দূরে যাওয়ার সহজ গল্প

গল্প শব্দটি কানে আসলেই তা শুনতে মন চায়। আর এ ধারাবাহিকতায় শব্দটি দিন দিন বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছে। তাই বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে শব্দটি প্রয়োগ করে যাচ্ছে। কেউ সাহসী গল্প, কেউ ভালোবাসার গল্প, আবার কেউ কাছে আসার গল্পও শুনাচ্ছে। তবে আজকে আমি দূরে যাওয়ার সহজ একটি গল্প শোনাবো। যার পেছনে একটি যৌক্তিক কারণ থাকলেও ফলাফলটা নির্ভর করছে আপনার উপর। আবারো বলছি আপনিই এই গল্পের নায়ক। তাহলে শুনোন গল্পটা-

কোন একসময় একটা সমাজের অধিকাংশ মানুষগুলো নিজেদের সভ্য রাখতে চেষ্টা করতো, তাদের মধ্যে লজ্জিতবোধ ছিলো, তারা অশ্লীলতাকে ঘৃণা করতো। কিন্তু ধীরেধীরে ঐ সমাজে বিভিন্ন সংস্কৃতি ঢুকে পড়লো। শুরু হলো তুমুল লড়াই। হ্যাঁ, মূল্যবোধ আর সংস্কৃতি লড়াই। প্রাথমিক পর্যায়ে সামাজিক মূল্যবোধ আধিপত্য করলেও দিনদিন সংস্কৃতির প্রচার বেড়ে যাওয়ায় তা আজ মুখ থুবরে পরেছে। তাই একসময় ঐ সমাজের আধিপত্যকারী লোকগুলো যেন আজ নড়াচরা করতে পারা এক প্রকার প্রাণী বৈ কিছুই না। তাদের এই পরিস্থিতির পেছনে মূল একটি কারণ হলো তারা প্রথমে ভিন্ন সংস্কৃতির বিভিন্ন প্রথাকে হালকা ভেবে তাদের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে স্থান দিয়েছে। আর ঐ ছোটছোট সুযোগগুলোর উপর ভিত্তি করেই আজ ঐ নষ্ট সংস্কৃতিগুলো আগাছার মতো গজিয়ে উঠেছে। আর এসব আগাছাগুলোই আজ ঐ সমাজের চোখে সরিষার ফুল দেখাচ্ছে। কিন্তু এসব আগাছা চেনারমতো কিছু লোক এখনো ঐ সমাজে রয়ে গেছে। তারা চেষ্টা করছে সমাজের মানুষগুলো যেন শেকড়ের সন্ধান পায়। আবার যেন বয়ে আনে সামাজিক মূল্যবোধ আর নৈতিকতার বৃষ্টি।
সম্প্রতি ঐ সমাজে 'কাছে আসার সাহসী গল্প' শিরোনামে একটি আগাছা বেশ মোটাতাজা হয়ে উঠছে। সে এমন কিছু ফসলের ক্ষতি করছে যেগুলো মানুষ জন্ম থেকেই পেয়ে আসছে। সে মানুষকে প্রকাশ্যে নির্লজ্জ হওয়ার জন্য ডাকছে। আরও শেখাচ্ছে কতোটা সহজে বেশরম হওয়া যায়৷ কিন্তু সমাজের ঐ অল্পসংখ্যক মানুষগুলো এর ভয়াবহতা বুঝতে পেরেছে। তাই তারা কাছে না এসে খুব সহজেই দূরে চলে যাচ্ছে। তারা মনে করছে এখনই যদি দূরে সরে না যায় ভবিষ্যতে হয়তো শেকড়ই চেনা যাবে না। যেখান থেকে তাদের শুরু হয়েছিলো .....। গল্পটি এখানেই শেষ হলো।

শুরুতেই বলছিলাম এই গল্পের নায়ক আপনিও হতে পারবেন। তবে এজন্য আপনাকে ঐ অল্পসংখ্যক মানুষের দলে যোগ দিতে হবে। কারণ নায়কদের সংখ্যা কমই হয়।

আর এজন্য কাছে আসার দুঃসাহসী গল্পের নামে যারা এই নোংরামী ছড়াচ্ছে তাদেরকে বর্জন ও ঘৃণা করতে হবে এবং তাদের এই নোংরামীর বিরুদ্ধে অন্যদের সচেতন করতে হবে।

ভাবছেন আমি একা বর্জন করে কি হবে? তাহলে বলছি আমিও তো আপনার সাথে আছি। আবার ভাবছেন এতে কি হবে? অন্তত তাদের প্রচারণা একটু কম হবে, তাদের ব্যবসা একটু কম হবে এবং সমাজের এই নৈতিক অবক্ষয়টা একটু হলেও হ্রাস পাবে, ইন শা আল্লাহ্। তাতে আমার-আপনার কি লাভ? আল্লাহ্ আমাদের এই ইসলামিক মূল্যবোধ সম্পর্কে সাক্ষী থাকবেন এবং তাঁর শাস্তি থেকে আমি-আপনি ক্ষমা পেয়ে যেতে পারি৷ আমিন৷

আল্লাহ্ সুবহানওয়া তা'আলা বলেন:
'যারা বিশ্বাসীদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার পছন্দ করে, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।' (সুরা আন নুরঃ ১৯)

রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেন:
  • ‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই একজন বলে গণ্য হবে’ (আবূ দাঊদঃ ৪০৩১)
  • ''সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে আমাদেরকে ছেড়ে অন্যদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে ।'' -(তিরমিযী)

শেষে নিজেকে অন্তত এই প্রশ্নটি করি- "দূরে যাওয়ার এই সহজ গল্পের নায়ক হওয়ার সাহসটুকু আমি রাখি তো?"

1 Comments

  1. আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে হেদায়েত নসিব করুন আমি।।

    ReplyDelete

Post a Comment

Previous Post Next Post