যে শাহাদাহ পঠিত হল ভূমি থেকে ৩৫,০০০ ফুট উপরে বাতাসের মধ্যে যখন আমরা চলছিলাম ঘণ্টায় ৯০০ মাইল বেগে

আমি হার্টফোর্ড থেকে লস অ্যাঞ্জেলে যাওয়ার জন্য নর্থওয়েস্ট এয়ারলাইনসে ভ্রমণ করছিলাম। ডেট্রয়েটে ওদের একটি হাব আছে তাই বিমান সেখানে থামল। দুর্ভাগ্যবশত আমার সিটটি ছিল মাঝখানে। চিন্তা করুন, অ্যামেরিকার মধ্যে ৬ ঘণ্টার বেশি সময় ইকনমি ক্লাসের তাও আবার মাঝের সিটে বসে ভ্রমণ করার বিষয়টি কতখানি বিরক্তিকর হতে পারে। দিনটি ছিল শুক্রবার। আমি একটি লম্বা সাদা জুব্বা পরাছিলাম, তার উপর ছিল (জুব্বার উপর পরিধানের) একটি মিশলাহ এবং মাথায় ছিল সাদা পাগড়ী। হার্টফোর্ড এয়ারপোর্টে এক মহিলা আমার কাছে এসে বলল, ‘আপনি কী সুলতান?’ আমি উত্তর দিলাম, ‘জি না, ম্যাডাম, এখনো হইনি।’ তারপর দুজনেই হাসলাম। আমরা বিমানে উঠলাম এবং ডেট্রয়েটে দিকে এটা উড়া শুরু করল। জানালার পাশের লোকটি ডেট্রয়েটে নেমে গেলো। তারপর একজন সাদা চামড়ার অ্যামেরিকান মহিলা এসে বসল।


বিমান যখন আবার উড়া শুরু করল আমি কুরআনটা বের করে সূরা আল-কাহাফ পড়া শুরু করলাম। শুক্রবারে সূরা কাহাফ পাঠ করা সুন্নাহ। আমি খেয়াল করছিলাম জানালার পাশের সেই মহিলাটি পাশ থেকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে এবং আমি কী পড়ছি তা দেখার চেষ্টা করছে। কয়েক মিনিট পর সে আমাকে বলল, ‘আপনি কী পড়ছেন?’


‘ম্যাডাম, আমি কুরআন পড়ছি।’
‘এটা কোন ভাষা?’
‘আরবী’
তারপর মহিলাটি কাত হয়ে সামনের সিটের নিচে রাখা তার হাতব্যাগটি থেকে একটা লকেট বের করে আমাকে দেখিয়ে বলল, ‘আপনি কী এটা পড়তে পারেন?’


লকেটটা ছিল রুপার যার এপাশে লেখা ছিল সুবহান আল্লাহ এবং অন্য পাশে আলহামদুলিল্লাহ। আমার জানার কৌতূহল হলো যে সে এটা কোথায় পেয়েছে। আমি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বললাম, ‘এর মানে সকল প্রশংসা আল্লাহর’ এবং এর মানে ‘সকল প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতা আল্লাহর জন্য।’ তারপর আমি তাকে প্রশ্ন করলাম, আপনি এটা কোথায় পেয়েছেন?’ সে হেসে আমাকে একটা চমৎকার গল্প বলল। আমার যতটুকু মনে আছে আমি তা এখানে তা তুলে আনার চেষ্টা করছি।


সে বলল, ‘এই লকেটটা আমার দাদী আমাকে দিয়েছে। আমার দাদীকে এই লকেটটা তার এক ইরানী বান্ধবী এ কথা বলে দিয়েছিল যে, ‘এটা তার জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনবে। এতে কী লেখা আছে তা আমার অজানা ছিল। যখন আমি আপনাকে দেখলাম, আমার মনে হয়েছে যে আপনি বলতে পারবেন। তাই আমি আপনাকে দেখিয়েছি।’


