মহিলাদের স্বামীর কাছ থেকে পৃথক হওয়ার দুইটি বৈধ কারণ


(এক)

দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীকে দাম্পত্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা:

অনেক বিবাহিত পুরুষ তাদের স্ত্রীকে দাম্পত্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে বছরের পর বছর প্রবাসের জীবন বেছে নেয়। দুনিয়ার কারণে তাদের স্ত্রী স্বামীকে গৃহে ফিরে আসার দাবী করেনা। কিন্তু এমন কিছু মহিলা স্বামীর অবর্তমানে পর পুরুষের সাথে ব্যভিচারের সম্পর্কে লিপ্ত হয়। স্বামী বিদেশী অর্থ নিয়ে খুশি, আর দেশে তার স্ত্রী স্বামীর পাঠানো অর্থ আর অবৈধ প্রেমিককে নিয়ে খুশি। আল্লাহ হেফাজত করুন।

যেই সমস্ত মহিলারা স্বামী বিদেশে থাকার কারণে ধৈর্য ধারণ করতে না পেরে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পরকাল ধ্বংস করে ফেলছে তাদের করণীয়ঃ

(১) আন্তরিক তোওবা করা, কারণ তারা অতীব গুরুতর অপরাধে লিপ্ত হয়েছে। এমন অপরাধ আদালতে প্রমাণিত হলে তার শাস্তি হচ্ছে ‘রজম’ বা পাথর মেরে হত্যা করা।

(২) স্বামীর অবর্তমানে ধৈর্য ধারণ করতে না পারলে স্বামীকে গৃহে ফিরে আসার জন্য দাবী জানানো।

(৩) যদি তাদের স্বামী ফিরে না আসে এবং একারণে সে ধৈর্যধারণ করতে না পারে, তাহলে স্বামীর কাছে তালাক্ব চাওয়া। এতে তার স্বামী বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পারবে।

(৪) স্বামী যদি ফিরে না আসে এবং তালাক্ব দিতে রাজী না হয় তাহলে “মুসলিম পারিবারিক আইন” এর আওতায় কাযীর মাধ্যমে “খুলা” করে পৃথক হয়ে যাওয়া।

ফযীলাতুশ-শায়খ সালিহ আল-ফাউজান হা’ফিজাহুল্লাহর ফাতাওয়া:

“যদি কোন স্বামী তার স্ত্রী থেকে ছয় মাসের বেশি দূরে থাকে আর তার স্ত্রী তাকে গৃহে ফেরার জন্য অনুরোধ করে, তাহলে তার জন্য গৃহে ফিরে আসা বাধ্যতামূলক। স্বামী যদি এমন কারণে সফরে থাকে যা তার জন্য ফরয, যেমন ফরয হজ্জ পালন করা বা বাধ্যতামূলক জিহাদে যোগদান করা, অথবা তার জন্য গৃহে ফিরে আসা সম্ভব না হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে গৃহে ফিরে আসা তার জন্য আবশ্যক নয়। যদি বৈধ কোন কারণ ছাড়া স্বামী গৃহে ফিরে আসতে অস্বীকার করে আর তার স্ত্রী খুলা দাবী করে, তাহলে কাযী/বিচারক স্বামীর সাথে যোগাযোগ করার পর তাদেরকে পৃথক করে দিবে। কারণ এই ব্যক্তি তার স্ত্রীকে অত্যাবশ্যকীয় হক্ক থেকে বঞ্চিত করছে।”

আল-মুলাখ-খাস আল-ফিক্বহীঃ ২/২৯০।


(দুই)

স্ত্রীর জৈবিক চাহিদ পূরণে অক্ষম স্বামী:

যদি কোন স্বামী যৌন অক্ষম হয় কিংবা যৌন দুর্বলতার কারণে স্ত্রীকে তৃপ্তি দিতে না পারে এবং একারণে স্ত্রী ধৈর্য ধারণ করতে না পারে তাহলে করণীয়:

এক বছর পর্যন্ত ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসা করাবে। যদি চিকিৎসার পরেও সুস্থ না হয় তাহলে সেই স্ত্রী বিবেচনা করবে, এমন বিবাহে আবদ্ধ থাকা তার জন্য কল্যাণকর নাকি, এখান থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া কল্যাণকর। যদি সে ধৈর্য ধারণ করতে না পারে, তাহলে সে যদি তালাক নেয় কিংবা কাযীর মাধ্যমে খুলা করে তাহলে তা জায়েজ রয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post