প্রশংসা আল্লাহ সুবাহানওয়া তা'আলার। শান্তি বর্ষিত হোক রাসূল (সা) ও তার অনুসারীদের উপর।
যখন আমার লক্ষ্য ও আল্লাহর উপর আস্থা সম্পন্ন হয়ে যাবে, তখন আমাকে ভাবতে হবে- এখন আমার কি করা উচিত? আর এই প্রশ্নের বিপরীতে অনেক উত্তর আসলেও আমাকে বাছাই করতে হবে তুলনামূলক সহজ ও মৌলিক কাজটি। কারণ আমি এখনও আমার কাজের সামর্থ্য জানি না। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, (প্রাথমিকভাবে) সালাত বিষয়ক ফিক্বহী পর্যালোচনার চেয়ে পবিত্রতার সাথে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতে আদায় করার অভ্যাস করাই আমার জন্য উত্তম।
তবে আমি যার ইবাদাত করছি এবং যাকে (সা) অনুসরণ করছি তাঁর সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান অর্জন করাও প্রাথমিক কাজের অন্তর্ভুক্ত। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় আল্লাহর একত্ববাদ ও রাসূল (সা) এর প্রতি সম্মান। আর রাসূল (সা) এর প্রতি সম্মান বলতে এখানে তার সুন্নাহর অনুসরণে দৃঢ়তাকেই বুঝানো হয়েছে। কারণ মন চাহে সম্মান করার নামে বিদআত চর্চা করা কখনো কাম্য নয়। আর এর সবক'টি আমাদের ঈমানের সাথে জড়িত।
হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন:
যার মধ্যে তিনটি গুণ রয়েছে সে ঈমানের স্বাদ অনুভব করবে, (ক) তার কাছে অন্য সবার তুলনায় আল্লাহ ও রাসূল (সা) প্রিয়তর হয়, (খ) কাউকে ভালোবাসলে আল্লাহর জন্যই ভালোবাসে, (গ) আগুনে ফিরে যাওয়াকে যেমন অপ্রিয় জানে, কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে তেমন অপ্রিয় মনে করে। -[বুখারী: ১৫]
অর্থাৎ আমাকে প্রাথমিক কাজ হিসেবে বেছে নিতে হবে ঈমান ও আক্বিদার সাথে জড়িত মৌলিক জ্ঞান অর্জন ও সালাত প্রতিষ্ঠা করা। আর এর জন্য অবশ্যই সামনে রাখতে হবে (ক্রমান্বয়ে) প্রথম তিন যুগের আদর্শকে।
যখন আমি ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসগুলো নিজের মধ্যে লালন করতে থাকবো এবং তদানুযায়ী জীবন পরিচালনা শুরু করব, তখন আমার চিন্তা-ভাবনা ও কর্মের মধ্যে এমন কিছু পরিবর্তন আসবে যা নিজের বুঝার সাথে সাথে চারপাশের মানুষগুলোও বুঝতে সক্ষম হবে। তবে তাদের এই বুঝা আর এর বিপরীতে নিজেদের প্রতিক্রিয়ার মধ্যে থাকবে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। কারণ তারা আপনার পরিবর্তনের পেছনে ইসলামের দেওয়া বিধানকে খুঁজে পেতে সক্ষম হলেও এটাকে মেনে নিতেই যতো আপত্তি। আর এই আপত্তি শুধু দূরের মানুষ থেকে নয়, নিজের পরিবার-পরিজন থেকেও আসা স্বভাবিক। আর এটাকে প্রাথমিক পরীক্ষা হিসেবে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আর একজন সত্যিকার পরীক্ষার্থীর মূল লক্ষ্য থাকে যেকোন মূল্যে (সর্বোচ্চ চেষ্টায়) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া।
আল্লাহ সুবাহানওয়া তা'আলা বলেন:
হে মু'মিনগণ! তোমাদের স্ত্রী সন্তানদের মধ্যে কেউ কেউ তোমাদের শত্রু। কাজেই তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্ক হও। -[আত তাগাবুন, আয়াত: ৬৪]
অর্থাৎ আল্লাহ সুবাহানওয়া তা'আলা আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন যে, আমার অতি আপনজনও আমার বিরুদ্ধাচরণ করতে পারে কেবল ইসলামকে আমার জীবন ব্যবস্থা হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণে। তাই প্রাথমিক ধাক্কাতেই যেন আমি ভেঙে না পড়ি সে বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করে এগিয়ে যেতে হবে। (ইন শা আল্লাহ)
ইসলামে প্রবেশ সিরিজ
Post a Comment