যদি অপমানিত হতে হয় সমস্ত সৃষ্টিকুলের সামনে.... তখন কতোটাই না খারাপ লাগবে!

অপমান মানুষের সবচেয়ে ঘৃণিত বিষয়। কেউই অপমানিত হতে চায় না।

অপমানের আবার বিভিন্ন মাত্রা আছে। অপমান যদি হতে হয় একাকি অবস্থায়, তা এক রকম, যদি হয় কিছু মানুষের সামনে তা আরেক রকম; যদি তা হয় অনেক মানুষের সামনে তা অন্য রকম। যতো বেশী মানুষের সামনে অপমানিত হতে হয় তার জালার তিব্রতা ততোই বেশী হয়।

অপমান যদি কেবল সেই অপমানের মুহুর্তের সাথেই সম্পৃক্ত থাকে--যার কোনো স্থায়িত্ব নেই--তার অনুভুতি এক রকম, কিন্তু অপমান যদি এমন হয় যার বোঝা সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে তা আবার আরেক রকম।

অপমান যদি হয় কেবলই ব্যক্তিত্বে আঘাত-- শরীরের উপর নয়, তা এক রকম, কিন্তু অপমান যদি আঘাত হানে একই সাথে ব্যক্তিত্ব ও শরীরের উপর তা আরেক রকম।

কিন্তু কেমন যন্ত্রণা হবে সেই অপমানের যদি তা হয় মানব দানব তথা গোটা সৃষ্টিকুলের সামনে! একেবারে প্রথম সৃষ্টি থেকে নিয়ে সর্বশেষ সৃষ্টির সামনে। যেখানে আপনার প্রিয়জন-প্রিয়তমা, বাপ-চাচা, দাদা-পরদাদা, ছেলে-সন্তান, নাতি-পুতি, আত্মিয়-সজন, পাড়া-প্রতিবেশী সকলে তো থাকবেই! থাকবেন জিবরাঈল, মীকাঈল, ইসরাফীল সহ সকল ফেরেশতাগন! থাকবেন মুহাম্মাদ, 'ঈসা, মূসা, ইবরাহীম আ. সহ সকল নবীগন!

হ্যা, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা তাঁর পায়ের গোছা উম্মোচিত করে দিয়ে সকলকে সাজদা করতে আহবান করবেন কিন্তু যারা আজ সুস্থ-সবল থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সাজদা করছে না, কিংবা করছে কেবল লোক-দেখানোর জন্য তারা সেদিন সাজদা করতে পারবে না। তাদের মাজা-কোমর-পিঠ এক খণ্ড কাঠের মতো শক্ত হয়ে যাবে। তারা মাথা নত করতে পারবে না।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ "যেদিন (সাক) পায়ের গোছা উম্মোচিত হবে এবং তাদেরকে সাজদা করার জন্য ডাকা হবে, কিন্তু তারা তা করতে সক্ষম হবে না। তখন তাদের চোখ নীচু হয়ে যাবে; অপমান আর লাঞ্ছনা তাদের উপর চেপে বসবে। কারণ, তাদেরকে (দুনিয়াতে) সুস্থ অবস্থায় সাজদা করতে ডাকা হয়েছিলো, (কিন্তু তারা তা করেনি)। (আল কুরআন ৬৮ঃ৪২-৪৩)

আবু সা'ঈদ রা. বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি "আমাদের প্রতিপালক যখন তার পায়ের গোড়ালি খুলবেন তখন লোকদেখানো সাজদাকারীরা ছাড়া ঈমানদার নারী-পুরুষ সকলেই তাকে সাজদা করবে। তারা সাজদা করতে চাইলে তাদের পিঠ এক খণ্ড কাঠের মতো শক্ত হয়ে যাবে। (বুখারী ৪৯১৯, মুসলিম ১৮২,)

আমরা জানি না আমাদের কার দুয়ারে কখন মৃত্যু এসে দাঁড়াবে। যদি আমরা কেউ এখনো নিয়মিত সালাতে অভ্যস্ত না হয়ে থাকি তাহলে পরবর্তি ওয়াক্ত থেকেই শুরু করি। আর যারা আদায় করছি তারা নিজেদের অন্তরের গভীরে আরেকবার নজর বুলিয়ে নেই--সত্যিই একমাত্র আল্লাহর জন্য সালাত আদায় করছি তো!

অন্যথায় অপেক্ষা করছে সেই দিন... অপমানের দিন... লাঞ্ছনার দিন...।

আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফাজত করুন। আমীন!!!

1 Comments

  1. আমীন ইয়া রব্বুল আলামীন

    ReplyDelete

Post a Comment

Previous Post Next Post