তারপর সে বলল, ‘আপনি জানেন, আপনার সাথে আমার দেখা হওয়ার বিষয়টি কোনো আকস্মিক বিষয় নয়। আমি লস অ্যাঞ্জেলে থাকি। একটা কনফারেন্সে ডেট্রয়েটে এসেছি। গতকাল আমার কনফারেন্স শেষ হয়ে গিয়েছে। আমার লস অ্যাঞ্জেলে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কিছু একটা আমাকে আটকে দিল। বলল, আরেকটা দিন থেকে যেতে। আমি আমার টিকেট বাতিল করে নর্থওয়েস্ট এয়ারলাইনসে আজকের টিকেট কিনেছি। আমি আগে কখনোই নর্থওয়েস্টে ভ্রমণ করিনি।’ তার কথার সত্যতা প্রমাণ করার জন্য সে আমাকে বাতিল করা টিকেটটা দেখালো। আমি এত বিস্মিত ছিলাম যে কিছু বলার ভাষা পাচ্ছিলাম না।


সে বলল, ‘কাল সন্ধ্যায়, আমি একা একা বসে আমার হোটেলের রুমে টিভি দেখছিলাম আর ভেবে অবাক হচ্ছিলাম যে আমি ডেট্রয়েটে বসে আছি কেন। কেন আমি একরাতের জন্য বেশি টাকা ব্যয় করে এখানে রয়ে গিয়েছি? অথচ আমার সব বন্ধু ও সহকর্মীরা যে যার বাড়িতে চলে গিয়েছে। তারপর আজ সকালে যখন এই ফ্লাইটে আপনার সাথে দেখা হলো তখন আপনি আমাকে লেখাটির মানে বললেন। আপনি যেটা পড়ছিলেন সেটা কি একটু শব্দ করে পড়বেন, প্লীজ? আমার শুনতে ইচ্ছা হচ্ছে।’


আমি শব্দ করে সূরা আল কাহাফ পাঠ করলাম। যখন পাঠ শেষে কুরআন বন্ধ করলাম, সে বিস্মিত হয়ে বলল, ‘চমৎকার। শেষ হয়ে গিয়েছে? আমি ভেবেছিলাম আপনি বইয়ের শেষ পর্যন্ত পাঠ করবেন।’ আমার চোখ অশ্রু সিক্ত হয়ে উঠল। একজন মহিলা যে কুরআনের একটি শব্দও বুঝে না। তারপরও সে আরও বেশি বেশি শুনতে চাচ্ছে। এটাই হলো আমাদের রবের কালামের অলৌকিকত্ব—যারা বুঝতে পারে না তাদের অন্তরকেও তা ছুয়ে যায়।


আমি আল্লাহর কাছে দুআ করলাম, ‘ইয়া রাব্বী, তোমার দ্বীনের প্রতি এই মহিলার অন্তরকে খুলে দাও। আমি বুঝতে পারছি না, কীভাবে তাকে ইসলাম সম্পর্কে বলব। দয়াকরে তাকে দিয়ে আমাকে প্রশ্ন করাও।’


তারপর সে আমাকে বলল, ‘আপনি কি আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলবেন?’


আমি বললাম, ‘ইসলাম হলো কেবলমাত্র আমাদের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তার ইবাদত করা এবং তাঁর ক্ষমতা, মহমা ও গরিমার ক্ষেত্রে কোনো অংশীদার স্থাপন না করা। কারণ তিনি কোনোরূপ সাহায্য সহযোগিতা ছাড়াই সবকিছু একা সৃষ্টি করেছেন এবং কারও সাহায্য ছাড়াই তিনি একা গোটা সৃষ্টি জগতকে প্রতিপালন করছেন এবং কারও সাহায্য ছাড়াই তিনি এই সবকিছুকে তিনি ধ্বংস করবেন। তারপর আমাদের সবাইকে তাঁরই কাছে ফিরে যেতে হবে। ইসলাম হলো মুহাম্মদ (সা.)কে আল্লাহর প্রেরিত নবুওয়াতের ধারার সর্বশেষ নবী হিসেবে মেনে নেওয়া।’


