রাত এবং ঘুম সংক্রান্ত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের কিছু উপদেশ



(১) রাতের বেলা কুকুর ও গাধা শয়তান জিনদেরকে দেখতে পেলে চিৎকার-চেঁচামেচি করে। অনেক সময় ইশা বা ফযরের আযান দিলে কুকুরেরা বেশি চিৎকার করা আরম্ভ করে। কারণ, তখন কুকুরেরা আযান শুনে পলায়নরত শয়তান জিনদের দেখতে পায়। যেহেতু রাতের বেলা কুকুর ও গাধা শয়তান দেখলে ডাকে, একারণে রাতের বেলা গাধা ও কুকুরের ডাক শুনলে “আ’উযু বিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম” এই দুয়া পড়ে শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হয়। সহীহ মুসলিমঃ ২৭৬৯।

___________________________________

(২) নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যখন তোমাদের কেউ ঘুম থেকে উঠবে, সে যেন নাকে পানি দিয়ে তিনবার নাক ঝেড়ে নেয়। কেননা, শয়তান তার নাকের ভেতর রাত্রি যাপন করে।” সহীহ বুখারী ৩২৯৫, সহীহ মুসলিম।

___________________________________

(৩) কোন ব্যক্তি সূর্য উদয় হওয়া পর্যন্ত ঘুমিয়ে ফযরের নামায কাযা করে ফেললে শয়তান তার কানে পেশাব করে দেয়। সহীহ বুখারীঃ ৫৪/৪৯২।

___________________________________

(৪) ঘুম থেকে জেগে উঠে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম নীচের এই দুয়া পড়ে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও তাঁর প্রশংসা করতেনঃ

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا، وَإِلَيْهِ النُّشُوْرُ

উচ্চারণঃ আলহা’মদু লিল্লা-হিল্লাযী আহ’ইয়া-না বাঅ’দা মা- আমা-তানা ওয়া ইলাইহিন-নুশূর।

অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদেরকে জীবিত করলেন, আর তাঁরই নিকট সকলের পুনরুত্থান। সহীহ বুখারীঃ ৬৩১৪; সহীহ মুসলিমঃ ২৭১১।

ঘুম থেকে জেগে উঠে এই একটিমাত্র দুয়া পড়লেই সুন্নত আদায় হয়ে যাবে, তবে এর সাথে নীচের এই দুয়াটি পড়লে আরো ভালো। আল্লাহর প্রশংসা করা হলে তিনি খুশি হন।

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي عَافَانِي فِي جَسَدِي، وَرَدَّ عَلَيَّ رُوحِي، وَأَذِنَ لي بِذِكْرِهِ

উচ্চারণঃ আলহা’মদু লিল্লা-হিল্লাযী আ’-ফা-নী ফী জাসাদী, ওয়ারাদ্দা আ’লাইয়্যা রূহী’ ওয়া আযিনা লি বিযিকরিহ।

অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমার দেহকে নিরাপদ করেছেন, আমার রূহকে আমার নিকট ফেরত দিয়েছেন এবং আমাকে তাঁর যিকর (স্বরণ) করার অনুমতি (সুযোগ) দিয়েছেন।

তিরমিযীঃ ৩৪০১, হাদীসটি সহীহ, সহীহুত তিরমিযীঃ ৩/১৪৪।

___________________________________

(৫) প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ইশার সালাতের পূর্বে ঘুমানো এবং ইশার পরে কথাবার্তা বলাকে অপছন্দ করতেন। সহীহ বুখারীঃ ৫৯৯, সহীহ মুসলিম।

এর কারণ হচ্ছে, ইশার পূর্বে ঘুমালে ইশার জামাআ’ত ছুটে যাওয়ার আশংকা আছে। আর ইশার পরে বেহুদা আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট না করলে তাহাজ্জুদ, বিতর ও ফজরের সালাত যথা সময়ে পড়া সহজ হয়।

তবে দ্বীন অথবা জরুরী বিষয়ে কথাবার্তা বলা ও ইলম চর্চা করা দূষনীয় নয়। যেমন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর ও উমারের সাথে ইশার পর জনসাধারণের ভালো-মন্দ নিয়ে কথাবার্তা বলতেন। আহমাদ, মুসনাদ, তিরমিযীঃ ১৬৯।

এছাড়া পারিবারিক প্রয়োজনীয় কাজ বা স্ত্রীর সাথে ভালো আচরণ মূলক কথা বলা যায়। সহীহ বুখারীঃ ৫১৮৯, সহীহ মুসলিমঃ ৬৪৫৮।

Post a Comment

Previous Post Next Post