ইসলামের কথা প্রচারে আজকাল বুঝা যায়না কে ভুয়া, কে ধোঁকা, কে বিক্রেতা। অনেকে না জেনে, কেউ না বুঝে, আবার কেউ ভুল শিখে যা শোনে তাই প্রচার করে। এতে সমাজে জাল হাদিস এর বিস্তার ঘটে ও প্রচারকরা মহা পাপে পাপী হন, পাপী হন ভুল আমল কারীগণও। ইমান বাচাতে ও পরকালে মুক্তি পেতে এর বিকল্প নেই। দেখুন - কবরে গিয়ে যদি দেখেন ফেরেশতারা হাতুড়ি নিয়ে হাজির, আপনি বললেন -"আমি অমুক হুজুর কে ফলো করতাম, তাকে নিয়ে আসুন" ফেরেশতারা কিন্তু তাকে আনবেনা। বলবে আপনার হাতের কাছে অনেক কিতাব ছিলো কেন তা পড়েন নি, অনেক আলেম ছিলো কেন জিজ্ঞাসা করেন নি। কেন ইনটারেস্টেড ছিলেন না? আপনার ইচ্ছা শক্তির উপর ফয়সালা হবে। তাই আসুন জেনে নিই কিছু উপায়।
সত্য মিথ্যা যাচাই বাছাই করার উপায় (৩ টি)
১. যে হুজুর যা বললেন, শেষে তিনি যদি হাদীসসের নাম বা আয়াতের নাম্বার বলেন তা কোন সহীহ হাদীসে খুঁজে দেখা । যেমন - উনি যদি বলেন হাদিস টা আছে ইবনে মাজাহ নামক হাদিস শরিফ এর ৩৩৩ নং হাদিস ঙ্গে। আপনি ইবনে মাজাহ কিনবেন, বা দোকানএ যেয়ে চেইবেন, বা অনলাইনে দেখবেন ঐ হাদিথ ইবনে মাজাহ তে ঐ নম্বরে আছে কিনা। তিনি যে কিতাব এর নাম বলেন তা খুজবেন, না বললে তার কাছে পরে ভদ্র ভাবে জিজ্ঞাসা করবেন।
২. তার বলা রেফেরেনস বা হাদিস খানা ভালো দেখে অন্য আলেম কে জিজ্ঞাসা করবেন হাদি্স টা এটা কিনা বা আছে কিনা বা এই কথা সত্য কিনা তিনি যা বললেন।
আলোচনায় কোন হুজুর /ইমাম কোন হাদিস এর নাম না বললে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন পরে, কিন্তু তাও বললেন না তিনি ---------- প্রবলেম নাই...... সরাসরী একটা হাদিস গ্রন্থ কিনে নিন। বুখারী ১০ পার্ট হয়ত কস্টকর হবে, মুসলিম শরিফ ৪ পার্ট একত্রে পাওয়া যায়। দাম ৩০০-৪৫০ টাকা মত, উল্লেখিত অধ্যায় এর সব পড়ে ফেলবেন। যেমন উনার কথা রমাদান নিয়ে হইলে রমাদান অধ্যায় পড়েন। হুজুর / ইমাম এর কথা সহীহ হইলে এখানেই পাবেন। না হইলে জাল বা দুর্বল হবার সম্ভাবনা বেশী। এখন এই সন্দেহ নিশ্চিত না হয়ে তার উপর আমল করা ঠিক হবেনা ............ আর সব সহীহ ই যে এক কিতাবে থাকবে তা নয়, কিছু আছে বুখারী তে যা মুসলিম এ ধরেনি। কারণ বুখারীর ১০ পার্ট। তবে জাল কিনা নিশ্চিত হবার জন্য আরেকটা কাজ করতে হবে-
৩. শায়খ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর , বা অন্য কোন আলেম এর একটা বই আছে একই নাম বা একই ধরণের নাম - "হাদীস এর নামে জালিয়াতি"। কিনবেন, দাম হয়তো ২০০-২৫০ টাকার মধ্যে হবে। প্রচলিত সকল জাল হাদিস এর ভেতর আছে ও বর্ণোনা সহ কোথা থেকে কিভাবে আসলো তা, এই বইতে পাইলে নিশ্চিত হতে পারবেন যে হাদিস টা সহীহ নাকি জাল।
শুধু হুজুরদের দোষ দিলে তো হবে না..
মহান আল্লাহ বলেন "ইকরা" অর্থ শোন? নাকি ইকরা অর্থ পড়? আল্লাহ বললেন পড় আমরা বললাম - পড়বোনা - শুনবো। এটা অন্যায়। আল্লাহ যখন আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রথম ওহি প্রেরণ করেন তার প্রথম শব্দ টা কি ছিলো? ৩০ নং পারা এর সুরাহ আলাক এর ১ম শব্দ - ইকরা। অর্থ- পড়।
আমরা তো পড়তে চাইনা, যা শুনি তাই বলি । এটা খুবই মারাত্মক ক্ষতিকর । ইতিহাসে এটাই পাওয়া যায় - কোন আলেম, কোন সাহাবী, কোন তাবেয়ী যাচাই ছাড়া ইসলামের কথা গ্রহন করতেন না তা যেই বলুক। ইমাম বুখারী রহঃ দের এর কথা অনেকে জানেন। তিনি কারোও হাদীস নেবার আগে জিজ্ঞাসা করতেন সেই মজলিসে কে কে ছিলো তার মনে আছে কিনা? ভুল বললে নিতেন না কেননা তার হাদীসে ভুল থাকতে পারে - চিন্তা করেন।
তাই আসুন। বাজারে গিয়ে যেমন ঝাল পেয়াজ একটা একটা করে বাছাই করে কিনি, আলু,চাল ধরে ধরে বেছে নিই, আমাদের ঈমান ও আমল বাচানোর জন্য দ্বীন ইসলামের কথাটাও বাছাই করি।
Post a Comment