১। ওযুর শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা।
২। দু’হাতের কব্জী পর্যন্ত তিনবার ধৌত করা।
৩। কুলি করা।
৪। নাকে পানি দিয়ে বাম হাত দ্বারা নাক পরিষ্কার করা। হাদীসে আছে,
অতঃপর রাসূল স. তিনবার হাতের কব্জি পর্যন্ত ধৌত করলেন। অতঃপর কুলি করলেন। এরপর তিনবার নাকে পানি দিলেন। এরপর তিনবার সমস্ত মুখম-ল ধৌত করলেন। -[বুখারী, মুসলিম]
৫। রোযাদার ব্যতীত অন্যদের জন্য গড়গড়া সহকারে কুলি করা এবং নাকের ভিতরে যথাযথভাবে পানি দিয়ে নাক ঝেড়ে পরিষ্কার করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
তুমি নাকের ভিতর ভালোভাবে পানি ঢুকিয়ে ঝেড়ে পরিষ্কার কর, তবে তুমি রোযাদার হলে অতিরঞ্জিত করবে না। -[নাসায়ী: ৮৭, আবু দাউদ: ২৩৬৬]
৬। মেসওয়াক করা, ওযুর মধ্যে কুলি করার সময় মেসওয়াক করতে হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
আমার উম্মতের জন্য কষ্টসাধ্য হওয়ার আশঙ্কা না হলে আমি তাদের প্রত্যেক ওযুর সময় মেসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম। -[নাসায়ী, মুসনাদে আহমাদ: ৯৯২৮]
৭। মুখ ধোয়ার সময় ঘন দাঁড়িকে হাত দ্বারা খিলাল করা। হাদীস শরীফে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওযু করার সময় দাঁড়ি খিলাল করতেন। -[তিরিমিযী]
৮। মাথার সামনের অংশ হতে মাসেহ শুরু করতঃ মাথার পিছনের অংশ পর্যন্ত নিয়ে আবার পিছন দিক হতে মাসেহ শুরু করে সামনের অংশে গিয়ে মাসেহ শেষ করা। হাদীস শরীফে এসেছে,
‘এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথার সামনের অংশ হতে মাসেহ শুরু করতঃ পিছনের অংশে গিয়ে মাসেহ করার পর পুনরায় পিছন দিক হতে সামনের অংশে গিয়ে মাসেহ শেষ করলেন।’ -[বুখারী: ১৯২, মুসলিম: ২৩৫]
৯। উভয় হাত-পায়ের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা। হাদীস শরীফে রয়েছে,
ওযুর প্রত্যেকটি অঙ্গ অতি উত্তম ও যথাযথভাবে ধৌত করে ওযু কর এবং আঙ্গুলসমূহ খিলাল কর। -[তিরমিযী: ৭৮৮, নাসায়ী: ৮৭, ইবনে মাযাহ: ৪৪৩]
১০। ডান দিক হতে ওযু শুরু করা। অর্থাৎ, হাত-পা ধৌত করার সময় প্রথমে ডান হাত, পরে বাম হাত, অনুরূপ প্রথমে ডান পা এর পরে বাম পা ধৌত করা। হাদীস শরীফে এসেছে, আম্মাজান আয়শা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সকল কাজ ডান দিক দিয়ে শুরু করা পছন্দ করতেন, যেমন, ওযু করা, চুল-দাঁড়ি আঁচড়ানো ও জুতা পরিধান করা ইত্যাদি। -[বুখারী: ১৬৮, মুসলিম: ২৬৮]
১১। মুখমণ্ডল ও হাত-পা তিনবার করে ধৌত করা।
১২। ওযুর শেষে নিম্নোক্ত দোআ পাঠ করা,
‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তার কোন শরীক নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।
ফজিলত: যে ব্যক্তি ওযু করার পর এই দোয়াটি পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতের ৮টি দরজা খুলে দেওয়া হবে। কেয়ামতের দিন সে উক্ত আটটি দরজার যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। - [মুসলিম: ২৩৪]
১৩। বাড়ি হতে ওযু করে মসজিদে যাওয়া। হাদীস শরীফে আছে,
যে ব্যক্তি পবত্রিতা অর্জন করে ফরজ নামায আদায় করার জন্য মসজিদের দিকে রওয়ানা হল তার প্রতিটি কদমে একটি একটি করে গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে, আরেকটিতে তার জন্য একটি করে দরজা বুলন্দ হবে। -[মুসলিম: ৬৬৬]
১৪। ওযুর প্রত্যেকটি অঙ্গ পানি দেওয়ার সময় বা পানি দেওয়ার পর ভাল করে ধৌত করা, যাতে অঙ্গের প্রতিটি লোমের গোড়ায় পানি পৌঁছে।
১৫। ওযুর পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়া। হাদীস শরীফে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একমুদ (এক ধরণের পরিমাপ, আধারসের পরিমাণ) পরিমাণ পানি দ্বারা ওযু করতেন। -[বুখারী: ২০১]
১৬। হাত-পা ধোয়ার সময় তার ফরজ সীমার চেয়ে সামান্য পরিমাণ অতিরিক্ত ধৌত করা।
ইমাম মুসলিম রহ. তার সহীহ মুসলিমে হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. হতে বর্ননা করেন যে, তিনি যখন ওযু করেন তখন হাত ধোয়ার সময় বাহুতেও পানি দিয়ে ধৌত করলেন। অনরূপ যখন পা ধৌত করেন তখন টাখনুর উপরেও পানি দিয়ে ধৌত করলেন। অতঃপর বললেন, আমি এভাবেই রাসূল স. কে ধৌত করতে দেখেছি।
১৭। ওযুর পর দু’রাকাত নামায পড়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যে ব্যক্তি আমার দেখানো এই পদ্ধতিতে ওযু করে মনের মধ্যে অন্য কোন কিছুর চিন্তা করা ব্যতীত দুই রাকাত নামায পড়বে, তার পূর্বের সমস্ত (সগীরা) গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। -[বুখারী: ১৫৯ ও মুসলিম: ২২৬] মুসলিম শরীফের অন্য বর্ণনায় আছে, ঐ ব্যক্তির জন্য বেহেশত ওয়াজিব হয়ে যাবে।
দোয়া গুলি বাংলার সাথে আরবিতে দিলে ভালো হতো।
ReplyDeletePost a Comment