বন্ধু, পিকনিক ও ইয়ার্কি : ইসলাম কি বলে?


নারী-পুরুষ বন্ধু, একত্রে পিকনিক, ইয়ার্কি করে বউ ডাকা বা স্বামী ডাকা, নারী পুরুষ বেড়াতে যাওয়া এগুলো কি  বৈধ? নাকি অবৈধ? ইসলাম কি বলে? 

এ বিষয়ে এখানে ৫টি হাদীস উল্লেখ করবো। আশা করি এতে বিষয়গুলো আমাদের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠবে, ইন শা আল্লাহ্।

(নোটঃ রেফারেন্স কেন লাগে? উত্তরঃ ইহা এজন্য লাগে যে -  রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই এই কথা বলেছেন তার প্রমানস্বরূপ। কেউ দেখা যায় রেফারেন্স না লিখে বলে রেফারেন্স কি দরকার হাদিস সহীহ হইলেই হইলো। যা ভূল কথা, বরং নিয়ম হলো- রেফারেন্স ছাড়া কথা না বলা, ও রেফারেন্স ছাড়া কথা না মেনে চলা। কারণ, নবীজী (স) ই একটা আমল না করে থাকলে বা না বলে থাকলে তা পালন করে আপনি কাকে অনুসরন করছেন জানেন কি?)

তাহলে শুরু করা যাক ----------
১/ নারী পুরুষ পরস্পর একত্রে কোথাও যাওয়া।
 রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেন-
وَلاَ تُسَافِرُ المَرْأةُ إِلاَّ مَعَ ذِي مَحْرَمٍ.
‘‘মহিলা যেন মাহরাম পুরুষ ছাড়া একাকিনী সফর না করে।’’ [বুখারী ৫২৩৩, মুসলিম ১৩৪১]
(মাহরাম কে? বাবা, ভাই, ছেলে ইত্যাদি যাদের সাথে বিবাহ হারাম।)

২/ মেয়ে যখন বাড়ি থেকে পর্দা ছাড়া বের হয় তখন? 
 রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
المَرأَةُ عَورَةٌ فَإِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيطَان.
‘‘রমণী গুপ্ত জিনিস; সুতরাং যখন সে (বাড়ি হতে) বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে আকর্শনীয় করে দেখায়।’’[সহীহ তিরমিযী ৯৩৬নং]

৩/ কোন নারীর দেহ স্পর্শ, বাসে-ট্রেনে, হাটে-বাজারে, স্কুলে-কলেজে প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় স্পর্শ করলে কি হবে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لأَنْ يُطْعَنَ فِي رَأْسِ رَجُلٍ بِمِخْيَطٍ مِنْ حَدِيدٍ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَمَسَّ امْرَأَةً لا تَحِلُّ لَهُ.
‘‘কোন ব্যক্তির মাথায় লৌহ পেরেক ঢুকে যাওয়া ভালো, তবুও যে নারী তার জন্য অবৈধ তাকে স্পর্শ করা ভালো নয়।’’[আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ, আলবানী ২২৬ নং]
(কত সিরিয়াস বিষয়!)

৪/ পুরুষের সাথে মহিলার গল্পের সাথে কিংবা মোহনীয় কণ্ঠে সংলাপ ও কথোপকথন করাও ব্যভিচারের নিকটবর্তীকারী পথসমূহের অন্যতম পথ। 
এ বিপজ্জনক বিষয়ে সাবধান করে আল্লাহ তা’আলা মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলেন,
﴿إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ﴾
‘‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তবে পরপুরুষদের সাথে কোমল কণ্ঠে এমনভাবে কথা বলো না, যাতে ব্যাধিগ্রস্ত অন্তরের মানুষ প্রলুব্ধ হয়।’’ [সূরা আল-আহযাব (৩৩) : ৩২]

৫/ শেষ কথা- একত্রে ২ জন বসিলেই, সমস্যা তৈরি হয়। আমরা মনে করি আমরা খারাপ কিছু করছিনা। আসলে কি তাই? 
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেন-
‘‘কোন পুরুষ যেন কোন নারীর সাথে একান্তে গোপনে অবস্থান না করে। কারণ, শয়তান উভয়ের কুটনী হয়।’’ [তিরমিযী, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩১১৮নং]
(অন্য হাদিসে এসেছেঃ তাদের মধ্যে ৩য় ব্যক্তি উপস্থিত থাকে, সে হলো শয়তান (আর শয়তানের কাজ ই তো……)

তাই আমাদের সতর্ক হতে হবে। মনে রাখতে হবে মানব জাতীর বিস্তার হয়েছে সংসার সিস্টেমের মাধ্যমে, টিকে আছে ও সুন্দর নিয়ন্ত্রিত ইসলামিক নিয়মের সংসারীক জীবনের ফলেই। তাই মানব জাতী ও মানব সমপদ ধংসের একমাত্র পথ হলো এই সিস্টেম কলুষিত করা, এই সিস্টেমে ভেজাল ঢুকিয়ে দেয়া। আর তাই হচ্ছে। ইহুদি-খৃষ্টান রা বিভিন্ন চ্যানেল, নিউজ, অনুষ্ঠান আর শত অমুক তমুক দিবসের মাধ্যমে অশ্লীলতা ছড়াচ্ছে, ভালো কাজের গুরুত্ব কম করে দেখানো হচ্ছে , আর আমরা সহ প্রায় সারা বিশ্ব তা গিলেছে আর অনুসরন করছে। অর্থাৎ মানব জাতী অচিরেই হারিয়ে যাবে ,ধংস হয়ে যাবে ভয়ানক এই কাজের ফলে। তাই আসুন সৎ হই, ভালো থাকি, পৃথিবী নিজেরা ধংস করে না দেই। বিশেষত আমাদের পরকালকে ধংস করে না দেই।


প্রাসঙ্গিক বিষয়

Post a Comment

Previous Post Next Post