একবার আমি আর আমার এক বন্ধু বসে গল্প করছিলাম। হঠাৎ বন্ধুর ফোন এলো। বন্ধুর স্ত্রী ফোন দিয়েছে। পারিবারিক কোনো একটা বিষয় নিয়ে তারা কথা বলছিল। সম্ভবত স্ত্রী কোনো সাংসারিক চাহিদার কথা তুলে ধরছিল। বন্ধুটি আমার সাথে হেসে হেসেই কথা বলছিল। কিন্তু তার স্ত্রীর সাথে ক্ষণিক কথার পরই সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। গলার আওয়াজ বেড়ে যায়। কপালে ভাঁজ পড়ে। সুন্দর হাসিমাখা মুখটি তার কিছুক্ষণের মধ্যেই কুৎসিত আকার ধারণ করে। তার কণ্ঠে ছিল ধমক আর করুণা মিশ্রিত ক্রোধাগ্নি।
ফোন কেটে দেবার পর আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এভাবে কথা বলার মানে কি? উত্তরে সে বলল, এভাবেই নাকি তার স্ত্রীর সাথে কথা বলতে হয় নইলে বুঝতে চায় না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই বাণীটি সে জানে কিনা জিজ্ঞেস করলাম। যাতে বলা হয়েছে—তোমাদের (পুরুষদের) মধ্যে তারাই উত্তম, যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম।” সে চুপ করে মাথা নাড়লো। তার মানে সে জানে। বললাম—“সে (বন্ধুর স্ত্রী) ভুল করতে পারে তাই বলে কি তুমিও ভুল করবে?” সে চুপ করেই থাকলো। আমি বলে চললাম—“রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন নারীদের সাথে সদাচারণের, কোমল ব্যবহারের। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনোই তার কোনো স্ত্রীর সাথে অসাদাচরণ করেছেন বলে জানা যায় না। এমনকি তিনি কোনো লোকের সামনে, উম্মাহর সামনে তার কোন স্ত্রীর খারাপ গুণাবলীর কথাও প্রকাশ করেননি।” স্ত্রী আল্লাহর পক্ষ হতে উপহার। আল্লাহর পক্ষ হতে আমানত।
আজকে তুমি যে নারীর সাথে দুর্বব্যহার করছো সেতো কারো না কারো মেয়ে, কারো না কারো বোন! তুমি কি তোমার মেয়ের সাথে এমন আচরণ দেখে খুশি হতে? তোমার বোনের সাথে দেখে? নিশ্চয়ই না।
তুমি একজন মুসলিম। তোমার আচরণ সমাজের আর দশজনের চেয়ে অবশ্যই উত্তম হতে হবে। আচ্ছা, তার কি এমন কোনো ভালো গুণ নেই যার কারণে সে তোমার ভালো আচরণ প্রাপ্য?
-হ্যাঁ, অবশ্যই আছে।
-তাহলে তুমি কি তোমার ভুলটা বুঝতে পেরেছো?
-হ্যাঁ। কিন্তু কী করব মাথায় আসছে না।
-যাও। ভালো পুরুষের পরিচয় দাও। তাকে স্যরি বল। ভালো গিফট কিনে নিয়ে যেও।
-ঠিকাছে। আসলেই আমার ভুল হয়েছে। আমি যাচ্ছি।
-ফি আমানিল্লাহ। আল্লাহ তোমার সহায় হোন।
..
শাইখ আহমাদ মু সা জিব রীল ও মোহাম্মাদ হোবলস-এর লেকচার থেকে সংকলন ‘ফুল হয়ে ফোটো’ বই থেকে চয়নকৃত।
Post a Comment