(এক)
আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লা বলেন,
وَلَنَبۡلُوَنَّكُم بِشَيۡءٖ مِّنَ ٱلۡخَوۡفِ وَٱلۡجُوعِ وَنَقۡصٖ مِّنَ ٱلۡأَمۡوَٰلِ وَٱلۡأَنفُسِ وَٱلثَّمَرَٰتِۗ وَبَشِّرِ ٱلصَّٰبِرِينَ
“নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা এবং কিছু ধন-সম্পদ ও প্রাণ এবং ফল ও ফসলের লোকসান দ্বারা তোমাদেরকে পরীক্ষা করব; আর (হে নবী!) আপনি ধৈর্যশীল লোদেরকে সুসংবাদ দিন।” সূরা আল-বাক্বারাহঃ ১৫৫।
(দুই)
ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম রহি’মাহুল্লাহ বলেন,
“আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত বালা-মুসীবতের পেছনে ১৪-টি হিকমতঃ
(১) আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের প্রতি প্রকৃত আত্মসমর্পণ এবং দাসত্ব অর্জন করা।
(২) বালা-মুসীবত মুমিনকে যমীনে টিকে থাকার জন্য প্রস্তুত করে।
(৩) গুনাহর কাফফারা হয়।
(৪) সওয়াব লাভ হয় এবং মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
(৫) বালা-মুসীবত একজন ব্যক্তির অতীত জীবনে সংগঠিত ভুল-ত্রুটি এবং গুনাহ-খাতা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা এবং সেখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ এনে দেয়।
(৬) বালা-মুসীবত তাওহীদ, ঈমান এবং তাওয়াক্কুল শিক্ষা দেয়।
(৭) বালা-মুসীবত একজন ব্যক্তির অন্তর থেকে নিজের আমলের কারণে আত্মতৃপ্তি এবং অহংকার দূর করে এবং বান্দার অন্তরকে আল্লাহর নৈকট্যশীল করে দেয়।
(৮) বালা-মুসীবতের দ্বারা কোন ব্যক্তির প্রকৃত অবস্থা জানা যায়, কেননা আল্লাহর নিকট কোন ব্যক্তির মর্যাদা জানা যায়।
(৯) বালা-মুসীবত একজন ব্যক্তির আত্মপ্রত্যয়কে দৃঢ় করে।
(১০) বালা-মুসীবতের কারণে একজন ব্যক্তি প্রকৃত বন্ধু ও সুযোগসন্ধানী বন্ধুর মাঝে পার্থক্য ধরতে সক্ষম হয়।
(১১) বালা-মুসীবত আমাদেরকে পাপের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যাতে করে আমরা তাওবা করতে পারি।
(১২) বালা-মুসীবত আমাদেরকে এই দুনিয়ার প্রকৃত বাস্তবতা, এই দুনিয়া কত দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং ক্ষণস্থায়ী তা দেখিয়ে দেয়, এই দুনিয়ার পরে আরও একটি দুনিয়া রয়েছে যেখানে কোন দুঃখ-বেদনা কিংবা ক্লান্তি থাকবে না সেইদিকে পথ দেখায়।
(১৩) বালা-মুসীবত আমাদেরকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, সুস্থতা এবং নিরাপত্তা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় নিয়ামত।
(১৪) বালা-মুসীবত জান্নাতে যাওয়ার কামনা-বাসনাকে বৃদ্ধি করে।
এগুলো হচ্ছে বালা-মুসীবতের পেছনে কিছু হিকমত এবং সেখান থেকে আমরা যা কিছু অর্জন করি তার বর্ণনা, আর আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লা হচ্ছেন বড়ই হিকমতওয়ালা।”
বিঃদ্রঃ বালা অর্থ পরীক্ষা, মুসীবত অর্থ বিপদ-আপদ।
Post a Comment