কিভাবে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করাবো? (৪র্থ পর্ব)


বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

প্রশংসা আল্লাহ সুবাহানওয়া তা'আলার। শান্তি বর্ষিত হোক রাসূল (সা) ও তার অনুসারীদের উপর।

যখন আমি শয়তানের প্রাথমিক পরিকল্পনা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে তুলতে সক্ষম হব, তখন শয়তান আরো একটি নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী আমার বিরোধিতা শুরু করবে। এবার সে আমার আপনজনদের মধ্যে আমাকে নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলবে। কেউ ধরে নিবে আমি হয়তো কোন দলীয় আদর্শের কাছে বিক্রি হয়ে গেছি, আবার কেউ মনে করবে আমার ভবিষ্যত অন্ধকার। তাদের মধ্যে এরকম চিন্তা সৃষ্টি হবার মূলে সাধারণত দুটি কারণই থাকে- দুনিয়ার সাময়িক চাকচিক্যে নিজেকে ভাসিয়ে দেয়ার মিথ্যা চেষ্টা ও নিজ ফিতরাত (ইসলাম) সম্পর্কে উদাসীন হওয়া।

আর এই পরিস্থিতি এসে নিজেকে সবচেয়ে একা মনে হবে। কারণ নিজের আপনজনও তখন সত্যকে উপেক্ষা করে। একটা ছেলে কিংবা মেয়ের পক্ষে পুরো পরিবারের সাথে লড়ে যাওয়া সত্যিই কষ্টকর। পরিবারের মানুষগুলো তখন এমন আচরণ করে যেন এই ছেলে/মেয়েটা তাদের আদর্শের বিরুদ্ধে লড়ছে। অথচ তখনও যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনার ধর্ম কি? তারা নিঃসন্দেহে বলে দিবে ইসলাম। অথচ পরিবারের এই ছেলে/মেয়েটির সাথে তাদের স্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। আর পার্থক্যটা হলো- কেউ বিশ্বাসের সাথে তদানুযীয় কাজ করে আর কেউ শুধু মুখ দিয়ে বলেই বেড়ায়, কাজে পরণতি করার কোন চেষ্টাই নেই। আর এই আচরণ দুটির পার্থক্য যদি কেউ বুঝতে চেষ্টা করতো তাহলে অবশ্যই প্রতিটা পরিবারে ঐ (তাওহীদ পন্থী) ছেলে-মেয়ের সংখ্যা বেড়েই চলতো। আর এ বিষয়ে আল্লাহ সুবাহানওয়া তা'আলা আমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন বহু আগেই।

আল্লাহ সুবাহানহুওয়া তা'আলা বলেন,
যারা বিশ্বাস করেছ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে দেয়। -[সূরা আল মুনাফিকুন, আয়াত: ৯]

অর্থাৎ পার্থিব সম্পদের প্রতি নিজেকে মত্ত না রাখার প্রতিই এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে। যখন পৃথিবীর প্রতি মায়া সৃষ্টি হবে, আহ্লাদ বেড়ে যাবে, তখন আমার অন্তর আল্লাহর স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। আর আজকের পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে এসব মানুষের সংখ্যাই বেড়ে চলছে। সময়ের সাথে তাদের সংখ্যা আরো বাড়তে থাকবে এটাই ইসলাম বলে। তবে আমি এই দল থেকে নিজেকে কতটুকু দূরত্বে রাখলাম, এটাই ভাবার বিষয়।

বুঝার সুবিধার্থে আবারো বলি- শুধু 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলে তাওহীদের সাক্ষ্য দেওয়া যায়। কিন্তু তা রক্ষা করতে সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করতে হয়। আর সেটা আমার বিশ্বাস, আচরণ ও কর্মের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়।

তাই এই পর্যায়ে এসে পরিবারের বিরোধিতার বিরুদ্ধে নিজের আদর্শ ও উদ্দেশ্যকে দাঁড় করাতে হবে। আর যখন ইসলামের বিরুদ্ধে কোন কিছুকে দাঁড় করানো হয় তখন তা ইসলামের ধৈর্য্য ও বিরত্বের গহ্বরে হারিয়ে যায়। (ইন শা আল্লাহ)


ইসলামে প্রবেশ সিরিজ

Post a Comment

Previous Post Next Post