্কার। ধর্ম জিনিসটাই এমন শুধু লোভ দেখাবে না হয় ভয় দেখাবে।
.
-আচ্ছা, জনি। তুই কি ডগলাস ম্যাকগ্রেগরের ‘X’ & ‘Y’ থিওরীর কথা জানিস?
.
-একটু বিরক্ত হয়ে জনির উত্তর “আমি বলি কি আর আমার সারিন্দা বাজায় কি?”
.
-এটা তোর কথার প্রসঙ্গেই বলা। জানিস কি এই দুই থিওরীর ব্যাপারে?
.
-নাহ, মনে পড়ছে না তো। এর সাথে আমার কথার কি সম্পর্ক?
.
-একটু অপেক্ষা কর, জনি। তুই কি কিছু জানিস এই ব্যাপারে? আমাকে উদ্দেশ্য করে আওয়াবের প্রশ্ন
-হুম, জানি তো। আমি বললাম
.
-আচ্ছা, তাহলে ‘X’ থিওরীটার সারসংক্ষেপ আমাদের বলতো।
.
-১৯৬০ সালে সোশ্যাল সাইকোলজিস্ট ডগলাস ম্যাকগ্রেগর তার The Human Side of Enterprise বইতে ব্যবস্থাপনার দুইটি থিওরী দেন যা Theory X ও Theory Y নামেই সুপরিচিত। “X” থিওরীর অন্যতম প্রতিপাদ্য বিষয় হলো মানুষ কাজ অপছন্দ করে, কাজ করতে চায়না, কাজ করতে উদ্দীপনা পায় না তাই তাদেরকে কাজ করার জন্য একটু ভয় দেখাতে হয়, তাদের দিয়ে কাজ আদায় করে নিতে হয়, তারা কাজে উদ্দীপনা পায় না তাই তাদেরকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য পুরষ্কারের ব্যবস্থা করতে হয় তাদেরকে প্রলুব্ধ করার জন্যে।
.
-ঠিক বলেছিস। আচ্ছা, জনি তোর কি মত এই ব্যাপারে?
.
-কি আবার হবে?
.
-এখানে ম্যাকগ্রেগর ও বলেছেন মানুষ কাজ করতে চায়না ভয় অথবা পুরষ্কার ছাড়া তাই তাদেরকে প্রলুব্ধ করতে হয়।
.
-তাই তো দেখছি।
.
-আরেকটু ভালো করে লক্ষ্য কর। চাকুরী ক্ষেত্রে ভালো কাজের জন্য প্রমোশন আছে, কখনো কোনো অসদুপায় উপায় অবলম্বন করলে শাস্তির ব্যবস্থা আছে তাই না?
.
-হুম।
.
-শাসন বিভাগের বিভিন্ন আইন আছে, যেখানে বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি বর্ণনা করা আছে। চুরি করলে জেল, জরিমানা, খুন করলে মৃত্যুদন্ড ইত্যাদি। আছে না?
.
-হ্যা।আছে।
.
-এই কারনে কি কখনো তুই বা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ শাসন বিভাগকে দায়ী করবে যে শাসন বিভাগ মানুষের স্বাধীনতা হরণ করেছে। ভয় দেখিয়ে চুরি, ডাকাতি করতে দেয়নি? বা অফিসে প্রমোশন দেওয়া হলে কি কেউ কি বলবে যে না “তাকে লোভ দেখানো হয়েছে, তাকে প্রলুব্ধ করা হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি?”
.
-নাহ। তা বলবো না। তবে আমার স্বাধীনতা হরণ করার অধিকার কারো নেই। আর তাছাড়া নিজের বিবেক মত ভালো হয়ে চললে আর খারাপ থেকে বিরত থাকলেই তো হলো।
.
-আচ্ছা, কেউ যদি নিজের মেয়ের সাথে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়। এটাকে তুই কেমন দৃষ্টিতে দেখবি?
.
-ছি!ছি! এমন মানুষ ও হয় নাকি? এটা তো অত্যন্ত নিকৃষ্ট কাজ।
.
- ২০১৩ সালের পরিসংখ্যান মতে আমেরিকায় ৩-৪ জনের মধ্যে ১ জন এবং ৫-৭ জনের মধ্যে ১ জন ছেলে পরিবারের সদস্যদের দ্বারা নিপীড়িত হয়। তাছাড়া আমেরিকাতে প্রবল ভাবে অযাচার বিদ্যমান। National Crime Records Bureau (NCRB) এর রিপোর্ট মতে, ভারতে ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সালে প্রায় ৩০.৭% অযাচার বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি কিছু কিছু দেশে তো এই ধরনের সম্পর্ককে বৈধ করার আইন প্রনয়ন ও করা হচ্ছে। একটু খোজাখুজি করলে এই সম্পর্কে তুই অনেক তথ্য পেতে পারিস।
.
-কি বলছিস?
.
-হ্যা, এটাই সত্য।
.
-ভয়ানক
.
-তাহলে এখন বল আমাকে কিভাবে তুই শুধুমাত্র বিবেককে স্ট্যান্ডার্ড করে ভালো খারাপের সিদ্ধান্ত কিভাবে নিবি? কেউ এই জঘন্য কাজকে বৈধ মনে করে আর কেউ একে অত্যন্ত ঘৃনার চোখে দেখে।
.
-আসলেই তো মুশকিল।
.
-হ্যাঁ, মুশকিলই। কারন মানুষের বিবেক সীমাবদ্ধ, বিবেক সবকিছু বুঝে উঠতে পারবে না কখনোই, মানুষের এই সীমাবদ্ধতা থাকবেই। বিবেক স্থান, কাল, পাত্র ভেদে পরিবর্তিত হতেই থাকে, তাই বিবেক কখনোই সার্বজনীন কোনো স্ট্যান্ডার্ড বলে বিবেচিত হতে পারেনা।
