বর্তমানে আমরা মুসলিমরা এক বর্ণনাতীত নিকৃষ্টতম অবস্থানে উপনিত হয়েছি, যা সকলেই অবগত আছেন। মুসলিমরা যদিও এক আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি বিশ্বাসী তথাপি এ অপমান তাদেরকে পাকড়াও করেছে। এবং এ অপমান নির্দিষ্ট কোন ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ না থেকে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। নিম্নে আমরা কারন ও প্রতিকার সম্পর্কে দু'টি হাদীস উল্লেখ করার চেষ্টা করছি, ইন শা আল্লাহ।
মুসলিমদের অধপতনের কারন ও প্রতিকার সম্পর্কে দু’টি হাদীস
প্রথম হাদীস
সাওবান (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’খাদ্য গ্রহণকারীরা যেভাবে খাবারের পাত্রের চতুর্দিকে একত্র হয়, অচিরেই বিজাতিরা তোমাদের বিরুদ্ধে সেভাবেই একত্রিত হবে’’
এক ব্যাক্তি বললো, সেদিন আমাদের সংখ্যা কম হওয়ার কারনে কি এরুপ হবে?
রাসুল (সাঃ) বললেনঃ ‘’তোমরা বরং সেদিন সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে, কিন্তু তোমরা হবে প্লাবনের স্রোতে ভেসে যাওয়া আবর্জনার মত। আর আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের অন্তর হতে তোমাদের পক্ষ হতে আতংক দূর করে দিবেন, তিনি তোমাদের অন্তরে ভীরুতা ভরে দিবেন (তোমাদের অন্তরে ‘’ওয়াহান’ ঢেলে দিবেন)’’
এক ব্যাক্তি বললো, ‘ওয়াহান’ কি?
রাসুল (সাঃ) বললেনঃ ‘’দুনিয়ার মোহ এবং মৃত্যুকে অপছন্দ করা’’
- [আবু দাউদ ৪২৯৭ (আলবানি সহীহ বলেছেন)]
দ্বিতীয় হাদীস
ইবন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘’যখন তোমরা ঈনা পদ্বতিতে (এক প্রকার ব্যাবসা যা হারাম) বিক্রি করবে, গরুর লেজ আঁকড়ে ধরবে, কৃষিকাজেই সন্তুষ্ট থাকবে আর জিহাদ পরিত্যাগ করবে তখন আল্লাহ তোমাদের উপর অপমান ও লাঞ্ছনা চাপিয়ে দিবেন। যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের দ্বীনে প্রত্যাবর্তন করবে সেই অপমান উঠিয়ে নেয়া হবে না’’
- [আবু দাউদ ৩৪৬২; সিলসিলাহ সাহীহাহ ১১ (আলবানি সহীহ বলেছেন)]
ইতিহাস সাক্ষী আছে মুসলিমরা কখনোই সংখ্যাধিক্যের কারনে কোথাও বিজয়ী হয়নি। খুব অল্প সংখ্যক মুসলিমদের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সাহায্য করেছেন। রাসুল (সাঃ)-এর ভাষায় আমাদের অধপতনের অন্যতম কারন হচ্ছে- দুনিয়ার প্রতি মোহ, মৃত্যুর প্রতি ভয়, হারাম ব্যবসা ও জিহাদকে পরিত্যাগ। অতঃপর রাসুল (সাঃ) কিভাবে আমরা আবার সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন। আর সেটা হচ্ছে পরিপূর্ণভাবে দ্বীনের মধ্যে প্রবেশ।
সুতরাং হে আমার মুসলিম ভাই ও বোনেরা! আসুন আমরা দ্বীনের মধ্যকার কোন একটি বিষয়কে নয়, বরং পুরো দ্বীনকে আঁকড়ে ধরি ও পরিপূর্ণভাবে দ্বীনের মধ্যে প্রবেশ করি। রাসুল (সাঃ) যা নিয়ে আগমন করেছেন তাঁর পুরোটাই দ্বীন, তাঁর শিক্ষার কোনটাকে বাদ না দিয়ে আসুন আমরা সম্পূর্ণভাবে ইসলামের বিধিবিধান মেনে চলি। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন। (আমীন)
- শায়েখ আলবানি রাহিমাহুল্লাহর একটি লেখা অবলম্বনে
Writer: Anisur Rahman
1 মন্তব্য
আমিন
উত্তর দিনমুছুন