তুলনার প্রতিযোগিতায় নিজের সুখকে বিসর্জন দিবেন না

এক বনে একটি কাক বাস করতো। সে তার জীবন নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট ছিল।

কিন্তু একদিন সে একটি রাজহাঁস দেখতে পেল।... ...

নদীর এ পার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস, ও পারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস।

আহা! রাজহাঁস কতই না সুন্দর! কাকটি ভাবলো। নিশ্চয়ই সে এ পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী পাখি।

কাক তার এই ভাবনার কথা রাজহাঁসকে জানালো।

"আসলে", রাজহাঁস জবাব দিলো, "আমি ভাবতাম আমিই বুঝি এখানকার সবচেয়ে সুখী পাখি, যতক্ষণ না আমি একটি টিয়াকে দেখলাম।... ... যার গায়ে দু'ধরনের রং আছে। তাই এখন আমি মনে করি, টিয়াই হলো সৃষ্টির মাঝে সবচেয়ে সুখী পাখি।"

কাক এরপর গেল টিয়ার কাছে। টিয়া তাকে বললো, "আমি ছিলাম খুব খুব সুখী, যতক্ষণ না আমি ময়ূরকে দেখতে পেলাম।... ... আমার গায়ে তো মাত্র দু'টি রং, আর ময়ূরের শরীরে কত বর্ণেরই না সমাহার!"

কাক এরপর চিড়িয়াখানায় গেল ময়ূরের সাথে দেখা করতে। সেখানে সে দেখতে পেল, ময়ূরকে দেখতে শত শত মানুষ ভিড় জমিয়েছে।

সবাই চলে যাওয়ার পর, কাক ময়ূরের কাছে গেল... ...

"ও ময়ূর, তুমি দেখতে কতই না সুন্দর! তোমাকে দেখতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ভিড় জমায়। আর আমি? আমাকে দেখলেই মানুষ দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। তুমি নিশ্চয়ই জগতের সবচেয়ে সুখী পাখি।"

ময়ূর জবাব দিলো, "আমিও ভাবতাম, আমিই বোধহয় এই গ্রহের সবচেয়ে সুন্দর এবং সুখী পাখি। কিন্তু এই সৌন্দর্যের কারণে আমাকে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে।

আমি এই চিড়িয়াখানা খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি এবং বুঝতে পেরেছি কাকই হচ্ছে একমাত্র পাখি যাকে কখনোই খাঁচায় বন্দি করা হয় না।

তাই গত ক'দিন যাবত আমি ভাবছি, ইশ! আমি যদি কাক হতাম, তাহলে যেখানে খুশি ঘুরে বেড়াতে পারতাম।"

_____________________________

এটাই হলো আমাদের সমস্যা।

আমরা অহেতুক অন্যদের সাথে নিজেদের তুলনা করি আর দুঃখ পাই।

সৃষ্টিকর্তা আমাদের যা দিয়েছেন,আমরা তার কোন গুরুত্ব দিই না। এভাবে আমরা সকলেই দুঃখের দুষ্টচক্রে পড়ে ঘুরপাক খেতে থাকি।

তাই স্রষ্টা আপনাকে যা দিয়েছেন, তার গুরুত্ব দিয়ে, সুখী হওয়ার গোপন রহস্যটা বুঝতে শিখুন আর অহেতুক অন্যদের সাথে তুলনায় নিয়ে নিজে অসুখী হওয়াকে দূরে ছুড়ে ফেলুন।

- শাইখ যাহির মাহমুদ (অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে অনূদিত)

Post a Comment

Previous Post Next Post