আল্লাহ তাআলা বান্দাকে পূর্বের নির্ধারণ অনুযায়ী শাস্তি দিবেন না কিংবা তাকদীর অনুযায়ী কাউকে পুরস্কারও দিবেন না। কুরআন এবং সুন্নাহর কোথাও এই কথা বলা হয়নি; বরং তিনি তাদের আমল অনুযায়ী শাস্তি দিবেন অথবা ছাওয়াব দিবেন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে ছাওয়াব বা শাস্তি আমলের ফলাফল। তাকদীরে থাকা মানে জোর খাটিয়ে বান্দাকে দিয়ে পাপ কাজ করানো হয় এই বুঝ সঠিক নয়। সত কাজের ব্যাপরেও কথা একই। আমলের উপর কিংবা বান্দার জান্নাতী হওয়া বা জাহান্নামী হওয়ার উপর তাকদীরের কোন প্রভাব নেই। আল্লাহ তাআলা যেহেতু বান্দকে আকল তথা বোধশক্তি দিয়েছেন, আমল করা বা না করার স্বাধীনতা দিয়েছেন, শক্তিও দিয়েছেন, বান্দা যেহেতু সেই আকল খাটিয়ে কাজ করে, নিজস্ব ইচ্ছা ও স্বাধীনতার বলে ভাল বা মন্দটা নির্বাচন করে, তাই সে নিজেই ছাওয়াব বা শাস্তির হকদার হয়। নামায যেহেতু বান্দাই পড়ে, তাই নামাযের পুরস্কার সেই পাবে, কুরআন যেহেতু বান্দার মুখ দিয়ে পড়া হয়, তাই প্রতিটি হরফের বিনিময়ে বান্দাই দশটি নেকী পাবে। বান্দাই যেহেতু যেনা করা এবং অন্যান্য পাপাচার থেকে নিজের আকল, সুকুমার বৃত্তি, আপন ইচ্ছা ও এখতিয়ারের বদৌলতেই বিরত হয়, সে কারণেই প্রশংসিত হয় বান্দা নিজেই এবং উক্ত কাজগুলোতে লিপ্ত হলে নিন্দিত হয় কেবল বান্দাই। বদচরত্রি কোন লোক যদি কারো মা-বোন বা স্ত্রীর সাথে যেনা করতে যায়, তখন বিবেবকান কোন লোক এই কথা বলেনা যে, ঠিক আছে, আমার স্ত্রীর নসীবে যেনা-ব্যভিচার লিখা আছে। তাই আমি তাকে বাধা দিবোনা। তার মন যা চায়, আমার ঘরে তাই করে যাক; বরং সে রাগান্বিত হয়, জান দিয়ে হলেও নিজের ইজ্জত-আভ্রু রক্ষার্থে সিংহের মত ক্ষেপে উঠে এবং বদচরত্রিকে প্রতিহত করে, হত্যা করতেও উদ্যোত হয়। এমনটিই হওয়া উচিত। কারো ঘরে চোর ঢুকলে ঘরের মালিক এ কথা বলেনা যে, চোরের মন যা চায় নিয়ে যাক, আমি বাধা দিবেনা……। বিচারকের আদালতে চোরকে হাযির করা হলে এবং সাক্ষী-প্রমাণের মাধ্যমে চুরি করা প্রমাণিত হলে চোর যদি বলে তাকদীরে লিখা ছিল, তাই চুরি করেছি। পৃথিবীর মুসলিম-অমুসলিম কোন আদালত চোরের এই কথার কোন মূল্যায়ন করবেনা। সুতরাং মানুষের জন্য এই কথা বলা ঠিক নয় যে, তাকদীরে নামায লিখা নেই, তাই পড়ছিনা। তাকদীরে জাহান্নাম লিখা থাকলে নামায পড়েও লাভ হবেনা। আর তাকদীরে জান্নাত লিখা থাকলে নামায না পড়েও জান্নাতে যাওয়া যাবে। এটি কোন বিবেকবান মানুষের কথা হতে পারেনা। ইবলীস ছাড়া অন্য কেউ মানুষের মাথায় এই কথা জাগ্রত করেনা। তাকদীরের মাসআলাটি অত্যন্ত বড়। সাহাবীদের জ্ঞানের পরিধি ছিল অত্যন্ত বিশাল। তাই তারা সহজভাবে মাসআলাটি বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন। সাহাবীদের যুগে সীমিত আকারে তাকদীরের বিষয়ে দু’একটি প্রশ্ন হলেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জবাব শুনে তাদের হৃদয় ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে। রাসূলের পবিত্র জবানীতে জবাব শুনে কেউ আমল বর্জন করেন নি; বরং আগের চেয়ে আরো বেশী আগ্রহ নিয়ে এবং জান্নাত লাভের আশায় সত আমলে মগ্ন হয়েছেন। কিন্তু সাহাবীদের পরবর্তী যুগসমূহে তাকদীরের মাসআআলায় বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েই আসছে। আলেমগণ তাদের জ্ঞান ও বোধশক্তি দিয়ে এবং বিবেক-বুদ্ধি খাটিয়ে যুগে যুগে মানুষের সেই প্রশ্নগুলোর বিভিন্ন জবাব দিয়েই আসছেন। হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে হেদায়াত করো এবং সেই পথে পর্বত সদৃশ সুদৃপদ রাখো। আমীন । ।
- হোম
- জীবনী
- _রাসূল (সা) এর জীবন থেকে
- _সাহাবীদের (রা) জীবন থেকে
- কুরআন ও হাদীস
- _বিষয়ভিত্তিক কুরআন
- _বিষয়ভিত্তিক হাদীস
- _নির্বাচিত ১০০ হাদীস
- _কিছু গুরুত্বপূর্ণ আয়াত
- গুরুত্বপূর্ণ আমল
- _দোয়া ও যিকির
- _কুরআন থেকে ৪০ টি দুআ
- _দৈনন্দিন জীবনে সুন্নাত
- ইসলামিক উক্তি
- _সেরা ১০০ টি ইসলামিক উক্তি
- _ড. বিলাল ফিলিপ্স এর উক্তি
- _মুসলিম মনীষীদের উক্তি
- বোনদের জন্য
- _পর্দা
- _মহিলাদের মজলিস
- _বিভিন্ন মাসায়েল
- ইসলামিক বই
- _ইসলামিক বই পরিচিতি
- _ইসলামিক বই ডাউনলোড
- _প্রিয় বইগুলো
- ইসলামিক প্রশ্নোত্তর
- _গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল
- _প্রশ্নোত্তরে ইসলাম
- বিবিধ বিষয়
- _ইমাম নববীর ৪০ হাদীস
- _ইসলামে সম্পত্তি বন্টণ
- _বাচ্চাদের ইসলামিক নাম
- _ইসলামিক পিকচার
1 মন্তব্যসমূহ
আমিন
উত্তরমুছুন