আল্লাহ তাআ’লা ক্ষমাশীল, তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন (পর্ব-২)

 


(১) লুক্বমান আ’লাইহিস সালাম তার ছেলেকে উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন, “হে আমার বৎস! তুমি আস্তাগফিরুল্লাহ (হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা কর) অনেক বেশি পরিমাণে বলো। কেননা, নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে এমন কিছু সময় রয়েছে, যখন তিনি কোন ভিক্ষুককে ফিরিয়ে দেন না।” শুঅ’বাল ঈমানঃ ১১৩, ইমাম বায়হাক্বী রহি’মাহুল্লাহ।


(২) ইমাম আন-নওয়াবী রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “যদি কোন ব্যক্তি একই গুনাহ ১০০ বার করে বা আরো বেশি বার করে থাকে আর সে যদি প্রত্যেক বারই তোওবা করে, তাহলে তার তোওবা কবুল হবে এবং তার গুনাহ মুছে ফেলা হবে।” শারহ সহীহ মুসলিমঃ ১৭/৭৫, ইমাম আন-নওয়াবী রহি’মাহুল্লাহ।


(৩) ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহি'মাহুল্লাহ বলেন, "তুমি তোমার নিজের সম্পর্কে যে খারাপ ধারণা পোষণ করো বা তুমি যে অসংখ্য, অগণিত পাপ কাজ কাজ করেছো, তা যেন তোমাকে আল্লাহর কাছে দুয়া করা থেকে বিরত রাখতে না পারে। কেননা দয়াময় আল্লাহ তো ইবলীসের দুয়া কবুল করেছিলেন, যখন সে এই বলে দুয়া করেছিলো,


قَالَ رَبِّ فَاَنۡظِرۡنِیۡۤ اِلٰی یَوۡمِ یُبۡعَثُوۡنَ


অর্থঃ সে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত আমাকে সময় দিন।’


قَالَ فَاِنَّکَ مِنَ الۡمُنۡظَرِیۡنَ


অর্থঃ তিনি (আল্লাহ) বললেন, ‘তোমাকে সময় দেয়া হল।


اِلٰی یَوۡمِ الۡوَقۡتِ الۡمَعۡلُوۡمِ


অর্থঃ সেদিন পর্যন্ত যার নির্দিষ্ট ক্ষণ আমার জানা আছে।’


সুরা আল-হিজরঃ ৩৬-৩৮।


ফাতহুল বারীঃ ১১/১৬৮, ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহি'মাহুল্লাহ।


(৪) ওহাব বিন মুনাব্বাহ রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন, “তাওরাতে লেখা আছে, যে ব্যক্তি ধৈর্য্যশীল শরীরের অধিকারী ও যিকিরকারী জবান হাসিল করতে চায়, সে যেন মুমিন-মুসলিম নারী ও পুরুষদের জন্য বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করে।” পরকালের পাথেয়, ইবনে হাজার আসকালানী রহি’মাহুল্লাহ।


(৫) আব্দুল্লাহ ইবনুল ‍মুবারক রহি’মাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত। ইমাম আওযাঈ রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “ইবলিস তার সঙ্গী-সাথীদের বলে, তোমরা বনী আদমের কোন কোন জিনিস এনেছো?” তারা বলে, “সবকিছুই তো আমরা নিয়ে এসেছি।” তখন ইবলীস বলে, “তোমরা কি ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা)ও নিয়ে এসেছো?” তারা বলে, “হায় হায়! এটি তো এমন বিষয় যা তাওহীদের নিকটবর্তী।” তখন ইবলীস বলে, “আমি এমন জিনিস তাদের মাঝে ছড়িয়ে দেবো, যা থেকে তারা আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করবে না।” ইমাম আওযাঈ রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “অতঃপর ইবলীস মানুষের মাঝে প্রবৃত্তি (ভাল লাগা ও মন্দ লাগার অনুসরণকে) ছড়িয়ে দিল।” লালিকাঈ, আল ই’তিকাদঃ ২৩৭, ফাসাওয়ীঃ ৩/৩৮৯ সহীহ সনদে। তাহক্বীক্বঃ এর সনদ সহীহ।

Post a Comment

Previous Post Next Post