অধিাংশ মানুষই জানেই না কেন মুসলিমদের নিকট মসজিদুল আকসা বা বায়তুল মাকদিস এতোটা গুরুত্বপূর্ণ!
যেখানে ইহুদিরা সমগ্র ফিলিস্তিনই দখল করে নিয়েছে, সেখানে মাত্র ১৪ একর জায়গার জন্য কেনো এতো অত্যাচার নির্যাতনের পরেও ফিলিস্তিনের মুসলমানরা বারবার মসজিদের দিকে ধাবিত হচ্ছে!!
১. এখানেই রয়েছে হযরত ইব্রাহিম এবং মূসা (আ) সহ অসংখ্য নবী রাসুলের কবর।
২. এখানেই আল্লাহর বন্ধু প্রিয় নবী রাসুল ছাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া ছাল্লাম সকল নবী রাসুলদের এবং ফেরেস্তাদেরকে নিয়ে নামাজ পড়ছিলেন। সেই জামাতের ইমাম ছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া ছাল্লাম, এবং এই জামাতে মতান্তরে প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার নবী রাসুল ছিলেন।
৩. এখান থেকেই হজরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া ছাল্লাম বোরাকে করে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করছিলেন।
৪. এই মসজিদের নির্মাণের সাথে জড়িয়ে আছে হজরত আদম আঃ এবং সুলাইমান আঃ এর নাম।
৫. এর সাথে জড়িয়ে আছে খলিফা হজরত উমর (রা) এর সেই বিখ্যাত উটের বিরল ঘটনা।
৬. এখানের সাথেই জড়িয়ে আছে দ্যা গ্রেট সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবীর অসংখ্য স্মৃতি।
৭. এই মসজিদের পাথরের গায়ে লেখা রয়েছে সম্পূর্ণ সূরা ইয়াসিন।
৮. এই মসজিদের জন্য জ্বীনদের দ্বারা পাথর উত্তোলন করা হয়েছে সাগরের তলদেশ থেকে। যা কিনা কোন মানুষের পক্ষে অসম্ভব!!!
৯. এই মসজিদে ২ রাকাআ'ত নামাজ আদায় করার জন্য ২৫ হাজার রাকাআ'ত নামাজের সওয়াব লিখা হবে।
১০. পবিত্র কোরআনে সবচেয়ে বেশি মহান আল্লাহ এই মসজিদ নিয়ে আলোচনা করছেন।
তোমাদের কেউ যদি কোনো খারাপ কাজ বা বিষয় দেখে তাহলে সে যেন হাত দিয়ে তা পরিবর্তন করে দেয়, যদি তা করতে অপারগ হয় তাহলে যেন মুখ দিয়ে তার প্রতিবাদ করে, যদি তাও করতে সক্ষম না হয় তাহলে যেন অন্তর দিয়ে তা ঘৃণা করে, আর এটাই হচ্ছে ঈমানের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বলতম স্তর। (বুখারি, হাদিস নং: ১৯৪)
আল আকসা একসময় ইহুদিদের দখলে ছিলো, যখন তারা সত্যনিষ্ঠ ছিলো, অর্থাৎ মুসা আঃ এর শরীয়তকে অনুসরণকারী ইহুদীগণ! এরপর যখন তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে, তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা, আল আকসার কতৃত্ব খ্রিস্টানদেরকে প্রদান করেছেন, যখন তারা ঈসা আঃ এর প্রতি সত্যিকার ঈমান আনয়ন করেছিল, এরপর দীর্ঘদিন তারা আল আকসাকে ঐশী নির্দেশনায় লালন করেছে, এরপর এলো খ্রিস্টানদের অধঃপতনের যুগ, অর্থাৎ যখন তারা ঈসা আঃ কে আল্লাহর পুত্র সাব্যস্ত করে চুড়ান্তভাবে পথভ্রষ্ট হলো!
এরপর এসেছে মুসলিমদের কতৃত্ব ও আবাদের যুগ!
যদিও ইসলাম পরবর্তী যুগে আল আকসা থেকে মক্কা ও মদিনার গুরুত্ব অত্যাধিক হবার কারণে, জেরুজালেম আল আকসা এতোটা লাইমলাইটে আসেনি, কিন্তু তৃতীয় স্থানে তার জায়গা হয়, এবং গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র স্থান হিসেবেই স্বীকৃত থাকে!
এরপর দীর্ঘকাল রক্তাক্ত ক্রুসেড সিরিজ পালাক্রমে যবরদখলের লড়াই চলেছে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের মধ্যে! সর্বশেষ সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর নেতৃত্বে মুসলিমদের বিজয়ের মাধ্যমে দীর্ঘকালের লড়াইয়ের মোটামুটি সমাপ্তি ঘটে!
কিন্তু কয়েক হাজার বছর পর এবার নতুন প্রতিপক্ষ ইহুদিরা, অর্থাৎ ইহুদিদের সাথে মুসলিমদের বলা চলে এটাই প্রথম লড়াই, যদিও তাদের সাথে খ্রিস্টানদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ইতিহাস রয়েছে, বর্তমানে মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে তারা এগিয়ে রয়েছে কিন্তু তার মানে এই নয় যে, মুসলিমরা হেরে গেছে!
বরং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভবিষ্যৎ বাণী অনুযায়ী, ক্বেয়ামতের পূর্বে এটাই চুড়ান্ত লড়াই, আর এই লড়াই কবে নাগাদ শেষ হবে সেটা একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ভালো জানেন, এই লড়াইয়ে দাজ্জাল, ইমাম মাহদী, ঈসা আঃ সবার আবির্ভাব ঘটবে, আর এখান থেকেই দাজ্জাল আর ইহুদিরা পৃথিবীর ইতিহাসে বিলুপ্ত প্রজাতির ইতিহাসে নাম লেখাবে!
আসুন পবিত্র এ ভূমি রক্ষার্থে আমাদের মুসলিম ভাইদের যথাসাধ্য সাহায্য করি এবং আল্লাহর নিকট দোয়া করি। আর জালিমদের যথাসাধ্য রুখে দিতে চেষ্টা করি।
[সংগৃহীত]
Post a Comment