এক,
বদরের যুদ্ধের কিছু পরের ঘটনা। একদিন উমার (রা) দেখতে পেলেন , আল্লাহ্র রাসুল (স) আর আবু বকর (রা) কাদছেন । উমার (রা) ব্যাকুল হয়ে জিজ্ঞেস করেলন , আপনারা কেনো কাদছেন আমাকে বলুন। যদি কান্নার কোন কারন হয়ে থাকে তাহলে আমিও কাদব , যদি কারন না থাকে তাহলে আপনারা কাদছেন এজন্য কাদব ।
আল্লাহ্র রাসুল (স) ও আবু বকর (রাদ) এর কান্নার কারন জানতে হলে আমাদের অল্প একটু পেছনে যেতে হবে ,
আল্লাহর রাসুল (স) সাহাবাদের নিয়ে জরুরি পরামর্শ সভা ডাকলেন । বদরের বন্দি কাফেরদের নিয়ে কি করা যায়? সাহাবারা মাশোয়ারা দিতে লাগলেন ,
আবু বকর (রাদি) বললেন ,
এরা তো আমাদের চাচাত ভাই ,আত্বীয়স্বজন। আপনি এদেরকে ফিদিয়া অর্থাৎ মুক্তিপন নিয়ে ছেড়ে দিন । এতে যা কিছু আসবে তাতে আমাদের কাজে লাগবে । এমনো হতে পারে আল্লাহ্ এদের হেদায়াত দেবেন এবং এরা আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবে ।
উমার (রা) বললেন ,
আপনি আমার আত্বীয় উমুকে আমার হাতে তুলে দিন আমি তার শিরচ্ছেদ করব । একই ভাবে আকিল ইবনে আবু তালিব কে আলীর হাতে তুলে দিন তিনি তার শিরচ্ছেদ করবেন । হামযার ভাই ওমুকে হামযার হাতে তুলে দিন সে তার শিরচ্ছেদ করবে। এতে করে আল্লাহ্ তায়ালা বুঝতে পারবেন কাফেরদের প্রতি আমাদের মনে কোন সমবেদনা নেই ।
আল্লাহ্র রাসুল (স) আবু বকর (রাদি) মত গ্রহন করলেন । কিন্তু আল্লাহ্ সুবহানু তায়ালার পছন্দ ছিলো উমার (রাদি) এর মত । আল্লাহ্ বলেন ,
وَاللّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
নবীর পক্ষে উচিত নয় বন্দীদিগকে নিজের কাছে রাখা, যতক্ষণ না দেশময় প্রচুর রক্তপাত ঘটাবে। তোমরা পার্থিব সম্পদ কামনা কর, অথচ আল্লাহ চান আখেরাত। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা। [ সুরা আনফাল ৮:৬৭ ]
لَّوْلاَ كِتَابٌ مِّنَ اللّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَا أَخَذْتُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ
যদি একটি বিষয় না হত যা পূর্ব থেকেই আল্লাহ লিখে রেখেছেন, তাহলে তোমরা যা গ্রহণ করছ সেজন্য বিরাট আযাব এসে পৌছাত। [ সুরা আনফাল ৮:৬৮ ]
দুই,
বদরের যুদ্ধ শেষ । মুসলিমরা একে একে কাফেরদের বন্ধি করে নিয়ে যাচ্ছে। হঠাত মুসয়াব ইবনে উমাহর দেখলেন , তার ভাই কে আবু আযিয কে আবুল ইয়াসার (রা) বন্দি করে রেখেছে । মুসয়াব (রা) তাকে দেখে বললেন , একে ধরে রাখো তার মায়ের অনেক ধন সম্পদ। তিনি অনেক অর্থ দিয়ে একে ছাড়িয়ে নেবে ।
আবুল ইয়াসার (রা) অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন , আমার প্রতি আপনার এ কেমন ওশিয়ত । সে তো আপনার ভাই !
মুসয়াব (রা) উত্তরে বললেন , আল্লাহর কসম ! আমার ভাইয়ের সঙ্গে ভাতৃত্বের চেয়ে তোমার সঙ্গে ভাতৃত্বের টান আমার অনেক বেশী ।
জাযাকাল্লাহ খাইরান
ReplyDeletePost a Comment