দুআর ক্ষেত্রে দৃঢ়চেতা হওয়া


আল্লাহ আপনার দুআ কবুল করবেন—এ কথা জেনে দৃঢ় সংকল্প সহকারে দুআ করুন। সুনান আত-তিরমিযিতে আছে,

“আল্লাহ তোমার দুআর জবাব দেবেন, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে আল্লাহকে ডাকো। তবে সে সাথে এটাও জেনে রাখো যে, গাফেল অন্তরের দুআর জবাব দেওয়া হয় না।”[তিরমিযি: ৩৪৭৯ ]

যখন দুআ করবেন, দৃঢ় থাকবেন এবং মন দিয়ে দুআ করবেন। নিশ্চিত থাকবেন এই ভেবে যে—আল্লাহ আপনার দুআ কবুল করবেন। এমনভাবে দুআ করবেন না যে, ‘হে আল্লাহ আপনি চাইলে আমাকে ক্ষমা করুন।’ বরং বলবেন, ‘হে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন।’ দৃঢ় বিশ্বাস রাখুন যে—আল্লাহ আপনাকে মাফ করবেন। দুআ কবুলের ব্যাপারে মনে দ্বিধা রাখবেন না। আল্লাহ শয়তানের দুআ কবুল করেছেন, আর তিনি আপনার দুআ কবুল করবেন না? শয়তান দুআ করেছিল তাকে যেন পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দেওয়া হয়।

“(ইবলীস) বলল, “আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন। (আল্লাহ) বললেন, “তুই অবকাশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরাহ আরাফ ৭:১৪-১৫)

আপনি তো শয়তানের চেয়ে নিকৃষ্ট নন। আমরা যা-ই করি না কেন, শয়তানের চেয়ে আমরা বেশি খারাপ নই—যদিও আমাদের পাহাড়সম পাপ থাকে। যে আল্লাহ শয়তানের দুআ ফিরিয়ে দেননি, তিনি কি আমাদের দুআ ফিরিয়ে দেবেন?

এমনকি অবিশ্বাসীরাও (মুশরিক) একটা সময় সৎভাবে আল্লাহকে ডাকে, যাতে তিনি সাড়া দেন।

“আর যখন তারা কোনো জলযানে আরোহণ করে, তারা আল্লাহকে একনিষ্ঠভাবে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন নিরাপদে তাদের স্থলে পৌঁছে দেন, তারা তাঁর সাথে অন্যদের শরিক করতে থাকে।” (সূরাহ আনকাবুত ২৯:৬৫)

মহাসাগরের স্রোত ও বাতাস যখন তাদের ডুবিয়ে দিতে উদ্যত হয়, তারা এক আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে। শির্ক পরিত্যাগ করে কিছু সময়ের জন্য এক আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। তারা আগেও আল্লাহর সাথে শির্ক করেছে, আর আল্লাহ জানেন যে তাদেরকে নিরাপদে তীরে পৌঁছে দেওয়ার পর আবার তারা এ কাজ করবে। তারপরও যখন তারা ইখলাসের সহিত আল্লাহকে কিছু সময়ের জন্য ডেকেছে—আল্লাহ তাদের দুআ কবুল করেছেন। তিনি যদি অল্প সময়ের জন্য খালেসভাবে দুআ করা মুশরিকদের দুআ কবুল করে থাকেন, তাহলে কি তাওহিদের অনুসারীদের দুআ তিনি ফিরিয়ে দেবেন?
.
ধূলিমলিন উপহার: রামাদান, পৃ ৭৪-৭৫
শাইখ আহমদ মূসা জিবরীল
সীরাত পাবলিকেশন

1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post