ইসলাম হলো আল্লাহর রাসুলদের মধ্যে কোনোরূপ পার্থক্য না করে তাদের সবার উপর ঈমান আনা। ইসলাম হলো তাদের সবাইকে আল্লাহর রাসুল হিসেবে মেনে নেওয়া। তাদেরকে যে দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছিল তারা তা যথাযথভাবে পালন করেছেন। সেটা হলো আল্লাহর সাথে কোনো অংশীদার স্থাপন না করে মানুষকে এক আল্লাহর ইবাদতের দিকে আহবান করার দায়িত্ব। আমরা মুসলিমরা নূহ, ইবরাহীম, মুসা এবং যিশু (ঈশা (আ.)) এবং আল্লাহর অন্যান্য সব নবী রাসুলকে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি যে আল্লাহ তায়ালা শুধুমাত্র এই কয়েকজন নবী-রাসুলকেই পাঠাননি বরং তিনি পৃথিবীর প্রত্যেকটা স্থানে প্রত্যেক জাতির কাছে নবী-রাসুল পাঠিয়েছিলেন। তাদের কতিপয়ের কথা আল্লাহ তায়ালা উল্লেখ করেছেন এবং অন্যান্যদের কথা তিনি উল্লেখ করেননি। ইসলাম হলো মৃত্যুর পরবর্তী জীবনকে বিশ্বাস করা এবং বিচার দিবসের উপর ঈমান আনা। সেদিন আমাদেরকে আমাদের কাজের হিসাব দেওয়ার জন্য আহবান করা হবে এবং তার উপর নির্ভর করে আমাদের জান্নাতে অথবা জাহান্নামে পাঠানো হবে।


সে মনোযোগ দিয়ে আমার কথা শুনল এবং এমনভাবে মাথা নাড়াল যেন সে আমার কথায় সম্মতি প্রকাশ করছে। ‘যিশু সম্পর্কে আপনারা কী বলেন?’ সে প্রশ্ন করল।


‘আমরা তা-ই বলি যা আল্লাহর কিতাবে বলা হয়েছে’ আমি বললাম। ‘আমরা বলি যে তিনি ছিলেন কুমারী মারিয়াম (আ.)এর পুত্র। আল্লাহর পুত্র নন। আল্লাহ তায়ালা জিবরীল (আ.)কে তার মা মারিয়াম (আ.)এর কাছে পাঠান যিনি ছিলেন একজন ধার্মিক নারী। জিবরীল (আ.) তাকে পুত্র সন্তান জন্মের সুসংবাদ দেন। মারিয়াম (আ.) বলেন, ‘কীভাবে আমার সন্তান হবে অথচ আমাকে কোনো পুরুষ স্পর্শ করেনি?’


জিবরীল (আ.) উত্তর দেন, ‘আপনার রবের জন্য এটা সহজ।’ তারপর ঈশা (আ.) একজন কুমারী মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম গ্রহণ করেন। ঈশা (আ.) ছিলেন আল্লাহর রাসুল যিনি জন্মের পর শৈশবে কথা বলেছেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে অনেক অলৌকিক ক্ষমতা দান করেছিলেন। তিনি কুষ্ঠ রোগিদের সুস্থ করতেন, অন্ধদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতেন এবং মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করতে পারতেন এবং আরও অনেক অলৌকিক ক্ষমতা দেখিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি যে তিনি এই অলৌকিক কাজগুলো করেছেন আল্লাহর ইচ্ছায়, তার নিজের ক্ষমতায় নয়। তিনি এসেছিলেন বনী ইসরাইলদেরকে মুসা (আ.)এর আনিত বিধানের দিকে ফিরিয়ে নিতে এবং তাদেরকে পৃথিবীতে ফিতনা-ফ্যাসাদ ছড়ানোর বিরুদ্ধে সতর্ক করতে। তারা তাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা সফল হয়নি। আল্লাহ তায়ালা তাকে বাঁচিয়েছেন এবং জীবিত অবস্থায় তার কাছে তুলে নিয়েছেন।


আমরা বিশ্বাস করি যে ঈশা (আ.) পৃথিবী ধ্বংসের আগে আবার ফিরে আসবেন এবং তার আগমন হলো কিয়ামতের একটি লক্ষণ। তিনি দাজ্জালের সাথে যুদ্ধ করবেন এবং দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তখন মুসলিমরা ঈশা (আ.) এর পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করবে। আমরা বিশ্বাস করি যে তিনি তখন অন্যান্য মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করবেন, বিয়ে করবেন, মৃত্যু বরন করবেন এবং তাকে কবর দেওয়া হবে।’


আমার কথা শুনে সে সম্মতিসূচক মাথা নাড়ল এবং বলল, ‘আপনার কথায় যৌক্তিকতা আছে। যীশু মানুষের পাপের জন্য ক্রসে ঝুলে মারা গিয়েছে—এ ব্যাপারে আপনাদের মতামত কী?’