.
-জনি নিশ্চুপ।
.
-আল্লাহ আমাদেরকে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্যে কে কে তার অনুগত হয় আর কে হয়না। তিনি আমাদেরকে তার বিধানাবলী সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করে দিয়েছেন। তিনি এই দুনিয়ার পরীক্ষার ফলাফল হিসেবে কিছু লোককে জান্নাতে আর জাহান্নামে দিবেন। তিনি বারবার দুনিয়ার পরীক্ষার কথা কুরআনে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, সতর্ক করেছেন জাহান্নাম থেকে আর আশা দেখিয়েছেন জান্নাতের। যাতে কিয়ামতের দিবস যেদিন পরিপূর্ণ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে সেদিন পরিপুর্ণ হিসাব নিকাশ হতে পারে। যারা আল্লাহর সতর্ক বানীকে থোড়াই কেয়ার করেছে, যারা আল্লাহর বিধানাবলীকে অস্বীকার করেছে বা স্বীকার করা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃত ভাবে মেনে চলেনি, যারা দুনিয়ার ভোগ বিলাসে ব্যস্ত থেকে নিজের, কখনো পরিবার, বা সমাজ রাষ্ট্রের ক্ষতি করেছে আল্লাহর আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে, সেদিন আর তাদের আর কোনো অযুহাত পেশ করার সুযোগ থাকবে না। তাদের শাস্তি মূলত আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যিনি আসমান ও জমিনের একচ্ছত্র অধিপতি তার বিধানাবলী অস্বীকার করে নিজের ইচ্ছামত জীবনযাপন ও এর ফলস্বরুপ সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষতির জন্য প্রতিদানস্বরুপ। অপরদিকে, যারা দুনিয়াকে সত্যিই পরীক্ষার স্থান হিসেবে ব্যবহার করেছে, তারা অবাধ্যদের মত লাগামহীন স্বাধীনতায় ডুব দেয়নি, তারা আল্লাহর বিধানকে জীবনে সবক্ষেত্রে সর্বোচ্চে স্থান দিয়েছে, তারা দুনিয়ার ভোগ বিলাসে মত্ত না থেকে আল্লাহর আনুগত্য দ্বারা জীবন সাজিয়েছে, কখনো তাদের ওপর বিপদের পাহাড় ধ্বসে পড়েছে, পার্থিব দুখ কষ্ট তাদের অন্তরকে ব্যথিত করেছে, তাদের অন্তর কখনো এফোড় ওফোড় হয়ে গেলে ও তাদের অন্তর কখনোই আল্লাহর আনুগত্য থেকে ফিরে যায়নি অনড় ও অটল ছিলো আল্লাহর রাস্তায়। কখনো তাদের কষ্টার্জিত অর্থ গরীব দুখীকে দিতে হয়েছে, কখনো বা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু জীবনই আল্লাহর আনুগত্য করতে বিলিয়ে দিতে হয়েছে আল্লাহর রাস্তায়। তাদের জান্নাতের পথ কখনোই ফুলেল শয্যা নয় বরং তা কন্টকাকীর্ণ পথ, তবে তারা আল্লাহর জন্যেই সবর করেছে দুনিয়ায়। আর এজন্যেই আল্লাহ কুরআনে অসংখ্য বার জান্নাতের আশা ও সুসংবাদ দিয়েছেন যাতে তারা তাদের পথে অটল থাকে। আর তার ফলাফলস্বরুপ আল্লাহর রহমতে তাদের কষ্ট, ধৈর্য ও তারা মানুষের যে মঙ্গল করেছে তার ফলাফল তারা পেয়ে যাবে আখিরাতে জান্নাত লাভের মাধ্যমে। তবে মুমিন ব্যক্তির জন্য আশা ও ভয় একটি পাখির দুটি ডানার মত উড়তে হলে দুটিই প্রয়োজন, মুমিন আল্লাহর রহমতের আশায় আশান্বিত থাকবে আবার বিপরীত দিকে আল্লাহর আযাবের ও ভয় করবে।
আশা করি বুঝতে পেরেছিস।
.
জনি কোনো কথা না বলে বিল দিতে চলে গেলো। আওয়াব যেতে বাধা দিলো “আজকের বিলটা না হয় আমিই দেই”। জনিও বাধা দিলো না আওয়াবকে। আওয়াব নিজের ঘড়ি দেখে,
.
-আর ২০মিনিট মাত্র বাকী জামাত শুরু হতে। আমরা আসি জনি।
-হুম, ঠিক আছে।
.
আমরা ও মসজিদ অভিমুখে চললাম।
.
=====
লেখকঃ হোসাইন শাকিল [ফেসবুক id: Hossain Shakil]
#সত্যকথন
.
[২] https://www.theatlantic.com/…/america-has-an-incest…/272459/
[৩] http://archive.indianexpress.com/…/alarming-increas…/741160/
[৪] সূরা মুলক, ৬৭ঃ২

অফিসিয়াল ওয়েব সাইট ঃ shottokothon.com  এবং response-to-anti-islam.com

ফেসবুক পেজঃ fb.com/shottokothon1

Post a Comment

Previous Post Next Post