আমাদের প্রজন্ম পর্ণোগ্রাফি দ্বারা ব্যাপকভাবে আক্রান্ত, এই বিষয়টা খুব তরুণ বয়স থেকেই শুরু হয়। পর্ণোগ্রাফি যেসব সমস্যা তৈরি করে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, এটি বিনোদন পাবার জন্য অন্য মানুষকে পণ্য হিসেবে বিবেচনা করতে শেখায়।
আমরা এই বিষয়ে গবেষণার পাশাপাশি ডেভিন নামের একজন কলেজ ছাত্রের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। পর্ণোগ্রাফি কিভাবে তার জীবনকে আক্রান্ত করেছে, সে বিষয়ে আমরা তার সাথে কথা বলেছি এবং পর্ণোগ্রাফি কিভাবে তার মানসিকতার পরিবর্তন করেছে, এ ব্যাপারে সে তার বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে।
নিচের উক্তিগুলো ডেভিনের সাক্ষাৎকার থেকে নেয়া, সেই সাথে কিছু আলোচনা তুলে ধরা হলোঃ
“আমি যখন প্রথম পর্ণোগ্রাফি দেখি তখন আমি ৭ম শ্রেণীর ছাত্র। আমি ইন্টারনেটে একটি পর্ণ ওয়েবসাইট এর বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। এটা অনেক জঘন্য ছিল। ৮ম শ্রেণীতে থাকাকালীন অবস্থায় আমি পর্ণোগ্রাফিতে পুরোপুরি অভ্যস্ত হয়ে পড়ি।”
এটা প্রমানিত যে পর্ণোগ্রাফি একটি ক্রমবর্ধমান আসক্তি। অসংখ্য জরিপে দেখা গিয়েছে, পর্ণোগ্রাফি মানুষের মানসিকতাকে এমন করে দেয় যে, সে অন্য মানুষকে “মানুষ” হিসেবে মর্যাদা দিতে ভুলে যায় এবং অন্যান্যদের সাথে তার সম্পর্কের উপরও খারাপ প্রভাব পড়ে। সে দেহের আকার, আকৃতি ও দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দেখে মানুষকে বিচার করতে থাকে। সে অবচেতন মনেই অন্যান্যদেরকে এমনকি নিজের ভালোবাসার মানুষকে শুধুই বিনোদনের বস্তু হিসেবে ভাবতে শুরু করে, সে এটা ভুলে যায় যে তাদেরও মানুষের মত চিন্তা, অনুভূতি, ব্যক্তিত্ব ও আবেগ আছে। এটা প্রকৃত ভালোবাসার বিপরীত। পর্ণোগ্রাফি নারী-পুরুষকে শুধু যৌন মিলনের উপকরণ হিসেবে কল্পনা করতে শেখায়, যেটি প্রকৃত ভালোবাসাকে হত্যা করে।
“আমি লক্ষ্য করলাম, পর্ণোগ্রাফিতে আমি যেসব চরিত্র দেখতাম, তারা যেন আমার সাথেই অবস্থান করছে। ক্যাম্পাসে হাঁটার সময় যখন মেয়েদের দেখতাম, আমি শুধু তাদের দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো দেখতে পেতাম। বাস্তবিক পক্ষে, আমি না চাইলেও আমার চোখ এই বিষয়গুলোই দেখত। আমি অবচেতন মনে মেয়েদেরকে তাদের দৈহিক আকৃতি দেখে বিচার করতাম। পর্ণোগ্রাফি আমাকে মেয়েদের ব্যাপারে এসব চিন্তা ছাড়া ভালো কোন কিছু চিন্তা করতে বাধা দিয়েছে।”
পর্ণ ভিডিওতে যেসব মানুষদের দেখা যায় তাদেরও একটা বাস্তব জীবন আছে। একজন সাবেক পর্ণো অভিনেত্রী এক সাক্ষাৎকারে পর্ণোগ্রাফি সম্পর্কে বলেছিলেন, “পুরুষরা বারবার আপনার মুখে আঘাত করছে আপনাকে উত্তেজিত করার জন্য এবং এভাবে চলছেই। পর্ণোগ্রাফিতে আপনাকে একটি পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়-অনুভূতিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। এখানকার মানুষগুলো মাদক সেবন করে কারণ তারা এধরনের জীবনকে ভুলে থাকতে চায়।”
এই কথাগুলো শুনেও কি আপনার পর্ণোগ্রাফিকে যৌন উত্তেজক মনে হচ্ছে?
অবশ্যই না। প্রকৃতপক্ষে, পর্ণ ইন্ডাস্ট্রির মানুষদের কাছে যৌনতার সংজ্ঞা এই রকমই।
২০০৫ সালে, ৪০০ জন লোকের উপর জরিপে দেখা যায়, পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত ব্যক্তিরা অন্যদের চেয়ে বেশি একাকীত্ব বোধ করে।
পর্ণোগ্রাফিতে সুন্দর ও আকর্ষণীয় পরিবেশে দুজন মানুষের মধ্যে অপার্থিব যৌন আনন্দের দৃশ্য তৈরি করা হয়-যেটা বাস্তবিক পক্ষে সম্ভব নয়। পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত ব্যক্তিরা বাস্তব জীবনে এ ধরনের অপার্থিব যৌন আনন্দ প্রত্যাশা করে, ফলে তারা অসন্তুষ্টিতে ভোগে।
“পর্ণোগ্রাফি চরম একাকীত্ব সৃষ্টির একটি মাধ্যম। আমি যখন একাকীত্ব বোধ করতাম তখন পর্ণ দেখতাম এবং এটা আমার একাকীত্ব কমাতে পারত না বরং বৃদ্ধি করত। কখনো একঘেয়ে লাগলে, হতাশ বা নিজের প্রতি রাগান্বিত হলেও আমি পর্ণোগ্রাফিতে ডুবে থাকতাম।”
(তাই এই নোংরা অভ্যাস থেকে দূরে থাকতে একটি দ্বীনীসংঘ প্রয়োজন, যারা এক অপরকে তার রবের কথা স্মরণ করিয়ে দিবে । )
সংগ্রহে: http://lostmodesty.blogspot.com
Post a Comment