ধারাবাহিক কুরআন ১০


[১]
হযরত উম্মে সালমা রাঃ বলেন, “একদা আমার স্বামী আবূ সালমা রাঃ রাসূলুল্লাহ সঃ'র দরবার থেকে আমার নিকট আসেন এবং অত্যন্ত খুশী মনে বলেন, ‘আজকে আমি এমন একটি হাদীস শুনেছি, যা শুনে আমি খুব খুশি হয়েছি। হাদীসটি এই যে, যখন কোন মুসলমানের উপর কোন কষ্ট ও বিপদ পৌঁছে এবং সে পড়ে…

"اللهم اجرني في مصيبتي واخلف لي خيرا منها"

"হে আল্লাহ! আমার এই বিপদে আমাকে প্রতিদান দিন এবং আমাকে এরচেয়ে উত্তম বিনিময় প্রদান করুন।" তখন আল্লাহ তাকে অবশ্যই বিনিময় ও উত্তম প্রতিদান দিয়ে থাকেন।'

উম্মে সালমা রাঃ বলেন “আমি এই দু'আটি মুখস্থ করে নিই। অতঃপর ক'দিন পর যখন আবূ সালমা রাঃ ইন্তেকাল করেন, তখন আমি ইন্না-লিল্লাহ… পাঠ করি আর ঐ দু'আটিও পড়ি। কিন্তু, আমার ধারণা হয়, আবু সালমা রাঃ'র অপেক্ষা আর ভাল লোক আমি স্বামী হিসেবে কাকেই-বা পাবো?

তারপর আমার 'ইদ্দত' শেষ হওয়ার পর একদিন আমি আমার একটি চামড়া সংস্কার করতে থাকি। এমন সময়ে রাসূলুল্লাহ সঃ আগমন করেন এবং ভিতরে প্রবেশের অনুমতি চাইলে আমি চামড়াটি রেখে দিয়ে হাত ধুয়ে নেই আর রাসূলুল্লাহ সঃ-কে ভিতরে আসার প্রার্থনা জানাই। তাঁকে একটি নরম আসনে বসতে দিলে রাসুলুল্লাহ সঃ আমাকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তখন আমি বললাম,
"হে আল্লাহর রাসূল সঃ! এটাতো আমার জন্য বড় সৌভাগ্যের কথা। কিন্তু, প্রথমতঃ আমি তো একজন লজ্জাবতী নারী। না জানি হয়তো আপনার স্বভাবের উল্টো কোনো কাজ আমার দ্বারা সংঘটিত হয়ে যায় আর এর কারণে আল্লাহ তা'আলার নিকট আমার শাস্তিই হয় নাকি! দ্বিতীয়তঃ আমি একজন বয়স্কা নারী। তৃতীয়তঃ আমার ছেলে-মেয়ে রয়েছে।"
--“দেখো! আল্লাহ তোমার এই অনর্থক লজ্জা দূর করে দেবেন। আর বয়স আমারও তো কম নয় এবং তোমার ছেলে-মেয়ে যেন আমারই ছেলে মেয়ে।"
--“হে আল্লাহর রাসূল সঃ! তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই।"

অতঃপর আল্লাহর নবীর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে যায় আর ঐ দুআর বরকতে আল্লাহ আমার পূর্ব স্বামী অপেক্ষা উত্তম স্বামী অর্থাৎ স্বীয় রাসূলুল্লাহ সঃ-কে দান করেন। সুতরাং, সমুদয় প্রশংসা শুধু আল্লাহর জন্য।

[২]
হযরত আবু সিনান রহঃ হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, “আমার একটি শিশুকে আমি সমাধিস্থ করি। আমি তার কবরে রয়েছি এমন সময়ে আবু তালহা খাওলানী রাঃ আমাকে হাত ধরে উঠিয়ে নেন এবং বলেন, "আমি কি আপনাকে একটি সুসংবাদ দেবো না?"
--"হাঁ"। আমি বললাম।
তখন আবু তালহা রাঃ বলেন, আবু মূসা রাঃ হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সঃ বলেছেন, "আল্লাহ তায়ালা বলেন, “হে মরণের ফেরেশতা! তুমি কি আমার বান্দার ছেলে, তার চক্ষুর জ্যোতি এবং কলিজার টুকরোকে ছিনিয়ে নিয়েছো?"
ফেরেশতা বলেন, "হাঁ।"
আল্লাহ বলেন, “তখন সে কি বলেছে?"
ফেরেশতা বলেন, "সে আপনার প্রশংসা করেছে এবং ইন্নালিল্লাহ… পাঠ করেছে।"
তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, “তার জন্যে বেহেশতে একটি ঘর তৈরি কর এবং ঘরটির নাম 'বায়তুল হামদ' তথা প্রশংসার ঘর রেখে দাও।"

1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post