‘আমরা বলি যে আল্লাহ তায়ালা অবিচারক নন। অন্য মানুষের পাপের জন্য একটা নিস্পাপ মানুষকে ভয়ঙ্করভাবে মৃত্যুর শাস্তি দেওয়া একটি বড় ধরনের অবিচার। তাছাড়া কাউকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা অন্য কাউকে শাস্তি দিতে বাধ্য নন। আল্লাহ যদি ক্ষমা করে দিতেই চান তাহলে তিনি তা এমনিই পারেন। কারণ তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। ক্ষমা পাওয়ার জন্য সত্যিকারভাবে অনুতপ্ত হয়ে আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আল্লাহ তায়ালা তাহলেই ক্ষমা করে দিবেন। এর জন্য আর বেশি কিছু করার দরকার নেই।’


সে আরও একবার মাথা নেড়ে বলল, ‘আমি একমত। স্রষ্টা কি অন্যদের পাপের জন্য একজন নিস্পাপ মানুষকে শাস্তি দিতে পারেন?’ তারপর সে বলল, ‘আচ্ছা, কীভাবে মুসলিম হতে হয়?’


আমি বললাম, ‘বলতে হবে যে, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহি (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া ইবাদাতের যোগ্য কোনো ইলাহা নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসুল); এবং অন্তর থেকে এর উপর ঈমান আনতে হবে। অন্তর থেকে সব ধরনের মিথ্যা বিশ্বাস ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে। এমনকি এটাও বিশ্বাস করা যাবে না যে যীশু আল্লাহর পুত্র। মনে করা যাবে না যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মানুষ, ফেরেশতা অথবা অন্য কেউ ইবাদতের যোগ্য অথবা তারা কোনোভাবে কোনো কল্যাণ বা অকল্যাণ ঘটানোর ক্ষমতা রাখে।’


‘এতটুকুই?’ আমি যদি শুধু এতটুকু বলি এবং আমার অন্তর থেকে বিশ্বাস করি তাহলেই আমি মুসলিম হয়ে যাবো?’


‘জি হ্যাঁ, আপনি এই বাক্য পাঠ করলে আর অন্তর থেকে বিশ্বাস করলেই মুসলিম হয়ে যাবেন।’ আমি উত্তর দিলাম।


‘আমাকে আর কী করতে হবে?’ সে প্রশ্ন করল।


আমি বললাম, ‘দৈনন্দিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাহ আদায় করতে হবে, আপনার উদ্ধৃত্ত সম্পদের ২.৫ শতাংশ প্রতি বছর দান করে দিতে হবে এবং রমাদান মাসে রোজা রাখতে হবে। আর আপনি যদি পারেন তাহলে জীবনে একবার আল্লাহর ঘরে হজ্ব করবেন। খাদ্যের ব্যাপারে আল্লাহর বিধানগুলো মেনে চলবেন (শূকরের মাংস খাবেন না, মদ পান করবেন না অথবা কোনো নেশা জাতিয় দ্রব্য সেবন করবেন না), ন্যায়পরায়ণ, দায়িত্বশীল ও নৈতিক জীবন যাপন করবেন। সবসময় সচেতন থাকবেন যে আপনাকে আপনার কাজকর্মের হিসাব দিতে হবে।’


সে জিজ্ঞেস করল, ‘আমি কি এখনই মুসলিম হতে পারব?’


কথাটা শুনে আমার অন্তর বলে উঠল, ‘ইয়া আল্লাহ, তুমি আমার ও তার রব। তুমি আমাকে আজ দেখালে যে কীভাবে তুমি যাকে ইচ্ছা তাকে হিদায়েতের পথে আনো কারও সাহায্য ছাড়াই। ইয়া আল্লাহ, তোমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের কোনো ভাষা আমার জানা নেই। আমি তোমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি সেই শব্দের দ্বারা যা তোমার শান ও মর্যাদার সাথে মানানসই।’


আমি বললাম, ‘জি, আপনি চাইলে এখনি মুসলিম হতে পারেন।’


‘তাহলে বলুন আমাকে কী করতে হবে।’


‘আমার সাথে সাথে পাঠ করুন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অয়া আশাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহি।’ সে পাঠ করল এবং ভূমি থেকে ৩৫,০০০ ফুট উপরে বাতাসের মধ্যে যখন আমরা ঘণ্টায় ৯০০ মাইল বেগে চলছিলাম সে অবস্থায় সে ইসলামের প্রশান্তির ছায়াতলে প্রবেশ করল। এটাই হলো আমার রবের দয়া। আলহামদুলিল্লাহ.

_______

শাইখ মির্জা ইওয়ার বেগ

Post a Comment

Previous Post Next Post