ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ : নতুন একটি ধর্ম

আজকের দিনে পশ্চিমা সভ্যতার মূলমন্ত্র হলো ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র। পশ্চিমা জাতিগুলো এই আদর্শকে সর্বোত্তম ও সবার জন্য অনুসরণীয় মনে করে। যেহেতু পশ্চিমারা মনে করে যে, বর্তমান পৃথিবীতে তারাই সবচেয়ে উন্নত জাতি; কাজেই তারা যে জীবনব্যবস্থা বা সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে, সেটা সমগ্র মানবজাতির কাছেই উত্তম ও উন্নত বলে পরিগণিত হতে হবে।

ধর্মনিরপেক্ষতা বা Secularism হলো এমন এক সামগ্রিক বিশ্বাস, যা সকল প্রকারের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং চর্চাকে প্রত্যাখ্যান করে। জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মের কোন প্রভাব থাকতে পারবে না, নাগরিক নীতিমালা প্রণয়ন ও জাতীয় কর্মকান্ডে ধর্মীয় কোন মূল্যবোধ থাকতে পারবে না এ নীতিতে বিশ্বাসী।


মধ্যযুগে ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গের মধ্যে জাগতিক বিষয়ধাকি তুচ্ছ জ্ঞান করা এবং কেবল ধর্ম ও পরকালীন জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়াধি নিয়ে ব্যস্ত থাকার ঝোঁক ছিলো। এ প্রবণতার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ রেনেসাঁ যুগে মানবতাবাদ বিকাশের দাবি নিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রকাশ করলো।

১৬ এবং ১৭ শতাব্দীতে ইউরোপিয়ান সভ্যতায় এক অভিনব ব্যাপার ঘটতে থাকে। আর তা হলো মানুষের মনোবৃত্তি এবং চিন্তা-চেতনার ধর্মনিরপেক্ষতাকরণ।

মধ্যযুগের শেষ দিকে মানুষ, মানুষের বোধশক্তি, ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞান, জাগতিক উচ্চাকাঙ্খা এবং বস্তুগত ভোগ-বিলাস, সুখ-সমৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে নতুন ধরণের চিন্তাভাবনা ব্যাপকতা লাভ করে। ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব এবং ভোগ-বিলাস বিমুখতা লোপ পায় ্। আর এভাবেই শুরু হয় নতুন এই ধর্মের দুনিয়ামুখী প্রচার ও প্রসার।


বই: সভ্যতার সংকট
লেখক: বিলাল ফিলিপ্স

Post a Comment

Previous Post Next Post